স্টাফ রিপোর্টার: দেবহাটার সখিপুরে জবেদা খাতুন (৪৫) নামের এক অসহায় নারীকে পিটিয়ে জখম করে তার শেষ সম্বল বসতভিটার জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে প্রতিপক্ষ ভুমিদস্যুরা। ভুক্তভোগী জবেদা খাতুন দেবহাটা উপজেলার মাঝ সখিপুর গ্রামের মৃত মোহর আলীর মেয়ে। বর্তমানে তিনি সখিপুরস্থ দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মারপিট ও জোরপূর্বক জমি দখলের ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে দেবহাটা থানায় নয় জনকে আসামী করে একটি মামলা (নং-০২) দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী জবেদা খাতুন চিকিৎসাধীন অবস্থায় জানান, কোনো সন্তানাদি না থাকায় তিনি একাই দীর্ঘকাল ধরে মাঝ সখিপুরে নিজের বসত ভিটায় একটি জরাজীর্ন মাটির কুড়ে ঘরে বসবাস করে আসছেন। ওই বসত ভিটার তার সর্বমোট ৮ শতক জমি রয়েছে। কিন্তু তার কোনো সন্তান না থাকায় একমাত্র সম্বল কুড়ে ঘরটি সহ ওই ৮শতক জমি জোর পূর্বক দখলে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে তার প্রতিবেশী নুরু মোল্যার ছেলে দখলবাজ ভুমিদস্যু সাইফুল মোল্যা, রফিকুল মোল্যা, শরিফুল মোল্যা, বিল্লাল হোসেনসহ কয়েকজন। সাম্প্রতিক সময়ে জবেদা খাতুন তার কুড়ে ঘরটি ঘেঙে সেখানে দোচালা একটি ইটের ঘর নির্মানের সিদ্ধান্ত নিলে ওই দখলবাজ ভুমিদস্যুদের গাত্রদাহ শুরু হয়। তারা একের পর এক জবেদা খাতুনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্মানকাজ বন্ধ করে দেন। মঙ্গলবার জবেদা খাতুন আবারো নির্মান কাজ শুরু করলে প্রতিপক্ষ ভুমিদস্যু সাইফুল ইসলাম, তার স্ত্রী জেসমিন বেগম, ভাই রফিকুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন লোকজন নিয়ে অসহায় নিঃসন্তান জবেদা খাতুন ও তার বড় বোন মোমেনা খাতুনকে পিটিয়ে জখম করে। একপর্যায়ে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এঘটনায় ওই দিনই জবেদা খাতুন বাদী হয়ে হামলাকারী দখলবাজ ভুমিদস্যুদের বিরুদ্ধে দেবহাটা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এদিকে মামলা দায়েরের একদিন পর বৃহষ্পতিবার মামলার আসামীরা আদালত থেকে জামিন নেয়ার পর শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে আবারো লাঠিশোঠা ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মামলার বাদী জবেদা খাতুনের বাড়ীতে হামলা চালায়। হামলাকালে পাশ্ববর্তী এক প্রতিবেশীর বাড়িতে অবস্থানের কারনে ভুক্তভোগী ও মামলার বাদী জবেদা খাতুন প্রানে বেঁচে গেলেও হামলাকারীরা তার নির্মানাধীন বসত ঘরটি ভেঙে পুরোপুরি নষ্ট করে দিয়েছে।
এব্যপারে দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, মঙ্গলবার হামলা ও মারপিটের শিকার জবেদা খাতুন বাদী হয়ে নয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে আসামীরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে শুক্রবার দিবাগত রাতে আবারো বাদীর বাড়ীতে হামলা ও ভাংচুর করেছে বলে জানতে পেরেছি। পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এতে করে পুলিশের পক্ষ থেকে আসামীদের বিরুদ্ধে আরোও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও তিনি জানান।
Leave a Reply