কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি : লকডাউন উপেক্ষা করে বাড়ী বাড়ী যেয়ে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ শাখার কর্মকর্তা কর্মচারীরা ক্ষুদ্র ঋনের কিস্তি আদায় করে চলেছে। গত ২ সপ্তাহ ধরে লকডাউনের পর হতে কালিগঞ্জ উপজেলা জুড়ে কারখানা, শ্রমিক, রিক্সা, ঠেলাগাড়ী, ইজিবাইক, বাস চালক, ট্রলি চালক, দিন-মুজুর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সহ সাধারণ লোকজনের বাড়ী বাড়ী যেয়ে রবিবার হতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিন গ্রুপ ভিত্তিক এলাকায় যেয়ে পূনরায় ঋণ না দেওয়া সহ পুলিশি গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে কিস্তি আদায় করে চলেছে। করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে চলমান লকডাউনে সরকার এক প্রোজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে সরকারী, বেসরকারী অফিস, দোকানপাট, হাটবাজার, গাড়ী, পরিবহন, মিল, কলকারখানা, গার্মেন্টস, ঔষদের দোকান, কাঁচামালের দোকান, হোটেল, রেস্তোরা, হাসপাতাল কর্মী ও গণমাধ্যম কর্মী ব্যতিত সীমিত পরিষারে বিশেষ করে ব্যাংক গুলোতে ২ ঘন্টার জন্য ব্যাংকিং কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া কোনো লোক বাড়ী থেকে বিনা প্রয়োজনে বাড়ীর বাহির হতে পারবে না। বাহির হলে মুভমেন্ট পাশ কাছে রাখতে হবে। আদেশ অমান্যকারীকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। সেই মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট খন্দকার রবিউল ইসলাম উপজেলা জুড়ে ১২টি ইউনিয়নে বিভিন্ন হাট বাজার সহ গুরুত্বপূর্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অমান্যকারী ব্যক্তিদের জেল জরিমানা করে চলেছে। লকডাউনের আওতায় এনজিও সংস্থা, গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক, আশা, জাগরনী চক্র, সুশীলন, আহ্ছানিয়া মিশন সহ বিভিন্ন এনজিওর প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের চলমান কার্যক্রম বা আদায় বন্ধ রাখলেও দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করতে এবং সরকারকে জনগনের কাছে বিতর্কিত করতে ইসলামী ব্যাংক লিঃ কালিগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক নূরমোহাম্মাদ প্রজ্ঞাপনের দোহাই দিয়ে ব্যাংকে পূর্বে নিয়োগকৃত জামাত শিবিরের কর্মকর্তা, কর্মচারী খলিলুর রহমান, মাঠকর্মী হাফিজুর রহমান সহ ব্যাংকের পেটুয়া বাহিনী দিয়ে সকাল ৮টা হতে বাড়ী বাড়ী যেয়ে মহিলা সদস্যদের ভয় ভীতি দেখিয়ে ঋণের কিস্তি জোরপূর্বক আদায় করে চলেছে। অনেকে তাদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পরিবারের মুখের আধারের টাকা দিয়ে কিস্তি দিতে বাধ্য হচ্ছে। মানুষ যখন পবিত্র রমজান মাসে ব্যবসা, বাণিজ্য , কাজকর্ম হারিয়ে লকডাউনে ঘরে বন্দী হয়ে পরিবার পরিজন সন্তানদের নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে ঠিক সেই সময় ইসলামী ব্যাংকের কিস্তির তান্ডবে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কর্মহীণ মানুষের উপর এযেন মরার উপর খড়ার ঘা। সরকারী লকডাউন উপক্ষো করে ইসলামী ব্যাংক লিঃ কালিগঞ্জ শাখার কর্মকর্তা, কর্মচারী কিস্তি আদায় অব্যহত রেখেছে। তারা সরকারী কোনো আদেশ মানতে নারাজ। তবে এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঋণের কিস্তি পরিশোধে ৩মাস সময় বেধে দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে ব্যাংক বর্হিভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের ঋনের কিস্তি পরিশোধের সময় ৩মাস বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১৪ বছরের মার্চ মাসের ঋনের কিস্তি জুন মাস পর্যন্ত পরিশোধ করতে পারবে গ্রাহক। এসময় ঋন খেলাপী করা যাবে না। পাশাপাশি দন্ড, সুদ এবং অতিরিক্ত ফি চার্জ বা কমিশন আদায় করা যাবে না। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ঋন, লীজ, অগ্রিম শ্রেনী করণ সংক্রান্ত সার্কুলার জারী করেছে। এতে বলা হয়েছে মহামারী করোনা ভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ শ্রেনী করণ বিষয়ে শিথীলতা আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপলো পরিষদের চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাঈদ মেহেদীর নিকট জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে এ প্রতিনিধিকে জানান। পরে তিনি ঘটনার সত্যতা জানার জন্য ইসলামী ব্যাংক লিঃ কালিগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক নূর মোহাম্মাদের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি সত্যতা স্বীকার করেন। উত্তরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাকে সরকারী নির্দেশনা মানার নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে আরো সত্যতা জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এবং উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি খন্দকার রবিউল ইসলাম এর নিকট জিজ্ঞাসা করলে কিস্তি আদায়ের বিষয়টি তিনি জানেন না বলে এ প্রতিনিধিকে জানান। তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আশ্বাস দেন। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ কালিগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক নূর মোহাম্মাদের নিকট কিস্তি আদায় সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা আছে কি না এ বিষয়ে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনের দোহায় দিয়ে কিস্তি আদায়ের কথা বলেন। ফিল্ড অফিসার খলিলুর রহমান এবং মাঠকর্মী ও আদায়কারী হাফিজুর রহমান ৫/৬ জনের গ্রুপ নিয়ে কিস্তি আদায় করতে আসার কারন জিজ্ঞাসা করলে তিনি প্রজ্ঞাপন/চিঠির কথা বললেও তারা কোনো চিঠি দেখাতে ব্যর্থ হয়। পরে সাংবাদিক দেখে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে চলে যায়।
Leave a Reply