মশাল ডেস্ক: মার্শাল মনি ১৯৬৯-৭০ মেয়াদে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি ছিলেন। ছাত্রলীগের সদস্যদের দার্শনিক-আদর্শিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক-সাংগঠনিক চেতনার উন্নতর পর্যায়ে টেনে তোলা এবং মাঠের আন্দোলন ও সংগঠনের কাজ হাতে কলমে তিনি অগ্রণী ভুমিকা পালন শেখানোর ক্ষেত্র তিনি অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছেন। তিনি রাজনৈতিকভাবে জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম ও স্বাধীনতা সংগ্রামে অগ্রসর সংগঠক ও নেতা ছিলেন। সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক, কাজী আরেফ আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত স্বাধীনতার নিউক্লিয়াসে চতুর্থ ব্যক্তি হিসাবে তাকে অন্তর্ভক্তি নিশ্চিত ছিল। কিন্তু অজানা কারণে তাকে নিউক্লিয়াসের সর্বোচ্চ ফোরামে অন্তর্ভুক্ত করা ন হলেও সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক, কাজী আরেফ তার মতামত ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন না। তিনি ঢাকা ও জেলা পর্যায়ে নিউক্লিয়াসের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে মুজিববাহিনীর উত্তরাঞ্চল কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন। কমান্ডার ছিলেন সিরাজুল আলম খান। স্বাধীনতা পতাকা তৈরি, স্বাধীনতার ইস্তেহার প্রণয়নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। ছাত্রলীগের যে কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভায় শহীদ স্বপন চৌধুরী উত্থাপিত স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রস্তাব গৃহীত হয় সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন মার্শাল মনি। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে সাথে সমাজতান্ত্রিক রাজনৈতিক চেতনার দ্বারা পরিপুষ্ট করতে তিনি অগ্রণী ভুমিকা পালন করেন। তিনি ছাত্রলীগে সমাজতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ ঘটান। তিনি দৈনিক গণকন্ঠের সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
জাসদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন। তিনি বিপ্লবী গণবাহিনীর উত্তরাঞ্চলের পলিটিকাল কমিশার ছিলেন। তিনি সকল গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনে জাসদের বলিষ্ঠ ভুমিকা পালনের জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
মার্শাল মনি রাজনীতি ও দলে সার্বক্ষণিক সক্রিয় থাকা অবস্থাতেও প্রচারবিমুখ ছিলেন। একান্ত বাধ্য না হলে তিনি মঞ্চে উঠতেন না, ভাষণ দিতেন।
রাজনৈতিক সাংগঠনিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি পড়ালেখা ও জ্ঞান চর্চাকে গুরুত্ব দিতেন এবং সক্রিয় দলীয় রাজনীতি থেকে অবসর নেবার পরও তার জ্ঞান সাধনা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি ‘বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় সমাজতন্ত্র’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ লিখেছেন। এই গ্রন্থে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর দার্শনিক-আদর্শিক-রাজনৈতিক অবস্থান, ছাত্রলীগ, জাসদ গঠণের ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও অনিবার্যতা আলোচনা করেছেন। এ ছাড়াও তিনি বেশ কয়েকটি পুস্তিকা, অসংখ্য প্রবন্ধ, কয়েকটি ছোট গল্প লিখেছেন।
মার্শাল মনি আত্মপ্রচার বিমুখ একজন জ্ঞান সাধক।
Leave a Reply