আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বুধবার ভোরে কেআরআই নাংগালা-৪০২ সাবমেরিনটি ৫৩ জন আরোহীসহ নিখোঁজ হয়বুধবার ভোরে কেআরআই নাংগালা-৪০২ সাবমেরিনটি ৫৩ জন আরোহীসহ নিখোঁজ হয়
ইন্দোনেশিয়ার নিখোঁজ সাবমেরিন যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধার করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে দেশটির নৌবিহানী। সাবমেরিনটির অক্সিজেন শেষ হয়ে আসছে, তাই উদ্ধারে দেরি হলে অনেক প্রাণহানির আশঙ্কা করছে তারা। জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে এখবর জানিয়েছে।
বুধবার ভোরে কেআরআই নাংগালা-৪০২ সাবমেরিনটি ৫৩ জন আরোহীসহ নিখোঁজ হয়। কর্মকর্তারা বলছেন, সাবমেরিনটা যদি অক্ষত থাকে, তাহলে শনিবার সকাল পর্যন্ত এর অক্সিজেন ব্যবহার করা যাবে। তার আগেই উদ্ধার করতে হবে এর আরোহীদের।
জার্মানির তৈরি সাবমেরিনটি বালি উপকূল থেকে প্রায় ৬০ মাইল দূরের পানিতে নিখোঁজ হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাবমেরিনের সন্ধানে ৬টি যুদ্ধ জাহাজ, একটি হেলিকপ্টার এবং চারশ’ ডুবুরি অভিযান চালাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং যুক্তরাষ্ট্র উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়ার জন্য বিশেষ জাহাজ ও বিমান পাঠিয়েছে।
রয়টার্স জানায়, এটি ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে তৈরি করা হয়েছিল। মাঝখানে মেরামতের জন্য এটিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। দুই বছর পর ২০১২ সালে এটির মেরামত কাজ শেষ হয়। কেআরআই নাংগালা-৪০২ ইন্দোনেশিয়ার পাঁচটি সাবমেরিনের মধ্যে একটি।
ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী জানিয়েছে, সাবমেরিনটি একটি প্রশিক্ষণ মহড়ায় অংশ নিয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে সেটিকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
ফার্স্ট অ্যাডমিরাল জুলিয়াস উইদজোজনো ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, নৌবাহিনী সাবমেরিনটি খুঁজছে। এই অঞ্চলটি আমাদের পরিচিত, তবে এটি বেশ গভীর।
কয়েকটি সূত্র বলেছে, সাবমেরিনটি গভীর জলে ডুব দেওয়ার পরই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেছেন, ৫৩ জন আরোহীকে নিরাপদে উদ্ধার করাটা আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী এরই মধ্যে কীভাবে সাবমেরিনটি ডুব দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিল এবং কেন জরুরি ব্যবস্থা কাজ করেনি তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে।
নৌবাহিনীর প্রধান ইয়োদো মার্গোনো জানিয়েছেন, সাবমেরিনটি সবশেষ যে জায়গায় ছিল, সেখানে বিভিন্ন জায়গায় ছড়ানো তেল দেখা গেছে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ কোনি রাহাকুন্দিনি রয়টার্সকে বলেছেন, আরোহীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা এখনো আছে। তবে সাবমেরিনটি যদি সমুদ্র তলদেশে ৭০০ মিটার গভীরে থাকে, তবে ভূগর্ভস্থ পানির চাপে তাদের বেঁচে থাকা কঠিন হবে। কারণ, সাবমেরিনের কাঠামোতে ফাটল ধরতে পারে।
সাবমেরিনের আরোহীদের জন্য আশঙ্কায় সময় কাটছে স্বজনদের। একজন ক্রু সদস্যের স্ত্রী বের্দা আসমারা কামনা করছেন সাবমেরিনের সব আরোহী যেন বেঁচে থাকেন। তিনি জানান, সাবমেরিনে যাওয়ার আগে স্বামীর সঙ্গে শেষ ভিডিও কলে কথা হয়েছিল তার৷ তাকে স্বামী বলেছিলেন, তারা সমুদ্রে যাচ্ছেন, তিনি যেন দোয়া করেন।
Leave a Reply