সুপরিকল্পিতভাবে পাট শিল্পকে লোকসানি খাতে পরিণত করা হয়েছে: জাসদ


পাটখাতের পুনর্জাগরণের চেষ্টার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকলগুলো বন্ধের সিদ্ধান্তকে ‘আত্মঘাতী’ হিসেবে বর্ণনা করে তা পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।
দলটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার রোববার এক বিবৃতিতে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব পাটকল গুলোকে ‘এন্টারপ্রাইজ’ হিসাবে পরিচালনারও প্রস্তাব দিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রধানমন্ত্রীর উৎসাহে যখন পাটের জিনোম আবিস্কৃত হয়েছে, পাটের পুনর্জাগরণের প্রচেষ্টা চলছে, তখন পাটকল বন্ধ করে দেওয়া এবং পাট অর্থনীতিকে পরিত্যক্ত করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।”
সরকার লোকসানে থাকা ২৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করে প্রায় ২৫ হাজার কর্মীকে ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের’ মাধ্যমে অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানানোর পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের মাধ্যমে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় ‘দ্রুত’ এ পাটকল গুলো সচল করার পরিকল্পনার কথা বলেছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। পিপিপির উদ্যোগের সমালোচনা করে জাসদের বিবৃতিতে বলা হয়, “আদমজী বন্ধ হবার পর সেখানে আধুনিক পাট কারখানা গড়ে তোলার কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি, আদমজীর জমিতে শিল্প প্লট করে আর কারখানার সবকিছু স্ক্র্যাপ করে জমি আর স্ক্র্যাপের হরিলুট হয়েছে। পিপিপির অধীনে সরকারের পাটকলগুলো চালু করার সদিচ্ছাও আদমজীর মত হরিলুটের খেলায় হারিয়ে যাবে।”
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক জাসদের এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাট শিল্পকে লোকসানি খাতে পরিণত করার দায় শ্রমিকের না বরং যখন যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের। ‘অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে’ পাট শিল্পকে লোকসানি খাতে পরিণত করা হয়েছে।
“গত ৪৪ বছরে পাটশিল্পে পুঞ্জীভূত লোকসান ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, ব্যাংক ঋণের পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বিমান বা বিদ্যুতের কুইক রেন্টালসহ বড় লোকসানি খাতে প্রতি বছর যে পরিমাণ লোকসান বা অর্থনীতির রক্তক্ষরণ হচ্ছে তা পাটশিল্পের ৫০ বছরের পুঞ্জিভূত লোকসানের চাইতেও বেশি।”
পাটকল বন্ধ করে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে যে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, তা থেকে মাত্র ১ হাজার ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন এবং ২৫ হাজার শ্রমিককে মাসে ২৫ হাজার টাকা করে মজুরি দিয়ে লাভজনকভাবে ‘পরিচালনা করা সম্ভব’ ছিল বলে মনে করেন জাসদ নেতারা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *