শ্যামনগর সংবাদদাতা: শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন কৈখালী এলাকায় কার্পেটিং সড়ক নির্মাণের অজুহাতে ফসলী জমি থেকে বোরিং করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সড়ক নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারের পক্ষে পাতড়াখোলা গ্রামের নুরুল ইসলাম ও আনছার আলী লোকজন নিয়ে টানা পনের দিন ধরে অবৈধভাবে প্রায় দেড় লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করছে। ভাঙন কবলিত উপকুলীয় জনপদ থেকে বালু উত্তোলনের ঘটনায় মারাত্বক পরিবেশ বিপর্যয়ের শংকা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।
স্থানীয় সুত্রে যায় জাদা গ্রামে পাশের আমন ধানের ক্ষেত লাগোয়া পুকুরে দুটি ড্রেজিং মেশিন স্থাপন করে জমির তলদেশ হতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উত্তোলনকৃত বালু মুলত কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণের জন্য ‘স্যান্ড ফিলিং’ এর কাজে ব্যবহার করছে সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় এস আর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সীমান্তবর্তী কালিন্দি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত দুই হাজার নয় শত মিটার রাস্তা ভরাটের কাজে একই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হবে বলেও জানান তারা।
দীর্ঘ দিন ঝুলে থাকার পর ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এসে এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে সন্ন্যাসী ডাক্তারের বাড়ি হয়ে সীমান্তবর্তী কালিন্দি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ইটের সোলিংকৃত রাস্তার কার্পেটি এর কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে দুই হাজার নয় শত মিটার রাস্তার কাজ চলতি অর্থ বছরে সম্পন্নের নির্দেশনাও রয়েছে স্থানীয়রা জানান বক্স কাটিং এর কাজ সম্পন্ন করেই স্যান্ড ফিলিং এর জন্য দুর-দুরান্ত থেকে প্রয়োজনীয় বালু না এনে পাশের ফসলী জমির প্রায় সত্তর ফুট গভীর থেকে ড্রেজার মেশিনের সহায়তায় বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
আহম্মদ আলী সহ কয়েক গ্রামবাসী জানান, ঠিকাদারের নিকট থেকে পাতড়াখোলা গ্রামের নুর ইসলাম ও আনছার আলী ঐ রাস্তার স্যান্ড ফিলিং এর কাজ সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়েছে। সাড়ে ছয় টাকা ঘন ফুট হিসেবে চুক্তি মোতাবেক তারা রাস্তার কাজের জন্য বালু সরবরাহের দায়িত্ব নিলেও এখন পাশের জমি থেকে বালু উত্তোলন করছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন কয়েকজন জমির মালিককে দেড় টাকা ফুট হিসেবে অগ্রীম টাকা পরিশোধ করে নুর ইসলাম ও আনছার আলী নিজেদের লোকজন নিয়ে দিন রাত ধরে দু’টি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। কয়েকজন জমির মালিক টাকা নিতে সম্মত না হওয়ায় রাস্তার কাজে বালু উত্তোলনের সুযোগ দিতে তাদের নানাভাবে চাপ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন।
আবুজার রহমানসহ কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, সুন্দরবন সংলগ্ন ও ভারত সীমান্তবর্তী এলাকাটি অত্যন্ত দুর্যোগ প্রবণ। বাঁধ ও নদী ভাঙন এখানে নিত্যকার ঘটনা। এমতাবস্থায় ফসলী জমি থেকে বোরিং করে বালু উত্তোলনের কারনে সামনের দিনগুলোর কথা ভেবে তারা রীতিমত শংকিত।
স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সবাইকে ম্যানেজ করেই সেখানে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলন নিয়ে কথা বললে তাদেরকে নানাভাবে হয়রানীরও হুমকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন।
সড়ক নির্মাণ কাজের দায়িত্ব প্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্নধার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্থানীয় নুর ইসলাম ও আনছার আলী বালু সরবরাহের দায়িত্ব নিয়েছে। তবে কোথা থেকে বালু দিচ্ছে বা দিবে তা আমার জানা নেই।
২
পারুলিয়ায় মিল কামালের ছেলে বাবু’র বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগেমামলা দায়ের
বিশেষ প্রতিবেদক: দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া কামালের (মিল কামাল) ছেলে বাবুর বিরুদ্ধে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।কামালের ছেলে বাবুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করে ঐ নারী বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সাতক্ষীরায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ০৩ এর ৯ (১) ধারায় মামলা দায়ের করেছে। (না: শিশু: পিটিশন ৪০০/২০ )। ইতোমধ্যে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করেছে এবং বাদী মিতা খাতুনের (ছদ্মনাম) মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে।
বাদী মিতা খাতুন (ছদ্মনাম)এর ভাষ্যমতে, আমি ২০১৫ সালে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানে গৃহকর্মীর কাজে যাই এবং ২০১৭ সালে দেশে ফিরে এসে বাড়িতে ছাগলের খামার পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসতে থাকাকালীন পারুলিয়ার মিল কামালের ছেলে বাবুর সাথে ফোন সূত্রে আমার পরিচয় হয়। এরূপে আলাপ-আলোচনা থাকাকালে বাবু প্রথমে প্রেম নিবেদন করে ও পরে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। বাবুর বিয়ের প্রস্তাবে নতুন জীবনের আশ্বাসে আমি রাজি হই। তখন থেকে বাবু বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে দৈহিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে এবং আমার সাথে আমার পিত্রালয় এসে একাধিকবার দৈহিক সম্পর্ক করে। আমি বাবুকে বিবাহ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে বাবু বিবাহ করার শর্তে আমার কাছে ২ লক্ষ টাকা দাবি করে। আমি ওমানে থাকাকালে জমানো টাকা হতে বাবুকে ২ লক্ষ টাকা দেই। তারপর থেকে বাবু আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। আমি জানতে পেরেছি বাবু আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেছে।
বাদী আরও জানান, বাবু ও তার পিতা স্থানীয় প্রভাবশালীদের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য ও মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করছে। আমি সুবিচার পাবার আশায় বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল সাতক্ষীরায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ০৩ এর ৯(১) ধারায় মামলা করেছি।
ইতোমধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আমার বাড়িতে এসে তদন্ত করে গেছে এবং আমার মেডিকেল পরীক্ষা করেছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে ধর্ষণ করায় বাবুর বিরুদ্ধে কঠিন শাস্তির জন্য আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
Leave a Reply