নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনা (কোভিড-১৯) এবং আরেক সংক্রামক ব্যাধি ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে সাতক্ষীরায় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০ টায় সিভিল সার্জন অফিস সাতক্ষীরার সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো’র আওতাধীন লাইফস্টাইল, হেলথ এডুকেশন ও প্রমোশন অপারেশনাল প্ল্যানের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় কো-অর্ডিনেটর হিসাবে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত, রিসোর্স পার্সন হিসাবে ছিলেন মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফুল্যাহ আল কাফি এবং সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্যশিক্ষা অফিসার পুলক কুমার পাল।
সাতক্ষীরার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে সিভিল সার্জন অফিসের জুনিয়র স্বাস্থ্যশিক্ষা অফিসার মোছা: শাহীনুর খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বলা হয় কর্মশালায় বলা হয় করোনা ও ডেঙ্গু সংক্রামক ব্যাধি। এ ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে হলে পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। করোনার শুরুতে সর্দিজ¦র, শুকনো কাশি, গলা ব্যথা, ডায়রিয়া, আঙুল ও পায়ের পাতা ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া সহ নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এমন ক্ষেত্রে অবশ্যই আক্রান্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রেখে কমপক্ষে ১৪ দিন চিকিৎসা দিতে হবে। তার সংস্পর্শে কেউ গেলে তিনিও আক্রান্ত হতে পারেন উল্লেখ করে কর্মশালায় আরও বলা হয় রোগীর মানসিক অবস্থা শক্ত রাখার জন্য তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধপত্র ব্যবহার করা উচিত। এমনকি রোগীর জন্য পৃথক বাথরুমের ব্যবস্থা করলেও ভাল হয়। বাংলাদেশে অসংক্রামক ব্যাধিতে ৬২ শতাংশ রোগী মারা যাচ্ছে এমন তথ্য উল্লেখ করে সিভিল সার্জন বলেন, ৬৪ জেলায় ১২৮টি আদর্শ গ্রাম রয়েছে। এসব গ্রামে পূর্নাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবার যাবতীয় ব্যবস্থা বিদ্যমান। এ প্রসঙ্গে আরও বলা হয়, খোলা জায়গায় মলত্যাগ না করা, বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার সহ নানা বিষয় রয়েছে এর মধ্যে। ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমেও তাদের সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। সাতক্ষীরার সকল বিদ্যালয়ে খুদে ডাক্তারের চিকিৎসা চালু রয়েছে উল্লেখ করে কর্মশালায় আরও বলা হয়, পোশাক শিল্প, স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যশিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এসবের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব বলেও জানানো হয়। তাছাড়া মাস্ক ব্যবহার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার, হাঁচিকাশি ও থুতু থেকে নিজেকে সতর্ক রাখা এবং অন্যকেও সতর্ক করা সহ একই সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও আহবান জানানো হয়।
কর্মশালায় সাতক্ষীরা জেলার করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরে সিভিল সার্জন বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরা জেলায় গত ৯ মাসে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৯ জন। তার মধ্যে নমুনা পরীক্ষা করে পজেটিভ ১১৫৮ জন এবং নেগেটিভ পাওয়া গেছে ৪৮৩৬ জন। জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যু ঘটেছে ১৪০ জনেরও অধিক মানুষের। অপরদিকে এই সময়ের মধ্যে ১০৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে ছিলেন চিকিৎসক ২২ জন, নার্স ১৯ জন এবং অন্যান্য ৬৫ জন। কর্মশালায় করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
Leave a Reply