মশাল ডেস্ক: আশাশুনি উপজেলার কুল্যা ইউনিয়নে ভিজিডি কর্মসূচির উপকারভোগিদের মাঝে চাউল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় অভিযোগের বিষয় উত্থাপিত হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সুত্রে প্রকাশ ।
ভিজিডি চক্র ২০২১-২২ ভিজিডি কর্মসূচির জন্য উপকারভোগী মহিলা নির্বাচনের তালিকার চুড়ান্ত ছক (ছক-৩) উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা স্বাক্ষর করে চাউল বিতরণের জন্য সরবরাহ করেন। কিন্তু কুল্যা ইউনিয়নে চুড়ান্ত তালিকার অনেকের নাম বাদ রেখে নতুন মহিলাদের মাঝে চাউল বিতরণ, সকলকে চাউল না দেওয়া, কার্ড বাবদ টাকা নেওয়াসহ নানা অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ভুক্তভোগী, ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকার প্রতিবাদী নারী পুরুষ কার্ড নিয়ে চাঁদাবাজী ও তালিকাভুক্তদের চাউল না দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে। কুল্যা গ্রামের সিরাজুলের স্ত্রী পারভিন, শহিদের স্ত্রী মাছুরা, ছবুরের মেয়ে মাহমুদা, ইউনুছের স্ত্রী আছিয়া, মোত্তাজুল মল্লিকের স্ত্রী রুমা ও সাদ্দামের স্ত্রী শাহিদার কাছ থেকে কার্ড করে দেওয়ার নাম করে চেয়ারম্যানের নিজস্ব ব্যক্তি ও গ্রাম পুলিশ রেফাজুল ৫-৬ হাজার করে টাকা নিয়েছে বলে মানববন্ধনের সময় ভুক্তভোগীরা জানান। এদিকে ৯ নং ওয়ার্ডে রেবতী মন্ডল, দিপালী সরকার, নমিতা সরকার, অনিমা, লক্ষী, মাধবী, নমিতা মন্ডল, শেফালীর নাম চুড়ান্ত তালিকায় থাকলেও চাউল দেয়া হয়নি। ওয়ার্ড নং ৭ এ আমেনা, রাশিদা, ফিরোজা, নার্গিস, রিজিয়া, মনোয়ারার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ৪ নং ওয়ার্ডে পূর্নিমা, রিজিয়া, রাজিয়া, মনোয়ারা, সেলিনা, নাজমা, রমেছা, স্বপ্নার নাম চুড়ান্ত তালিকায় থাকলেও চাউল দেওয়া হয়নি। ৩নং ওয়ার্ডে গীতা, সুপ্রিয়াসহ ৯ ওয়ার্ডে অনুমান ৮০ জন ব্যাক্তির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইউপি সদস্য আলহাজ্ব আঃ মাজেদ বলেন, কেবল তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া, যোগ্যদের চাউল না দেওয়ার ঘটনাই ঘটেনি। চুড়ান্ত তালিকায় নাম উঠার পরে ছলেমান গাজীর স্ত্রীর নিকট থেকে ২০০০ টাকা, সন্যাসীর স্ত্রীর কাছ থেকে ৪০০০, রাম প্রসাদ সরদারের স্ত্রীর কাছ থেকে ৪০০০ ও আলমের স্ত্রীর কাছ থেকে ২০০০ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়েছে। আবুল কাশেম সাহাজী জানান, তার স্ত্রী তৈয়েবার কার্ড করিয়ে দেওয়ার নাম করে গুনাকরকাটির আরিফুল ৪৫০০ টাকা আদায় করেছে। গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, কুল্যা গ্রামে অনেকের নিকট থেকে গ্রাম পুলিশসহ বেশ কয়েকজন যেভাবে টাকা আদায় করেছে, একই ভাবে ইউনিয়নের অন্যান্য ওয়ার্ডেও কার্ড দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছে। তারা উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান ও মাননীয় সংসদ সদস্যর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, দ্রুত প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ইউনিয়নের অসহায় গরীব ভূমিহীন মানুষকে প্রতারনার মাধ্যমে চরম বিপাকে ফেলার পাশাপাশি সরকারি নির্দেশ অমান্য করে আওয়ামীলীগ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা বন্ধ হবে না।
এব্যাপারে ইউপি সদস্য আলহাজ্ব আঃ মাজেদ বলেন, চেয়ারম্যান আমাদের দেওয়া তালিকা বাদ দিয়ে তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে কার্ডের তালিকা করিয়েছেন। গ্রাম পুলিশসহ ঐ চক্রটি নিঃস্ব ও গরীব মানুষদেরকে কার্ড দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদাবাজী ও অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম জানান, “চাউল বিতরণ কাজে অনিয়মের কথা অনেকে মোবাইলে জানাচ্ছে। লিখিত ভাবে অভিযোগ হলে ইউএনও মহোদয়ের পরামর্শে দেখা হবে”। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বাছেত আল হারুন চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবী করেন। উপজেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ও তালিকা মোতাবেক যোগ্যদের মাঝে চাউল বিতরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply