কোভিড-১৯ এর থাবায় প্রাথমিক শিক্ষার ৩১৮ জন আক্রান্ত । পাঁচজন মৃত্য

মহামারি করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর ভয়াল থাবায় প্রাথমিক শিক্ষার ৩১৮ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ইতোমধ্যেই পাঁচজন শিক্ষক ও একজন কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া এই মরণব্যাধির বিষাক্ত ছোবল থেকে এখন পর্যন্ত ৪৮ জন সুস্থ হয়েছেন।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে গতকাল সোমবার (২২ জুন) একদিনে দুই শিক্ষক মারা গেছেন। এদিন নতুন করে ২৩ জনের করোনা শনাক্ত হলেও সুস্থ হয়েছেন দুই জন।

মঙ্গলবার (২৩ জুন) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) ওয়েবসাইটে করোনা আপডেট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তবে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ শতাধিক বলে দাবি করেছেন শিক্ষক নেতারা। তারা বলেন, অনেকে সামাজিক ভীতির কারণে উপসর্গ নিয়ে বাসায় চুপচাপ থাকছেন, কোনো ধরনের পরীক্ষা করছেন না। এ কারণে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা উঠে আসছে না বলে জানান তারা।

ডিপিই’র তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত প্রাথমিকের ২৭ জন শিক্ষক, ৩৬ জন কর্মকর্তা, ২২ জন কর্মচারী ও ১৩ জন শিক্ষার্থী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জন শিক্ষক ও একজন কর্মকর্তা মারা গেছেন। আর এ পর্যন্ত ৪৮ জন সুস্থ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৪ জন শিক্ষক, ৫ জন কর্মকর্তা, কর্মচারী দুইজন ও ৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

দেখা গেছে, আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১১৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন, চট্টগ্রামে ৮৬ জন, খুলনায় ১০ জন, বরিশালে ১৮ জন, সিলেটে ৩৪ জন, রংপুরে ১৭ জন এবং ময়মনসিংহে ১১ জন রয়েছেন।

জানা গেছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে অন্তত ৫০ জনের অবস্থা মুমূর্ষু। নিজ উদ্যোগেই নানাভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। নিম্ন বেতনের প্রাথমিক শিক্ষকরা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বড় ধরনের সংকটে পড়েছেন। পরিবারের সদস্যরাও কেউ কেউ আক্রান্ত হয়েছেন।

আক্রান্ত শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শিক্ষকদের নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে তাদের কোনো খোঁজ-খবর নেয়নি। তবে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আক্রান্তদের নানা ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। কারো চিকিৎসকের পরামর্শ লাগলে সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। যেসব শিক্ষক কোভিড-১৯ আক্রান্ত, তাদের বেশিরভাগই নিজের বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। আর হাসপাতালে ভর্তি আছেন কয়েকজন। তবে সম্প্রতি প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কোভিড-১৯ আক্রান্তের তথ্য সংগ্রহ কাজ শুরু করে ডিপিই। প্রতিদিন এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে ২৪ ঘণ্টা পরপর ওয়েবসাইটে আপডেট করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ বলেন, প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। সারাদেশে প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষক কোভিড-১৯ আক্রান্ত রয়েছে। অনেক শিক্ষক করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না, এ কারণে সঠিক সংখ্যাটাও জানা যাচ্ছে না। অনেকে ঘরে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন, সামাজিক হয়রানির ভয়ে বাইরে যাচ্ছেন না।

অন্যদিকে ডিপিই’র মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা কেউ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে তার তথ্য সংগ্রহ করে আমাদের ওয়েবসাইটে যুক্ত করা হচ্ছে। তার চিকিৎসার জন্য সার্বিক সহায়তা দিতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *