সংবাদ সম্মেলনে : বসতভিটা রক্ষা ও পরিবারের সদস্যদের নামে দায়ের করা মিথ্যে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এক ভূমিহীন গৃহবধূ

নিজস্ব প্রতিনিধি: শ্যামনগরে সংখ্যালঘুর দোহাই দিয়ে এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু হিমাংশু গং কর্তৃক ১নং খাস খতিয়ানের ডিসিআর কৃত সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলের উদ্দেশ্যে মিথ্যে মামলা, বাড়িঘর ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ, মারপিট, লুটপাট ও খুন জখমের হুমকি দিচ্ছেন। সোমবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শ্যামনগর উপজেলার বদঘাটা গ্রামের বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী মোছা: নাজমা খাতুন এই অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি সহ বদঘাটা ও কাচড়াহাটি গ্রামের মৃত. আব্দুল খালেক মোল্লার ছেলে সাখাওয়াত হোসেন, নুরুজ্জামানের স্ত্রী নাজমা বেগম, মৃত মাদার বক্সের ছেলে শামছুর রহমান ধুলো, দেলোয়ার হোসেনের ছেলে কালু গাজী, মুজিবর রহমানের ছেলে আসাদুজ্জামানসহ আমরা ১২টি পরিবার শ্যামনগরের কাচড়াহাটি (নন্দীগ্রাম) মৌজায় জে এল ২২, বিএস খতিয়ান নং-০১ দাগ, ৫৮০/৭৪৩, ১নং খাস খতিয়ানের সম্পত্তি সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসছি। কিন্তু এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু ভূপেন্দ্র মন্ডলের ছেলে হিমাংশু কুমার, আনন্দ কুমার মন্ডলের ছেলে অনাথ মন্ডল, নিরাপদ মন্ডলের ছেলে কিশোরী লাল মন্ডল, মৃত. রবীন্দ্র নাথ মন্ডলের ছেলে উৎপল কুমার মন্ডল, অভিলাষের ছেলে সুধীর মন্ডল গং উক্ত সম্পত্তি থেকে আমাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে অবৈধভাবে দখলের চক্রান্ত করতে থাকে। নাজমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আমাদের ইজারা নেয়া সম্পত্তি অবৈভাবে দখলের উদ্দেশ্যে ভূমিদস্যু হিমাংশু গংরা বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি প্রদর্শন করতে থাকে। একপর্যায়ে আমাদের পরিবারের পুরুষদের নামে একাধিক মিথ্যে মামলা দায়ের করে হয়রানি করে যাচ্ছে। এসব মিথ্যে মামলায় পুরুষ লোকেরা বাড়ি ছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বাড়িতে পুরুষদের না থাকার সুযোগে হিমাংশু গংরা সংঘবদ্ধ লোকজন নিয়ে প্রায় প্রতি রাতে আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে অগ্নি সংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে গেলেই সংখ্যালঘুর দোহাই দিয়ে তারা পার পেয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে তারা সংখ্যালঘুর উপর নির্যাতন হচ্ছে মর্মে মিথ্যে প্রচার দিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, ভূমিদস্যু হিমাংশু গংদের সাথে উল্লেখিত ব্যক্তিরা কেউ ভূমিহীন নয়। তাদের যথেষ্ট অর্থ সম্পদ থাকা স্বত্বেও লোভের বশবর্তী হয়ে প্রকৃত ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে ভাংচুর চালিয়ে সংখ্যালঘু’র দোয়াই দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন। এরই ধারবাহিকতায় গত ২০ ডিসেম্বর ভোরে আমার ঘরের দক্ষিণে সাকাত হোসেনের বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে। ২১ ডিসেম্বর আমার বসতবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং ২২ ডিসেম্বর তাছলি ও মজিদার বাড়িঘর ভাংচুর করে। এঘটনায় আমরা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করলেও তারা সংখ্যালঘুর দোহাই দিয়ে নিজেদের রক্ষা করে যাচ্ছেন। অথচ উক্ত সম্পত্তি নিয়ে আদালতে একটি মামলাও রয়েছে। মামলা শেষ হওয়ার অপেক্ষা না করে তারা গায়ের জোরে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি তথাকথিত সংখ্যালঘু পরিচয়দানকারি ভূমিদস্যু হিমাংশু গং কর্তৃক দায়ের করা মিথ্যে মামলার দায় থেকে অসহায় ১২টি ভূমিহীন পরিবারের সদস্যদের অবহ্যতির দাবি জানান। একই সাথে তাদের মাথা গোজাই ঠাঁই বসতভিটা রক্ষার দাবি জানিয়ে বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাটে সাথে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *