1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ০৬:৪৮ অপরাহ্ন
১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
Latest Posts
📰১৬ জুনের আগেই হাজিরা দিতে হবে শেখ হাসিনাকে? জারি হলো পরোয়ানা!📰এবার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষনা করবে সরকার📰আশাশুনিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে এলজিইডির পিচের রাস্তা সঠিকভাবে কাজ📰সাতক্ষীরায় বিজিবি’র মেডিকেল ক্যাম্পেইন📰সন্ত্রাসী আনসার মিস্ত্রীর বিরুদ্ধে জবেদ আলী মুকুলের নামে অপপ্রচারের অভিযোগ📰যশ-নুসরাত থাকছেন আলাদা , মাঝে তৃতীয় ব্যক্তির গুঞ্জন📰কলারোয়ায় ছাগল-রাজহাস পুরষ্কারের ৮দলীয় ফুটবল টুনামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত📰‘থ্রি জিরো ক্লাব’ গড়ে তোলার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের📰সাতক্ষীরায় দু:স্থদের খাবার বিতরণে শহীদ জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকী পালন📰যুক্তরাষ্ট্র দেশে পাঠালো ১০৮০ ভারতীয়কে

স্মৃতিতে অম্লান কমরেড মণি সিংহ

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২১
  • ৪০১ সংবাদটি পড়া হয়েছে
ডা. অসিত বরণ রায়

কমরেড মণি সিংহ ছিলেন কিংবদন্তি মহানায়ক-টংক আন্দোলনের নেতা। এ দেশের কমিউনিস্ট আন্দোলনের বিপ্লবী নেতা। ছোটবেলা থেকেই এই মহামানবের বহু রোমাঞ্চকর কাহিনী শুনেছি। তার চিন্তায়-চেতনায় ধ্যান-জ্ঞান ছিল সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের, যিনি প্রতিনিয়তই ভাবতেন বৈষম্যমুক্ত সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ। আমার জীবনে সৌভাগ্য যে কমরেড মণি সিংহের মতো মহামানবের সান্নিধ্য পেয়েছি। প্রায় এক যুগ পাশাপাশি কাটিয়েছি। কাছ থেকে দেখেছি আটপৌরেভাবে। সকাল থেকে রাত, রাত থেকে সকাল যার চুল থেকে নখ পর্যন্ত ছিল বিপ্লবী চেতনায় ভাস্বর।
তিনি ছিলেন একজন কমিউনিস্ট এবং পরম পূজনীয় মানবতার পূজারি মহামানব। প্রথম দেখা থেকেই আমি কমরেড মণি সিংহকে দাদু বলে সম্বোধন করি, যদিও পার্টির নেতাকর্মীরা সবাই ‘বড় ভাই’ বলে ডাকতেন। সে সময় কিছুদিন আগেই অণিমাদি (কমরেড মণি সিংহের স্ত্রী) রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছেন। সেই শূন্যতা দাদুকে খুব ব্যথিত করেছিল। এই সময়েই পার্টি আমাকে তাকে দেখাশোনা-সেবাযতে্নর দায়িত্ব দেয়। আমার মা এবং বাবা যখন শুনলেন এই গুরু দায়িত্বের কথা, তারা আমাকে সাহস দিয়েছিলেন। বারবার বলে দিয়েছিলেন, কোনোভাবেই যেন দাদুর অযত্ন না হয়। দাদু প্রতিটা মুহূর্তই সময় ও নিয়মের মধ্যে থাকতেন। সকালে দাড়ি কাটা থেকে শুরু করে দিনের সব কাজই করতেন একদম ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে মিলিয়ে। এর ব্যত্যয় কখনো দেখিনি। সকাল সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে ওঠা এবং তারপর সকালের হাঁটা। সেটা শীত হোক, বৃষ্টি হোক, দাদুর ব্যত্যয় ঘটেনি কখনো। বৃষ্টি হলে ছাতা নিয়ে বের হতেন। পার্টি অফিসেও যেতেন সময়মতো। রাত ১১টায় ঘুম, বাসায় থাকা মানেই তার বই পড়া। সোভিয়েত ইতিহাস গ্রন্থটি দাদু বারবার পড়তেন।
দাদুর কাছে শুনেছি টংক আন্দোলনের ইতিহাস। পাহাড়ে, জঙ্গলে হাতি ধরার গল্প। তাছাড়া পাহাড়ি আদিবাসী মানুষের জুম চাষের কথা। শীতের রাতে পাহাড়ের আগুন দেখা যেত। এর মানে জুম চাষের প্রস্তুতি চলছে। তারপর গর্ত খুঁড়ে নানা ধরনের বীজ পুঁতে দেয়া হতো- এটাই জুম চাষ। শুনেছি মহাশোলের গল্প। পাহাড়ি মাছ সোমেশ্বরী নদীতে পাওয়া যেত। খুবই সুস্বাদু মাছ।
দাদুর কাছে শুনেছি কীভাবে ’৭১ সালে জেল ভেঙে বেরিয়েছিলেন। জেলের সব কয়েদি সেদিন দাদুর হুকুমে রাজশাহী জেলের দেয়াল ভেঙে বের হলেন এবং দাদু স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়ে প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা হয়েছিলেন। সময় পেলেই দাদুর কাছে গল্প শুনতাম। শুনেছি ষাট দশকের প্রথম ভাগে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেই ঐতিহাসিক বৈঠকের কথা। এ বৈঠকের পরেই এ দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে পরিবর্তন ঘটতে শুরু করল। শিক্ষা আন্দোলন, ছয় দফার আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা আন্দোলন। দাদু সেদিন বঙ্গবন্ধুকে বুঝিয়েছিলেন, এখনো স্বাধীনতা চাওয়ার সময় আসেনি। দাদুর কাছে শুনেছিলাম বঙ্গবন্ধু সেই কথা, ‘দাদা, লিডার (শহীদ সোহরাওয়ার্দী) বলেছেন আপনার কথা শুনতে। আপনার কথা মেনে নিলাম কিন্তু মনে নিলাম না। আমি বাংলার স্বাধীনতাই চাই।’
মনে পড়ে মালিবাগের বাসায় এসেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সেদিন স্বৈরাচারী এরশাদের বিরুদ্ধে কীভাবে আন্দোলন শুরু করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করতে। সেদিনও কমরেড মণি সিং শেখ হাসিনাকে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। আমি সেদিন পাশে বসে দেখেছি এবং শুনেছি সব কথা। সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমরেড মঞ্জুরুল আহসান খান।
অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত এ দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন কমরেড মণি সিংহ। প্রতিটি আন্দোলনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। আজ যখন সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তখনই কমরেড মণি সিংহকে মনে পড়ে। কারণ এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে তিনি সারাজীবন লড়াই করেছেন। আজকে এই অশুভ শক্তি জাতির পিতার ভাস্কর্য ভাঙছে। এই ভাস্কর্য ভাঙা মানে জাতীয় পতাকাকে অস্বীকার করা, সংবিধানকে অস্বীকার করা, স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা।
আজকে যদি কমরেড মণি সিংহ বেঁচে থাকতেন, তবে হয়তো প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা কমরেড মণি সিংহকে জিজ্ঞেস করতেন, ‘কী করবেন?’ হয়তো কমরেড মণি সিংহ বলতেন, ‘স্বাধীনতার সপক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দেন।’ আর এ কারণেই কমরেড মণি সিংহ আজো বাংলাদেশে প্রাসঙ্গিক। কমরেড মণি সিংহকে জানাই লাল সালাম।

লেখক : যুগ্ম আহ্বায়ক, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট কেন্দ্র।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2025
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd