ন্যাশনাল ডেস্ক: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, স্বাস্থ্য সচেতনতার মাধ্যমে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব। আমাদেরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রাদুর্ভাব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সচেতনতার বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। করোনাভাইরাসের মহামারিতে পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে। অথচ আমাদের দেশের স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও সরকার সাহসিকতার সাথে এই করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলা করে যাচ্ছে।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) উদ্যোগে অ্যাম্বুলেন্স সেবা কার্যক্রম উদ্বোধনকালে অতিথি হিসাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজের) সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক জিহাদুর রহমান জিহাদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হাবীবুর রহমান, অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক বাদল মাদবর এসময় বক্তব্য রাখেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের সমালোচনা করেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ইউরোপসহ আমেরিকা রাশিয়ায় লাখ লাখ মানুষ সনাক্ত হচ্ছে, আবার হাজার হাজার মানুষ সেখানে প্রাণ হারাচ্ছে। ইতালিতে দেড় লক্ষ সনাক্ত হয়েছে সেখানে ২৯ হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে। বাংলাদেশে এক লাখ ৩০ হাজার মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমন ধরা পড়েছে, মৃত্যুর সংখ্যা দেড় হাজার। মৃত্যুর হার বাংলাদেশে ১.২৩ শতাংশ। এটার মধ্য দিয়ে বুঝা যাচ্ছে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসকে আমরা কিভাবে মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দায়িত্বশীল ভূমিকায় ব্যর্থ হওয়ায় বিএনপিকে মানুষ আগামী দিনে আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসকে নিয়ে রাজনীতি নয়। আমরা ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ে দেখেছি, দুই লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করেছে , কোন ধরণের সাপোর্ট সরকারিভাবে দেয়া হয়নি, পশুপ্রাণী ও মানুষ এক সঙ্গে দাফন করা হয়েছে। একইভাবে গণকবর দেওয়া হয়েছে, অথচ বর্তমানে বাংলাদেশে সেই রকম অবস্থার ধারেকাছেও নেই।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে মুখরোচক সমালোচনা করে আজকে বাংলাদেশের মানুষকে আতঙ্কিত না করে সঠিক রাস্তায় আমাদের হাঁটতে হবে এবং সরকার যে ব্যবস্থাগুলো নিচ্ছে সেই ব্যবস্থার কোন জায়গায় ত্রুটি আছে, সেই জায়গাগুলো ধরিয়ে দেওয়ার জন্য দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অস্বীকার করার উপায় নাই, যে বাংলাদেশের মানুষের সচেতনতার কিছুটা অভাব আছে। স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার সরকার গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছেন। আজকে সেই জায়গাটিতে অভাব আমরা লক্ষ্য করছি।
এসময় গণমাধ্যম কর্মীদের ছাঁটাই বন্ধ করার জন্য মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদের ইতিহাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরে শেখ হাসিনা ছাড়া এমন গণমাধ্যম বান্ধব নেতা আর আছে বলে আমার মনে হয় না। শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের কথা যেভাবে চিন্তা করেন, সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের কথা চিন্তা করেন। করোনাভাইরাসের এই মহামারীতে তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য প্রণোদনার আওতায় নিয়ে এসেছেন। গত দুই মাস যাবত সরকার এই কর্মহীন মানুষদের পাশে থেকেছেন। অনেকেই অনেক ধরণের আশঙ্কা করেছিলেন, যে এখানে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। কিন্তু বাংলাদেশের গণমাধ্যম সংবাদ পরিবেশন করে যাচ্ছেন এই দুই মাসে এমন একটি সংবাদও প্রকাশ হয়নি, যে সংবাদে সামাজিক অস্থিরতা বাড়বে।
গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য গণমাধ্যম একটি স্তম্ভ। এটাকে দুর্বল করে বাংলাদেশে কখনও উন্নয়ন এবং অগ্রগতি হতে পারেনা, এগিয়ে যেতে পারেনা। বাংলাদেশের এই উন্নয়ন অগ্রগতি গণমাধ্যম তুলে ধরেছে বলেই সমগ্র পৃথিবীতে প্রশংসা হচ্ছে। কাজেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের পাশে আছেন এবং থাকবেন।
Leave a Reply