পিপি এ্যাড. আব্দুল লতিফের ছেলে নেতৃত্বে চাচা, চাচী ও তিন ভাইকে কুপিয়ে জখম

নিজস্ব প্রতিনিধি : মাপ জরিপের পর জমিতে ভিত করতে গেলে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি এ্যাড. আব্দুল লতিফের ছেলে রাসেলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তার আপন চাচা, চাচী ও তিন চাচাত ভাইকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করেছে বলে জানা গেছে। রোববার দুপুরে সদর উপজেলার দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, সাতক্ষীরা সদরের দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামের সামছুর রহমানের ছেলে আহাদ আলী (৬৯), তার ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন তোফা (৪৮), মজনুর রহমান (৪৫), মোজাম্মেল হক (৩৫) ও আহাদ আলীর স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৫৫)। আহতদের মধ্যে তিনজন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকী দুইজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৃদ্ধ আহাদ আলী জানান, তার ভাই সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিটি এ্যাড. আব্দুল লতিফের বাড়ি সংলগ্ন ভিটায় তিনি সাড়ে ১২ শতক জমি পান। এ নিয়ে কয়েকবার শালিসও হয়েছে। গত শুক্রবার আমিন আব্দুর রাজ্জাক ওই জমি মাপ জরিপ করেন। মাপ জরিপ শেষে উভয়পক্ষ সীমানা মেনে নেন। একপর্যায়ে এ্যাড. আব্দুল লতিফ ওই জমিতে তাকে (আহাদকে) ঘর করার অনুমতি দেন। সে অনুযায়ি তিনি তার ছেলেদের নিয়ে রোববার দুপুর ১২টার দিকে চিহ্নিত জায়গায় ঘরের জন্য ভিত কাটতে থাকেন। খবর পেয়ে এ্যাড. লতিফের ছেলে রাসেলের নেতৃত্বে রমজান আলীর ছেলে আমির আলী, আদম আলীর ছেলে মঞ্জুরুল ও মোমিন আলী, শফিকুলের ছেলে শরিফ হোসেন ও উজ্জ্বল এবং অহেদ আলীর ছেলে জিয়ারুল ইসলামসহ ১০/১২ জন হাতে রাম দা, লোহার রড ও বাঁশের লাঠি নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারিরা তাদেরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। স্ত্রী সেলিনা তাদেরকে উদ্ধারে এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে জখম করা হয়। স্থানীয়রা খবর পেয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী বাবলুর রহমান, মনিরুল ইসলাম, আকবর আলী ও আব্দুল মান্নান জানান, ইতিপূর্বে আব্দুল আহাদ ও তার পরিবারের সদস্যদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করায় পিপি এ্যাড. আব্দুল লতিফ ও তার ছেলে রাসেলসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলাও রয়েছে। তারা আরো জানান, রাসেল পরিকল্পিতভাবে আহাদসহ তার পরিবারের পাঁচজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ তৈয়েবুর রহমান জানান, ভারী জিনিস দিয়ে আঘাতের ফলে বৃদ্ধ আব্দুল আহাদের দু’টি দাঁত ভেঙে গেছে। এ ছাড়া আহাদ, তোফাজ্জেল ও মজনুর মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো জিনিস দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়েছে এবং সেলিনা ও মোফাজ্জেল এর শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে এ্যাড. আব্দুল লতিফের ছেলে রাসেল জানান, তিনি এলাকার বাইরে থাকাকালিন ঘটনাটি ঘটেছে। হামলার সঙ্গে তার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি এ্যাড. লতিফ জানান, তিনি কোর্টে ছিলেন। খবর পেয়ে আহতদের দেখতে সদর হাসপাতালে যান। এ ধরণের হামলার তিনি নিন্দা জানান।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, দক্ষিন কামারবায়সা গ্রামে একটি মারামারির খবর পেয়ে উপ-পরিদর্শক হানিফ ও ইফতেখারকে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *