1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন
৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১
Latest Posts
📰প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দীন📰আন্দোলনে সাধারণের পক্ষে দাঁড়িয়ে আস্থার প্রতীক হয়েছে সেনাবাহিনী : ড. ইউনূস📰অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা, সাতক্ষীরা সীমান্তে আটক ২📰উপকূলীয় জীবনের সুরক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে বাগেরহাটে মানববন্ধন📰‘উপকূলীয় নারীদের সফলতা ও জ্ঞানের কথা’ শীর্ষক অভিজ্ঞতা সভা📰বর্ণাঢ্য আয়োজনে সপ্তাহ ব্যাপি বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন📰আশাশুনির বুধহাটা ক্লাস্টারের দুরাবস্থাগ্রস্থ ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাণের ঝুঁকির মধ্যে চলছে ক্লাশ 📰আশাশুনিতে উপজেলা শুমারী  কমিটির সভা অনুষ্ঠিত📰পাইকগাছায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ!প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি📰জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে সাতক্ষীরাতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

সে কোন সাধনা

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : রবিবার, ১ নভেম্বর, ২০২০
  • ৩৯৬ সংবাদটি পড়া হয়েছে

দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় : ‘বল রে জবা বল, কোন সাধনায় পেলি শ্যামা মায়ের চরণতল’, কিংবা ‘আমার কালো মেয়ের পায়ের তলায় দেখে যা আলোর নাচন’— জনপ্রিয় এই শ্যামাসঙ্গীত লিখেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। লিখেছেন আগমনি, দুর্গাস্তুতি, পদাবলি, কীর্তনও। গীতিকার, সুরকারের ধর্ম যে ভিন্ন, তা কখনও কেউ খেয়ালও করেনি— এটাই চিরকাল বাঙালির ধর্মীয় সঙ্গীত-জগতের ঐতিহ্য। ‘মা গো চিন্ময়ী রূপ ধরে আয়’ নজরুলের আর একটি বিখ্যাত গান। গানগুলির কথা শুনলেই বোঝা যায়, হিন্দু শাস্ত্র ও ধর্মীয় সাহিত্য সম্পর্কে কত গভীর জ্ঞান ও অনুভব ছিল তাঁর। 

আর এক মুসলিম গায়ক শ্যামাসঙ্গীত গেয়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছিলেন। মহম্মদ কাসেম। তিনি অবশ্য শ্যামাসঙ্গীত গাইতেন, কে মল্লিক ছদ্মনামে। অনায়াসে, অন্তরের মাধুর্য ঢেলে তিনি গেয়েছিলেন, ‘দুঃখহরা তারা নাম তোমার, তাই ডাকি মা বারবার’, কিংবা, ‘আনন্দময়ী শ্যামা মা’কে আমি বড় ভালবাসি, হৃদয়ে উদয়া হলে হরজায়া কাজ কী আর আমার গয়া-বারাণসী।’ নজরুলের চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন কাসেম, জন্ম ১৮৮৮-তে। বর্ধমানের আদি বাসিন্দা, কলকাতায় থাকতেন ভাড়াবাড়িতে। বাড়ির মালিক মল্লিকদের পদবি নিয়েছিলেন। তাঁর গাওয়া শ্যামাসঙ্গীত, আগমনি গান আজও সাক্ষ্য বহন করে যে, সঙ্গীত-জগতে ধর্মের ভেদাভেদ অনুপ্রবেশ করতে পারেনি। ধ্রুপদী সঙ্গীতের ক্ষেত্রেও ‘আল্লা জানে, মৌলা জানে’ বন্দিশ যেমন হিন্দু ছাত্রেরা শিখেছে ও গেয়েছে, তেমনই আমির খান গেয়েছেন মালকোশের বিলম্বিত বন্দিশ ‘পাগলাগন দে মহারাজ কুঁয়ার’। বড়ে গুলাম আলি খান গেয়েছেন ভজন, ‘হরি ওম তৎসৎ’। 

মানবজমিন

সনাতন পাল: কালীপুজো এলেই যাঁর নাম মনে আসে, তিনি শাক্ত কবি তথা সাধক রামপ্রসাদ সেন। তাঁর ভক্তিগীতিই ‘রামপ্রসাদী’ নামে পরিচিত। জন্ম সম্ভবত ১৭১৭-১৭২৩ সালের মধ্যে কোনও এক সময়ে। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই রামপ্রসাদ সংস্কৃত, বাংলা, ফারসি এবং হিন্দি— এই চারটি ভাষা খুব ভাল করে রপ্ত করেছিলেন। অতঃপর তাঁর সাহিত্য এবং সঙ্গীতচর্চার ক্ষেত্র প্রসারিত হয়। 

বাবার মৃত্যুর পরে রামপ্রসাদ কেরানির কাজ নেন। হিসাবের খাতায় ভক্তিগীতি লিখতেন। নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তাঁর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন, রামপ্রসাদকে বিনা কর-এ ১০০ একর জমিও দান করেছিলেন। রামপ্রসাদ তঁার বিখ্যাত কাব্য ‘বিদ্যাসুন্দর’ কৃষ্ণচন্দ্রকে উৎসর্গ করেন। বাংলার ঐতিহ্যবাহী ধারা বাউল ও বৈষ্ণব কীর্তনের সুরের সঙ্গে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রাগরাগিণীর সংমিশ্রণে তিনি এক নতুন সুরের সৃষ্টি করেন, যা ‘রামপ্রসাদী’ সুর নামে প্রচলিত। 

এই সুরে পরবর্তী তিন শতাব্দী গান রচিত হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও নজরুল ইসলামও রামপ্রসাদী সুরে গীতিরচনা করেছেন। 

তাঁর গানে কেবল ভাবাবেগই ছিল না, ফুটে উঠেছিল ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের ছোঁয়া, মানুষের আর্থিক দুরবস্থা ও গ্রামীণ সংস্কৃতির অবক্ষয়ের কথা। রামপ্রসাদ সেনের বহু জনপ্রিয় গানের মধ্যে একটি হল, ‘মন রে কৃষিকাজ জানো না, এমন মানবজমিন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা।’ আজকের দিনে মানবসম্পদ উন্নয়নের প্রেক্ষিতেও এমন ধারণা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। 

নাথপন্থী

ভাস্কর দেবনাথ: কিছু দিন আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকার হিন্দু পূজারি ব্রাহ্মণদের জন্য এক হাজার টাকা ভাতা ঘোষণা করেছে। এই বাংলা তথা ভারতে এমনও সম্প্রদায় রয়েছে, যা সুদীর্ঘ কাল ধরে ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। নাথপন্থী সম্প্রদায়ের কত মঠ-মন্দির যে বেহাত হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকে ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আন্দোলনের ফলস্বরূপ বৌদ্ধ ধর্ম, জৈন ধর্ম সমাজে প্রতিষ্ঠা পেল। সেই সময়ে বঙ্গদেশে পাল রাজারা বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করলেও ব্রাহ্মণ্যবাদী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ধর্মাচরণে কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেননি। বরং অনেক ক্ষেত্রে সাহায্য করতেন। 

কথিত আছে, কালীঘাটের মা কালীর প্রতিষ্ঠা করেন নাথযোগী চৌরঙ্গীনাথ। হুগলির মহানাদে আছে জটেশ্বরনাথ শিবমন্দির, যেখানে আজও নাথপন্থী সেবায়েতগণ পরম্পরা মেনে পূজা করে আসছেন। নাথ সাধকেরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করেছিলেন। আজও বঙ্গের অনেক স্থানে নাথ-যোগী দাদা গুরু মৎস্যেন্দ্রনাথ ‘মাছলন্দি পির’ নামে পূজিত হন। নিরাকার নিরঞ্জন এবং ধর্ম ঠাকুরের মিশ্রণের ফল হিসেবে উঠে এসেছিল লোকায়ত গ্রাম্য দেবতা ‘পঞ্চানন্দ’, যিনি পরবর্তীতে মহাদেবের সঙ্গে মিলে গিয়েছেন। মধ্যযুগের সমন্বয়ের এই আবহে ধর্মঠাকুর বা পঞ্চানন্দ দেবতার পূজারি হিসেবে নাথ-যোগী সেবায়েতদের গ্রহণযোগ্যতা ছিল সমাজের সর্বস্তরে। পূজার মন্ত্রেও ব্রাহ্মণ্যবাদী ছোঁয়া ছিল নামমাত্র। বরং নির্দ্বিধায় যবন শব্দ স্থান করে নিয়েছিল পূজামন্ত্রে। 

আজকাল দলিত সাহিত্য চর্চা এসেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। চর্যাপদের যুগ থেকেই এই নাথপন্থী সম্প্রদায়ের সাহিত্য সাধনার খবর মেলে। মীননাথকে ‘বাংলা ভাষার প্রথম কবি’ বলেছেন বিশিষ্ট সাহিত্য সমালোচক ড. শহিদুল্লাহ। কল্যাণী মল্লিকের সুবৃহৎ গবেষণাধর্মী নাথ সম্প্রদায়ের ইতিহাস, দর্শন ও সাধনপ্রণালী বইতে নাথ সম্প্রদায়ের নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে। নাথ ধর্মের বিকাশ বঙ্গদেশ থেকেই। আজ এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দিকে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া দরকার। 

মানুষই বড়

 পৃথা কুন্ডু: তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে অজয় করের পরিচালনায় সপ্তপদী মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬১ সালের অক্টোবরে। এ বছর ৬০ বছরে পা দিল ছবিটি। শুধু একটি জনপ্রিয় কাহিনিচিত্র হিসেবেই নয়, এই ছবি স্মরণীয় বর্ণবিদ্বেষ-বিরোধী বার্তার জন্য। সাহেব-মেমরা বাঙালি আবাসিক ছাত্রদের পড়াশোনার অসুবিধেকে অগ্রাহ্য করে তারস্বরে ‘অন দ্য মেরি গো রাউন্ড’ গাইতে থাকলে, খোল-করতাল সহযোগে ‘এ বার কালী তোমায় খাব’ গেয়ে জবাব দিতে ভোলে না কৃষ্ণেন্দু আর তার বন্ধুরা। হাসি-তামাশার আঙ্গিকে উপস্থাপিত হলেও, এই সব দৃশ্যে প্রতিবাদের স্বর চিনে নিতে অসুবিধা হয় না। কলেজের অনুষ্ঠানে সেই ‘ব্ল্যাকি’ কৃষ্ণেন্দুর সঙ্গেই ওথেলো নাটকে অভিনয় করতে হয় রিনাকে। মনে রাখতে হবে, ওথেলো নাটকের বার্তা কিন্তু বর্ণবিদ্বেষকে ঘিরেই। 

ছবিতে শেষ পর্যন্ত জন্মপরিচয়, ধর্ম নয়, মানুষই বড় হয়ে ওঠে। শেষে গির্জা-সঙ্গীতের সঙ্গে দূরে মিলিয়ে যায় চরিত্র দু’টি, কিন্তু এখানে গির্জা থেকে ভেসে আসা সুর কোনও বিশেষ ধর্মের প্রতীক নয়, বরং তা অনেক বেশি করে হয়ে ওঠে মনুষ্যত্বের, ভালবাসার চিরন্তন সঙ্গীত। আবহে অসামান্য কাজ করেছেন সঙ্গীত পরিচালক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। কৃষ্ণেন্দু যখন ধর্মান্তরিত হয় আর রিনা তাকে প্রত্যাখ্যান করে, আবহে মন্দিরের ঘণ্টা মিশে যায় গির্জার ঘণ্টায়। এই সুরেই যেন বাণীরূপ পায় ছবির মূল কথাটি— “মানুষের মধ্যে যে জীবন, সে যেখান থেকেই সৃষ্টি হোক, সেখানে ব্রাহ্মণ নেই, চণ্ডাল নেই, হিদেন নেই। সবার মধ্যে, সমান মহিমায় ভগবান আত্মপ্রকাশের জন্য ব্যাকুল।” আজকের দিনেও সমাজ, ধর্ম, জন্ম, কর্ম— সমস্ত দ্বন্দ্বের ঊর্ধ্বে এই মনুষ্যত্বের, সম্প্রীতির বোধ একই রকম প্রাসঙ্গিক।

এই ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে বিএফজেএ পুরস্কার পেয়েছিলেন উত্তমকুমার, আর সুচিত্রা সেনও পেয়েছিলেন মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। সর্বোপরি, জাতীয় স্তরে এই ছবিটি পেয়েছিল বাংলা ভাষায় ‘দ্বিতীয় সেরা’ কাহিনিচিত্রের মর্যাদা।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2024
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd