২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ সোমবার (৩১ আগস্ট) বেলা ১১টায় জেলা শহরের শহীদ আলাউদ্দিন চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহম্মেদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ সাহিদ উদ্দিন, আইন-বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওসমান গণি, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ শহাদাত হোসেন, দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি প্রমুখ।
সাবেক দফতর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তারা জানান, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সকাল ১০টায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কলোরোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের হিজলি গ্রামের এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে যশোরে যাওয়ার পথে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে বিএনপি ও যুবদলের নেতাকর্মীরা যাত্রীবাহী একটি বাস রাস্তার ওপর আড় করে গতি রোধ করে তার গাড়ি বহরে হামলা চালায়। জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিব ও বিএনপি নেতা রঞ্জুর নির্দেশে ওই হামলা হয়। হামলায় তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিন, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী সাথী ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে এক ডজন দলীয় নেতাকর্মী আহত হন।
তারা জানান, এ ঘটনায় কলারোয়া থানা মামলা না নেওয়ায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদী হয়ে যুবদল নেতা আশরাফ হোসেন, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭০-৭৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিলেও তৎকালীন কলারোয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ২০০৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঘটনা মিথ্যা বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে নারাজির আবেদন, জজ কোর্টে রিভিশন খারিজ হয়ে গেলে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট বাদী এ আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে আপির করেন। ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই আপিল মঞ্জুর হয়। হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে নতুন করে মামলার কার্যক্রম শুরুর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করা হয়।
নেতাকর্মীদের বক্তব্যে আরও জানা যায়, পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কলারোয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান জেলা বিএনপি’র সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তিনটি ভাগে ভাগ হয়ে (এসটিসি ২০৭/১৫, এসটিসি ২০৮/১৫ দু’টি ও টিআর-১৫১/১৫) মামলাটির বিচার চলতে থাকে। আসামি পক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা তিনটির কার্যক্রম যথাক্রমে ২০১৭ সালের ৯ আগস্ট ও ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট স্থগিত করেন। অবিলম্বে উচ্চ আদালতের দেওয়া মামলা তিনটির কার্যক্রমের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিম্ন আদালতে বিচার কার্যক্রম শুরু করে দ্রুত নিষ্পত্তির আহ্বান জানান মানববন্ধনকারীরা।
Leave a Reply