আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্ব যখন কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিনের অপেক্ষায় রয়েছে, ঠিক সেই সময়ে করোনা মোকাবিলায় প্রযুক্তিনির্ভর অ্যান্টিবডি-থেরাপিভিত্তিক এক নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির কার্যকারিতা নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন বিজ্ঞানীরা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, করোনা প্রতিরোধে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি থেরাপির সাফল্যের ব্যাপারে ‘অনেকটাই নিশ্চিত’ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ও হোয়াইট হাউসের করোনা টাস্কফোর্সের সদস্য ড. অ্যান্থনি ফাউচি।
জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোস জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র অল্পদিনের মধ্যেই করোনাভাইরাসের নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির ঘোষণা দিতে পারে। এবিসি নিউজে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি আভাস দিয়েছেন, করোনা প্রতিরোধে প্রযুক্তিনির্ভর থেরাপিভিত্তিক এক নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির ঘোষণা দিতে যাচ্ছে হোয়াইট হাউস।
রয়টার্সের সোমবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যানসারের মতো রোগের চিকিৎসায় যেমন করে বিভিন্ন প্রযুক্তিভিত্তিক থেরাপি দেওয়া হয়; তেমন করেই করোনা চিকিৎসার জন্য একটি থেরাপিভিত্তিক ব্যবস্থা উন্নয়নের কাজ চলছে। এই পদ্ধতিতে সুনির্দিষ্ট ভাইরাসকে (কোভিড ১৯) প্রতিরোধে সক্ষম কৃত্রিম অ্যান্টিবডি তৈরি করে তা থেরাপির মধ্য দিয়ে মানুষের শরীরে প্রয়োগ করা হবে।
রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিজ্ঞানীরা এই মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি উন্নয়নে কাজ করছেন। ড. ফাউচি বলেছেন, এই অ্যান্টিবডি যে কোভিড ১৯ প্রতিরোধে সক্ষম হবে সে ব্যাপারে তিনি ‘অনেকটাই নিশ্চিত’।
একটি ভাইরাস যখন মানুষের শরীরের প্রাথমিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে দিতে সক্ষম হয়, তখন প্রাকৃতিকভাবেই শরীরে অভ্যন্তরেরই সুনির্দিষ্ট কোনও জায়গা থেকে প্রতিরোধ তৈরি হয়। এটি হয় শরীরে থাকা প্রতিরক্ষামূলক প্রোটিন কিংবা অ্যান্টিবডির কারণে। রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন বিজ্ঞানীরা করোনা মোকাবিলায় যে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডির উন্নয়ন ঘটাচ্ছেন, তা আসলে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষামূলক প্রোটিনেরই অনুলিপি হবে।
করোনার থাবায় বিপর্যস্ত সারা বিশ্ব। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এই মারণভাইরাসে। এখনও কার্যকর কোনও চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবন করা যায়নি। বিশ্বে ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দৌড়ে আছে ১৭৩টি উদ্যোগ। এর মধ্যে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় পৌঁছাতে পেরেছে তিনটি, তবে কোনও ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত সাফল্যের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রাশিয়া তাদের একটি ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত সাফল্য দাবি করলেও তা নিয়ে সংশয় রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। এমন পরিস্থিতিতে নতুন এক চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে আশাবাদের কথা শোনা গেলো।
অবশ্য কোভিড-১৯ চিকিৎসায় অ্যান্টিবডির ভূমিকা এখনও প্রশ্নাতীত নয়। বিজ্ঞানীরা এখনও এ নিয়ে কাজ করছেন। তবে ওষুধ প্রস্তুতকারীরা আত্মবিশ্বাসী যে, যথাযথ অ্যান্টিবডি ব্যবহার করতে পারলে এই পদ্ধতিতে নিশ্চিত সাফল্য আসবে। রিজিনেরন ফার্মাসিউটিক্যাল-এর এক্সিকিউটিভ ক্রিস্টস ক্যারাটসস রয়টার্সকে বলেছেন, ‘অ্যান্টিবডি সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্ষম।
Leave a Reply