আশেক-ই-এলাহী : সাতক্ষীরার মানুষ মনে করে সরকার প্রধানের হস্তক্ষেপ পারে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা জনপদের উন্নয়নের চাকা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে। বার বার দুর্যোগে বিপযস্ত জনপদটি হয়ে পড়েছে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা অঞ্চল। যার প্রধান অনুসর্গ হয়ে আছে উপক’লীয় বাঁধের সংস্কার নিয়মিত না হওয়ায়। জীর্ণবাধ বছওে কয়েকবার ভেঙ্গে শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার কয়েক লক্ষ মানুষের বাসকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। তাই এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বার বার প্রধানমন্ত্রির হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে স্থায়ী টেকসই বাধ নির্মানের।
গত ২০ মে উপক’লে আঘাত হাতে আমফান। আমফানের ফলে বিধ্বস্থ হয় শ্যামনগর ও আশাশুনির ৫৭ কিলোমিটার ভেড়ী বাধ। পানিতে ভেসে যায় গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুডিগোয়ালীনী, কাশিমাড়ী, প্রতাপনগর, শ্রীউলা, আনুলিয়া, আশাশুনি সদরসহ ১০ টির অধিক ইউনিয়ন। বাধ ভেঙে শত শত কোটি টাকার কৃষি, মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়। মানুষের বসত বাড়ী বিধ্বস্ত হয়। নোনা পানিতে ধ্বংশ হয়ে যায় খাবার ও ব্যবহারের পানির উৎস্য। প্রায় দু মাস শেষ হতে চললেও এখনো আশাশুনির দ ুইউনিয়নের মানুষের বাড়ীতে পানি উঠা বন্ধ হয়নি। অন্যান্য এলাকার মানুষ নিজস্ব উদ্যোগে রিং বাধ করে কোন রকমে নোনা পানি উঠা ঠেকাতে পারলেও সম্পদসব গেছে নষ্ট হয়ে। ২০০৯ সালে আইলার পর থেকে এ অঞ্চলের মানুষ বার বার দাবী তুলেছে স্থায়ী বাধের জন্য। কিন্তু দশ বছরে কোন বাস্তব সম্মত কাজ হয়নি। বাস্তবে ২০০৯ সালে যে এলাকা গুলো ভেঙ্গে ছিল, এবারও অধিকাংশ সেই একই এলাকা। ভেড়ী বাধ ভাঙা একটি সাধারন বিষয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় সরকার বিশেষ করে ইউনিযন পরিষদেও পক্ষ হতে বার বার সমস্যাটি উপজেলা পরিষদের মিটিংএ তুলে ধরা হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডেও পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়নি।
উপক’লের ভেড়ী বাধ তৈরী, মেরামতের একমাত্র অথরিটি পাই উন্নয়ন বোর্ড। অন্যকোন দপ্তর এখানে কোন কাজ করতে পারে না। এমনকি স্থানীয় ইউপি, যাদেরকে বেশী কৈফিয়াত দিতে হয় স্থানীয় জনগনের কাছে, তাদেরও বাধে হাত দেওয়ার সুযোগ নেই। এই সুযোগ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোড এর একশ্রেনীর কর্মকর্তারা সাধারন মানুষকে জিম্মি করে অবৈধ্য সুযোগ গ্রহন করে থাকে। পাউবো এর বিরুদ্ধে সীমাহীন অনৈক ভাবে অর্থ আত্মসাদের অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় মানুষদের। অন্যদিকে পাউবোর স্থানীয় অফিসের সহযোগিতায় চিংড়ী প্রকল্প মালিকরা যথেচ্ছার ভাবে উপক’লীয় বাধকে নিজের ঘেরের রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা, প্রয়োজনে অপ্রয়োজেনে ভেড়িবাধ কাটা, ফুটো করে, প্রকল্পের নোনা পানি অরিকল্পিত ভাবে নিস্কাশন করা ইত্যাদিও ফলে বাধ ও পরিবেশ ঝুকি তৈরী হয়।
দুর্যোগ ও সমন্বয়হীন উন্নয়ন কর্মকান্ড সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষের জীবন জীবিকা ও প্রশাসনিক উন্নয়ন ব্যবস্থাপনাকে অনিশ্চিত করে ফেলেছে। ফলে প্রতিবছর একব্যপক সংখ্যক কর্মবঞ্চিত কর্মক্ষম মানুষ এলাকা থেকে মাইগ্রেট করছে। এলাকাতে নারী প্রধান পরিবার যেমন বাড়ছে, তেমনি শিশু, বৃন্ধ ও প্রতিবন্ধিদের জীবন ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। এহেন বাস্তবতায় স্থানীয় মানুষের অভিমত, স্থায়ীত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্য মাত্রা (এসডিজি) অর্জনের লক্ষ্যে টেকসই ভেড়ী বাধসহ এ জনপদকে বাস যোগ্য রাখতে সরকার প্রধানের আশু হস্তক্ষেপ জরুরী। স্থানীয় মানুষ মনে করে উপকূলের মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সরকার প্রধান কার্যকর ভুমিকা রাখবেন।
Leave a Reply