1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:০১ অপরাহ্ন
৮ বৈশাখ, ১৪৩২
Latest Posts
📰সাংবাদিক আরিফুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন📰ধরা’র আয়োজনে “হাওর অঞ্চলে বৈষম্য ও অব্যবস্থাপনা” বিষয়ক আলোচনা সভা📰আশাশুনি সরকারি কলেজে ৬  শিক্ষককে এডহক নিয়োগ📰রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে মিয়ানমারে শান্তি আসবে না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা📰মাদকসহ বিএনপি নেতার স্ত্রী আটক📰ফলোআপ নিউজ তালায় সেচপাম্পের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে জীবন বিলকিস বেগমের!📰কুল্যায় ফিলিন্তিনদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ📰আনুলিয়ায় একশত পরিবারের  মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ📰আশাশুনির খাজরা হাট বাজারের  ইজারা গ্রহিতার সাব ইজারা হস্তান্তর📰সাতক্ষীরা জেলা মন্দির সমিতির নব-গঠিত কমিটির অভিষেক

আম্পান ও করোনার ক্ষতি কাটাতে হিমসিম খাচ্ছে ২২ লাখ মানুষ

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২১
  • ২২৮ সংবাদটি পড়া হয়েছে

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় বিশেষ বরাদ্দের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা ও আম্পানের মত ভয়াহব দুর্যোগ মোকাবেলা করতে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার ২২ লাখ মানুষ রীতিমত হিমসিম খাচ্ছে। দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে সাতক্ষীরা জেলায় দরিদ্্র মানুষের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি, অথচ করোনা সিডর-আইলা-বুলবুল-আম্পানের মতো ভয়াবহ দুর্যোগ মোকাবেলায় এ জেলার জন্য সরকারের নেই অতিরিক্ত কোন বরাদ্দ। ফলে সাতক্ষীরা উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় নাকাল হয়ে পড়েছে। দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে তারা।
সুপার সাইক্লোন আম্পান ৮ মাস আগে সাতক্ষীরায় শক্তিশালী রুপ নিয়ে আঘাত হানে। আম্পানে বিধ্বস্ত আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষ এখনো নদীর জোয়ার ভাটার সাথে লড়াই করে বসবাস করছে। অনেকের একমাত্র আশ্রয়স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে নদীর বেড়িবাঁধ। আর করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষ। অনেকেই কর্মের খোঁজে সাতক্ষীরা ছেড়ে অন্যত্রে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এমতাবস্থায় সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষকে বাঁচাতে অতিরিক্ত বরাদ্দসহ সরকারকে বিশেষভাবে নজর দেয়ার দাবি সাতক্ষীরার ২২ লাখ মানুষের।


২০১০ সালের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে সাতক্ষীরা জেলায় মোট জনসংখ্যা ১৯ লাখ ৮৫ হাজার ৯৫৯ জন, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২২ লাখে। পরিবারের সংখ্যা ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৮৯০টি। ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী সাতক্ষীরা জেলার ৪৬.৩০ ভাগ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করে। আর ২৯.০৭ ভাগ মানুষ অতিদরিদ্র। দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে সাতক্ষীরা অঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে দরিদ্র ও পিছিয়েপড়া জনগোষ্টি।
সাতক্ষীরা উপকূলবর্তী জেলা হওয়ায় প্রতিবছর এখানকার মানুষকে কোন না কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয়। দুর্যোগপ্রবন জেলা হিসেবে চিহ্নিত সাতক্ষীরা। অথচ এ জেলায় সরকারের অতিরিক্ত কোন বরাদ্দ না থাকায় মানুষজন সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। নেই কোন বাড়তি সুযোগ-সুবিধা। দিন দিন দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে মানুষের আগামী দিনের ভবিষ্যত।


করোনার ভয়াল ছোঁবলে গত বছর (২০২০ সালে ) ২০ মে সাতক্ষীরা উপকূল অঞ্চলে আঘাতহানে সুপার সাইক্লোন আম্পান। ল-ভ- হয়েপড়ে সাতক্ষীরার বিস্তিন্ন এলাকা। আম্পান ৮ মাস অতিবাহিত হয়েছে। অথচ উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ এখনও মাজা সোজাকরে দাঁড়াতে পারেনি। একদিকে করোনার ভয়াল ছোঁবল, অন্যদিকে শক্তিশালী আম্পানের আঘাত। অনেক এলাকায় এখনও বেড়িবাঁধ সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। ফলে গ্রামের উপর দিয়ে আজও নদীর জোয়ার-ভাটা প্রবাহিত হচ্ছে। রাস্তাঘাটের বেহালদশা, খানাখন্দে ভরা। অনেক এলাকায় রাস্তাঘাট নদীতে ধসে গেছে। দুর্গত এলাকায় চিকিৎসা, সুপেয় পানি ও খাদ্য সংকট লেগেই আছে। সবমিলিয়ে সাতক্ষীরা অঞ্চলের মানুষের কাটছে দুর্বিসহ জীবন।
তথ্যানুসন্ধানে জানাগেছে, করোনা ও আম্পানে সাতক্ষীরা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে করোনা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্টি ও নদী ভাঙ্গন রোধ খাতে গত এক বছরে মাত্র ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে করোনা ও আম্পানে বরাদ্দ পাওয়াগেছে ২০ জনকে ২ হাজার টাকা করে মাত্র ৪০ হাজার টাকা এবং প্রতিটি উপজেলার ৬ টা করে সেলাই মেশিন অর্থাৎ জেলার ৭ টা উপজেলায় ৪২টি সেলাই মেশিন। আম্পানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৩ কোটি ৬০ লাখ ৮১ হাজার টাকা ব্যয়ে ২১১টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য গৃহনির্মাণ প্রকল্প। নিয়মিত বরাদ্দের বাইরে কোন বরাদ্দই দেয়া হয়নি সাতক্ষীরায়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ জেলার সিংহভাগ রাস্তাঘাট সংস্কার ও ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করে থাকে। এই দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, আম্পানের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে ৩১ কোটি ৫০ লাখ টাকার পৃথক ১০টি প্রকল্প ( ৪৫.২৬ কি: মি: সড়ক সংস্কারের জন্য ) তৈরী করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। কিন্তু আম্পান প্রকল্পে আজও কোন বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বেসরকারি সংস্থার উল্লেখযোগ্য সহায়তার মধ্যে উত্তরণ করোনা মোকাবেলায় দাতাদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে গত এক বছরে প্রায় ১৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করে সাতক্ষীরার মানুষকে নগদ অর্থসহ বিভিন্ন সহায়তা করেছে এবং এসব সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। সংস্থাটি স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে করোনা মোকাবেলায় মানুষকে সচেতন করতে নানা ধরনের প্রচারনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। হাতেগোনা আরো কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আনিসুর রহিম বলেন,

শিক্ষা- স্বাস্থ্য-চিকিৎসা, বাসস্থানসহ নাগরিক সুবিধা থেকে অনেকখানি বঞ্চিত সাতক্ষীরা জেলার মানুষ। দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় সাতক্ষীরা জেলা অনেক পিছিয়ে। এ জেলায় নিরক্ষরতার হার অন্য জেলা থেকে ১৮ ভাগ বেশি। স্বাস্থ্যে অন্যান্য জেলা থেকে ২০ ভাগ বেশি মানুষ বঞ্চিত। এ জেলায় তেমন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যোগাযোগ ব্যবস্থা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় দিন দিন আরো পিছিয়ে পড়ছে সাতক্ষীরা। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুন:বাসনে সরকারকে নজর দিতে হবে । এ জেলার অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে এগিয়ে নিতে হলে অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন। তা নাহলে দিন দিন সাতক্ষীরা জেলা আরো পিছিয়ে পড়বে।

সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আনিসুর রহিম


সাতক্ষীরার নাগরিক নেতা এড. ফাইমুল হক কিসলু বলেন, সাতক্ষীরা জেলা দুর্যোগপ্রবন একটি জেলা। এ জেলায় সমস্যার কোন শেষ নেই। জলাবদ্ধতা নিরসন, কয়েক’শ কিলোমিটার উপকূলীয় ঝুকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ স্থায়ী ভাবে নির্মানসহ এখানকার মানুষের বেশ কিছু যৌক্তিক দাবি রয়েছে। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা নিরসনে সরকার যদি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা না গ্রহন করে তাহলে সাতক্ষীরা জেলা মনুষ্যবসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে দিনাপতিপাত করছে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ। এসব মানুষকে রক্ষা করতে হলে সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। নশ্চিত করতে হবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, সাতক্ষীরা একটি দুর্যোগপ্রবন জেলা। প্রতিবছর কোন না কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয় এখানকার মানুষকে। দুর্যোগ পূর্ববর্তী, দুর্যোগকালীন এবং দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে এখানকার মানুষের কষ্টের সীমা থাকেনা। দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য একটি সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা তৈরী করা খুবই জরুরী। আর এজন্য আম্পানের পর বেসরকারি সংস্থা উত্তরণসহ অন্যান্য কয়েকটি সংস্থার সহায়তায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি সুপারিশমালা তৈরীর কাজ চলছে। ডাটাবেজ তৈরীর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। চলতি মাসের মধ্যেই বিশেষ করে সাতক্ষীরা অঞ্চলে দুর্যোগ মোকাবেলায় কি ধরনের পরিকল্পনা গ্রহন করা প্রয়োজন তার একটি সুনিদিষ্ট সুপারিশমালা তৈরী করে সরকারের কাছে পাঠানো হবে। সুপারিশ মালার মধ্যে সল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা থাকবে। আর এসব কর্মপরিকল্পনা সরকারি ভাবে বাস্তবায়ন করা হলে সাতক্ষীরা অঞ্চলের জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তিনি আরো বলেন, করোনা ও আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত পাশ্ববর্তী জেলাগুলোর তুলনায় সাতক্ষীরা জেলায় অতিরিক্ত কোন বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। অথচ প্রকৃতিক দুর্যোগে পাশ্ববর্তী জেলা থেকে সাতক্ষীরা জেলা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2025
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd