করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধের কৌশল হিসেবে শ্যামনগর উপজেলার বাদঘাটা, নকিপুর, কাটিবারহলসহ কয়েকটি গ্রামের প্রবেশদ্বারে পাহারা বসানো হয়েছে। গ্রামের বাসিন্দাসহ বহিরাগতদের অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মঙ্গলবার সকাল থেকে স্থানীয়দের উদ্যোগে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়।
বাঁশ ও বেঞ্চ দিয়ে প্রবেশদ্বার আটকিয়ে এসব গ্রামের তরুন ও যুবকরা পালা করে পাহারা দিয়ে বহিরাগতদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করবে বলে জানিয়েছে। একইসাথে গ্রামের বাসিন্দাদের জরুরী সকল কোন প্রয়োজনে সার্বিক সহায়তার করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে উদ্যোগী এসব তরুন।
মঙ্গলবার দুপুরের পর উপজেলা সদরের বাদঘাটা, কাটিবারহল ও নকিপুর এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে। এসব গ্রামে যেয়ে দেখা যায় গ্রামগুলোর প্রতিটি প্রবেশদ্বারে চার থেকে ছয় জন পর্যন্ত অবস্থান করছে। কোন কোন প্রবেশদ্বারে স্বেচ্ছাসেবী তরুনদের পাশাপাশি গ্রাম পুলিশকে পাহারার কাজে সহায়তা দিতে দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে কেউ ঐসব গ্রামে প্রবেশ করতে চাইলে তার নাম পরিচয় জানার পর গন্তব্য জানতে চাওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে মুটোফোনে কথোপকথোনের মাধ্যমে অনেকের প্রয়োজন মিটিয়ে দিচ্ছে পাহার দায়িত্বে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীরা। নকিপুর গ্রামে যেয়ে দেখা যায় প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয়ের জন্য এক বাসিন্দা গ্রামের বাইরে যেতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবীরা নিজেদের সাইকেল নিয়ে তার জরুরী মালামাল ক্রয় করে এনে দিয়েছে।
তরুন ও যুবাদের এমন তৎপরতাকে সমর্থন দিয়ে এসব গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার, শেফালী বেগম ও মিজানুর রহমানসহ অন্যরা জানিয়েছে করোনার এমন ভয়ংকর পরিস্থিতিতে সবাই আতংকের মধ্যে রয়েছে। গ্রামের কিছু ছেলে নিজেদের উদ্যোগে বহিরাগতসহ স্থানীয়দের অপ্রয়োজনীয় চলাচল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে গ্রামের শত শত পরিবারকে সুরক্ষিত রাখার যে চেষ্টা করছে তা প্রশংসনীয়।
তবে শুধু বাদঘাটা কিংবা নকিপুর নয়। বরং মঙ্গলবার দুপুরের পর উপজেলার রমজাননগর ভেটাখালীসহ আরও কয়েকটি এলাকায় গ্রামের প্রবেশদ্বারে স্থানীয়দের উদ্যোগে পাহারা বসিয়ে সামাজিক জনসমাগমের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এবিষয়ে বাদঘাটা গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী আল ইমরান জানায় বহিরাগতসহ স্থানীয়দের অপ্রয়োজনীয় চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসনসহ স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে পরামর্শ করে পাহারা বসানো হয়েছে। নকিপুর গ্রামের আব্দুল আলিম জানায় নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ যাতে অবাধে চলাচল করে স্থানীয়দের ঝুঁকির মধ্যে না ফেলে সেজন্য গ্রামে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
শ্যামনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন এ্যাডভোকেট জহুরুল হায়দার বাবু বলেন, সরকারি ঘোষনা সত্ত্বেও অনেকে অপ্রয়োজনে যত্রতত্র চলাচল করছে। সম্প্রতি ভারত থেকে আসা কিছু অপিরিচিত মানুষ গ্রামগুলোতে আসা যাওয়া করায় বাড়িত সতর্কতার অংশ হিসেবে কিছু তরুনের উদ্যোগে পাহারার ব্যবস্থা করেছে। এসব গ্রামে বসবাসরকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে সকলের অংশগ্রহনে বহিরাগতদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে করোনার ঝুঁকি কম রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
Leave a Reply