বঙ্গোপসাগরে ২২ দিন ভেসে থাকার পর ১৮ মাঝিমাল্লা উদ্ধার

ন্যাশনাল ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে ইঞ্জিন বিকল হয়ে ২২ দিন ভাসমান থাকার পর ফিশিং বোট ‘এফবি আল হাসান’ থেকে ১৮ মাঝিমাল্লাকে জীবিত উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। শুক্রবার নৌবাহিনীরজাহাজ ‘নির্মূল’ ও ‘অতন্দ্র’ গভীরসমুদ্রে টহলরত অবস্থায় সেন্টমার্টিনের ৮৩ নটিক্যাল মাইল দূরে ভাসমান ফিশিং বোটটি কে মাঝিমাল্লাসহ উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়া মাঝি মাল্লারা হলেন- কাশেম কেরানী (৬০), বাবুল (৩২), আল আমিন (২০), হোসেন (২৭), তোফাজ্জল (৫০), খলিল (৩৬), শাকিল, আজিজ (৬৭), নজরুল (৫৯), শামীম সিকদার (২৬), আবুল কাশেম (৪৫), কবির উদ্দিন (৪২), জগন্নাথ (৪৫), ইউসুফ (৩৬), রমজান (৫০), হাফিজ (৩৫), শাহ আলম (৪০) ও বাবলু (৩৪)। শনিবার আই এস পি আরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানিয়েছেন, গত ৯ ডিসেম্বর ফিশিং বোটটি ১৮ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে মাছ ধরার উদ্দেশে সমুদ্রে যায়। ১৭ ডিসেম্বর পায়রা বন্দর বয়ার কাছে ফিশিং বোটটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় ২২ দিন ধরে তারা সমুদ্রে ভাসতে থাকে।
এসময় জেলেরা শুকনো চাল ও শুঁটকি খেয়ে বেঁচেছিল। পরে নৌবাহিনী জাহাজ ‘নির্মূল’ ও ‘অতন্দ্র’ গভীর সমুদ্রে টহলরত অবস্থায় ফিশিং বোটটি কে উদ্ধার করে। তীব্র পানি ও খাদ্য সংকটে শারীরিক ও মানসিক ভাবে দুর্বল অবস্থায় নৌবাহিনী তাদের উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা, প্রয়োজনীয় খাদ্য ও কাপড় দিয়েছে। পরে তাদের ফিশিং বোটটির ত্রুটিযুক্ত ইঞ্জিন মেরামত করে নৌকা ও মাঝিদের নিরাপদে পটুয়াখালীতে পাঠানোর লক্ষ্যে নৌবাহিনীর সেন্টমার্টিন ঘাঁটিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জেলে হাবিুল্লাহ বলেন, জীবিকার তাগিদে গত ৯ ডিসেম্বর সমুদ্রে নৌকা ভাসান ১৮ জেলে। কিন্তু নৌকার ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে দীর্ঘ ২২ দিন তারা সমুদ্রে ভাসতে থাকেন। খাবার পানি শেষ, জ্বালানিও নেই, নিস্তেজ হয়ে পড়ে শরীর। এমন অবস্থায় সেখানে হাজির হয় নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ। অবসান হয় দীর্ঘ উৎকণ্ঠার। এখন তারা বাড়ি ফিরেছেন, পরিবারের কাছে। খাবার শেষ হওয়ার পর আমরা মাছ শুকিয়ে খেয়েছি। মাছ ফালি করে রোদে শুকিয়ে খেয়েছি পুড়িয়ে খেয়েছি কয়েক দিন। এক সময় ডিজেলও শেষ হয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, নৌকায় খাবার পানির সংকট দেখা দেয়। সাগরের পানিতো নোনা। ওটা তো আর খাওয়া যায়না। আমরা মাছ রাখার জন্য যে বরফ নিয়েছিলাম সেই বরফ গলা পানি খেয়ে জীবনে বেঁচে ফিরেছি।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *