স্বপ্ন অপূর্ণ থাকার হতাশায় চে গুয়েভারারের জন্মভিটা বিক্রি করছেন মালিক

কিংবদন্তী বিপ্লবী, মার্কসবাদী আর্নেস্তো চে গুয়েভারার লাতিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে জন্মগ্রহণ করেন। আর তার সেই জন্মভিটা বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। 

চে গুয়েভারার ওই জন্মভিটার বর্তমান মালিক আর্জেন্টাইন ব্যবসায়ী ফ্রান্সিসকো ফাররুজা। তিনি জানান, ২০০২ সালে তিনি রোজারিও শহরকেন্দ্রে নিও-ক্ল্যাসিকাল ধাঁচের একটি ভবনে ২ হাজার ৫৮০ স্কয়ার ফিটের ওই অ্যাপার্টমেন্টটি কেনেন। তার ইচ্ছা ছিল সেখানে একটি সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলার। কিন্তু সে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। এখন তিনি জায়গাটি বিক্রি করে দিতে চান। 

চে গুয়েভারাকে ভালোবেসে এই বাড়িটি তিনি কিনেছিলেন। তার অনেক বড় স্বপ্ন ছিল বাড়িটিকে নিয়ে। কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। আর বর্তমানে তার অর্থনৈতিক অবস্থাও ভালো যাচ্ছে না। এছাড়া স্থানীয় সরকারের কোনো ধরনের সহযোগিতা পাননি তিনি। সেসব হতাশা থেকেই এই বাড়িটি তিনি বিক্রি করে দিতে চান।

চে গুয়েভারার বাড়ি

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে আর্জেন্টাইন ব্যবসায়ী ফ্রান্সিসকো ফাররুজা জানান, তারা কিউবা সরকারকে এই বাড়িটি কেনার জন্য জানান। তারা চেয়েছিলেন ওই সম্পত্তি তাদের কাছে পৌঁছে দিতে। কিন্তু কারও কাছ থেকে তিনি সহযোগিতা পাননি। তাই তিনি এই বাড়িটি বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। তবে কি পরিমাণে অর্থে তিনি এই ভিটাটি বিক্রি করতে চান- সে সম্পর্কে জানানো হয়নি।

গত কয়েক বছরে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি এই অ্যাপার্টমেন্টটি দেখতে এসেছেন। এর মধ্যে উরুগুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসে পেপে মুজিকা ও কিউবার প্রয়াত কিংবদন্তি বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর সন্তানেরা ছিল। আরও এসেছিলেন চে’র অন্যতম বন্ধু আলবার্তো গ্রান্দোস। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে স্বনামধন্য অনেকেই এ জায়গাটি পরিদর্শনে যান। দেখে আসেন বিশ্ব কাঁপানো বিপ্লবী, মার্কসবাদী  আর্নেস্তো চে গুয়েভারারের বাড়ি।

এই বাড়িটিতেই চে গুয়েভারা ১৯২৮ সালে উচ্চ মধ্যবিত্ত একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের মানুষের দারিদ্র্য ও ক্ষুধা তার মনে গভীর দাগ কাটে। অর্থনৈতিক বৈষম্য গুঁড়িয়ে মানুষকে মুক্তি দিতে বেছে নেন বিপ্লবের পথ।

১৯৫৩-৫৯ সালে কিউবায় এক নায়ক ফুলজেনসিও বাতিস্তাকে উৎখাতে ভূমিকা পালন করেন চে। দক্ষিণ আমেরিকাসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই বিপ্লব ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। তবে ১৯৬৭ সালে বলিভিয়ায় গেরিলা যুদ্ধকালে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে প্রাণ হারান তিনি।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *