কলারোয়া প্রতিনিধি: নিষিদ্ধ ট্রাক্টরের দখলে কলারোয়া উপজেলার সকল রাস্তা। ট্রাক্টরের দৌরাত্বে প্রতিনিয়ত নস্ট হচ্ছে কাঁচা পাকা রাস্তা। এছাড়াও এ সকল ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। গ্রামীণ সড়কের চলাচলকারী জনসাধারণ অবৈধ ট্রাক্টরের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। উপজেলার আঞ্চলিক মহাসড়ক ও গ্রামীণ সড়কে অবাধে ধাবিয়ে বেড়োচ্ছে নিষিদ্ধ যন্ত্রদানব ট্রাক্টর। চাষাবাদের জন্য আমদানিকৃত ট্রাক্টর এখন অবৈধ ট্রাক বা পরিবহন হয়ে গ্রামীণ জনপদে সর্বনাশ ঘটাতে শুরু করেছে। বিরামহীন চলাচলে শব্দ দুষণেও আশপাশের গ্রামের মানুষ, রাস্তায় চলাচলকারী জনসাধারণ ও শিক্ষার্থীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এসব অবৈধ যন্ত্রদানবের প্রতি নজর নেই কলারোয়া উপজেলা প্রশাসনের। জানা যায়, উপজেলার সবকয়টি ইট ভাটার ইট ও মাটি পরিবহনের কাজেই মূলত ব্যবহৃত হচ্ছে এসকল ট্রাক্টর। এসকল ট্রাক্টরের নেই কোন বৈধ রোডপার্মিট। তাছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় ১৫ থেকে ২০ বছরের শিশু-কিশোররাও এসব ট্রাক্টর অবাধে চালাবার সুযোগ পাচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা জানান, সরকারের কোটি কোটি টাকার রাস্তাঘাট ধ্বংস করছেন গুটিকয়েক ইটভাটার মালিক। তারা স্বল্পমূল্যে ফসলি জমির মাটি কিনে ভাটায় পরিবহনের ফলে বিলীন হচ্ছে রাস্তাঘাট এবং ট্রাক্টরের চাকায় প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে গ্রামের সদ্য নির্মিত কাঁচা, আধা পাকা-পাকা সড়কগুলো। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব অবৈধ যন্ত্রদানবের প্রতি স্থানীয় প্রশাসন উদাসিন। এলাকার প্রভাবশালীদের খুঁটির জোরে এসকল ট্রাক্টর চলছে বহাল তবিয়তে। সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচল গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। কৃষি জমির উর্বর টপসয়েল কেটে ইটভাটার সরবরাহ এবং পুকুর-দীঘিনালা ভরাট চলছে। ট্রাক্টরের অত্যাচারের মুখে গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রোড পারমিশন বিহীন ট্রাক্টর ও লাইসেন্স বিহীন চালকের কারণে দোকার পাট, রাস্তা-ঘাটে চলাচলকারী মানুষ সার্বক্ষনিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে চলাচল করছে। বিকট শব্দে মাটি বোঝাই নিয়ে সাদা পাউডারের মত ধুলো উড়িয়ে ধাবিয়ে চলছে এরা। এভাবেই কলারোয়া পৌরসভাসহ উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের পাড়া মহল্লার সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তা সহ উপজেলার প্রত্যেক সংযুক্ত সড়ক গুলোতেই দিনরাত চষে বেড়াচ্ছে অর্ধ শতাধিক অবৈধ ট্রাক্টর। পথচারী তুলসীডাঙ্গা গ্রামের কাজল কুমার ও লক্ষণ বিশ^াস জানান, এ গাড়ি চলাচলের সময় আশপাশ এলাকায় কুয়াশার মতো ট্রাক্টরের সৃষ্ঠ ধুলোয় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে থাকে। আর ধুলোর মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করায় সর্দি কাশি ও শ্বাসকষ্ট রোগ আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার শিশুসহ সব বয়সের মানুষেরা। অতি দ্রুত মানুষের জীবন অতিষ্ঠকারী এসব যন্ত্রদানব প্রতিরোধ করতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তবে এলাকাবাসীরা সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষের কাছে ট্রাক্টর বন্ধের দাবি করে বলেন, আমরা বুঝতে পারি না, ট্রাক্টর চলাচল বন্ধের কাজটি কেন এতো কঠিন। ট্রাক্টর চলাচলে যাদের স্বার্থরক্ষাহয়, তারা কি অকাল ও অস্বাভাবিক মৃত্যুরোধে সকল কিছুর ঊর্ধ্বে সর্বশ্রেষ্ঠ আদালত নিজের বিবেকের রায়ে স্বার্থ জলাঞ্জলির কথা মোটেও ভাবতে পারবে না? এ বিষয়ে কলারোয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জেল্লাল হোসেন বলেন, এসব টলি ট্রাক্টর রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি করে। কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী জেরিন কান্তা বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি নিষিদ্ধ ট্রাক্টর বন্ধের বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতোপূর্বে উপজেলায় কয়কেটি ভাটা মালিককে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানার আওতায় আনা হয়েছে। এনিয়ে নিয়মিত অভিযান চলবে। উপজেলায় খুব দ্রুত এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply