1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২০ পূর্বাহ্ন
৭ কার্তিক, ১৪৩১
Latest Posts

গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখতে হবে

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০
  • ২৬৫ সংবাদটি পড়া হয়েছে

কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ

গ্রামীণ অর্থনীতি সচল রাখতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাযুদ্ধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যেমনটি বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে ছিলেন। করোনা সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং মানব স্বাস্থ্য, সমাজ ও অর্থনীতির চলমানতা বজায় রাখতে রোববার প্রধানমন্ত্রী একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। জাতীয় আয়ের প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ বা ৭৫ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা এর অন্তর্ভুক্ত। এর মধ্যে রয়েছে- সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণ, বড় শিল্পে চলতি মূলধন, কুটির ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে প্রণোদনা এবং অন্যান্য।
এখন বাস্তবায়নের পালা। অতীতে অনেক সময় বাস্তবায়নে নানা রকম ঘাটতির কারণে বিভিন্ন ভালো কর্মসূচির পুরোপুরি সফলতা পাওয়া যায়নি। এবার যেন সে রকমটি না ঘটে, সেদিকে সংশ্নিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এই পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নে দুর্নীতি ও ধান্দাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। এ রকম হুঁশিয়ারি তিনি কিছুদিন আগেও উচ্চারণ করেছেন। তার এই হুঁশিয়ারি এবং করোনাভীতি এসব বিপথগামীকে সৎ পথে থাকতে যেন সহায়তা করে। তবে যদি কেউ বিপথগামী হয় তাদের জন্য শাস্তির বিধান করতে হবে।

প্রথমে যা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হতে হবে তা হলো, করোনা সংক্রমণ যাতে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করতে না পারে। সেই লক্ষ্যে প্রচলিত ব্যবস্থাগুলো আরও ব্যাপক ও কার্যকর করার দিকে অব্যাহত ও জোরদার নজর দিতে হবে। প্রয়োজনীয় অন্যান্য পদক্ষেপ নিতে হবে। 

দেখা যাচ্ছে, রোগী করোনা লক্ষণ নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এটা চলতে পারে না, একই সঙ্গে ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

আশা করা অবশ্যই সমীচীন হবে যে, এই বিশ্ব মহামারি বাংলাদেশে বেশি ছড়াবে না; কিন্তু ছড়াবে ধরে নিয়ে তা রোধকল্পে প্রস্তুতি জোরদার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশে প্রস্তুতি না থাকায় কী ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তা আমরা সবাই জানি। কাজেই প্রস্তুতি গ্রহণ এবং পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো দ্বিতীয় চিন্তার সুযোগও নেই।

এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি ক্ষমতা আছে দেশের এমন সব প্রতিষ্ঠান ও মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। ইতোমধ্যে এমন উদ্যোগ শুরু হয়েছে। আরও অনেক বেশি হতে পারে, এ রকম সুযোগ আছে। যে প্যাকেজ ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী সেটি বাস্তবায়নে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংকিং খাত এবং সংশ্নিষ্ট অন্যদের দায়িত্ব হলো, দ্রুত বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করে বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করা। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় যে দিকনির্দেশনা রয়েছে তা অবশ্যই বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় প্রতিফলিত হতে হবে। যেখানে শিল্প শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার কথা, বাস্তবে যেন সে রকমটি ঘটে।

কুটির ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে। ঋণ দেওয়া হবে প্রকৃত অর্থে ৪ শতাংশ সুদহারে। ৯ শতাংশ সুদের মধ্যে ৫ শতাংশ সরকার দেবে। এটি খুবই আশাব্যঞ্জক। কেননা, এ খাতটি প্রায়ই অবহেলিত থেকে যায়। তবে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প ও ব্যবসা আনুষ্ঠানিক খাতের কর্মকাণ্ড। ক্ষুদ্র শিল্পে সর্বনিম্ন বিনিয়োগ ৫০ লাখ টাকা এবং শ্রমিক সংখ্যা ২৫ থেকে ৯৯ জন। আর মাঝারি শিল্প আরও অনেক বড়।

অন্যদিক কুটির এবং অতি ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও ব্যবসা অনানুষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড। এগুলোই সারাদেশে গ্রামগঞ্জে ও শহরে ছড়িয়ে আছে। গ্রামীণ অর্থনীতির চাঙ্গা হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে এগুলো বিশেষ অবদান রাখছে। শুধু তাই নয়, দারিদ্র্য নিয়ন্ত্রণে এবং পিছিয়ে পড়াদের আর্থসামাজিক অন্তর্ভুক্তিতে বিশেষ অবদান রাখছে। এগুলোয় বিনিয়োগ এক-দেড় লাখ থেকে ২০-২৫ লাখ টাকা। এদের কাছে প্রণোদনা যাতে পৌঁছে, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন হবে। ব্যাংকের মাধ্যমে এদের কাছে পৌঁছার সুযোগ তেমন নেই। এখানে উদ্ভাবনী চিন্তা এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। অবশ্যই গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখতে হবে। কাজেই এই প্রণোদনা প্যাকেজ এবং পিকেএসএফ ও অন্যান্য উৎস কুটির এবং অতিক্ষুদ্র শিল্প ও ব্যবসায়ে সরবরাহকৃত অর্থের লেনদেন চালু রাখা প্রয়োজন। একবার বন্ধ হয়ে গেলে সংশ্নিষ্টদের ঘুরে দাঁড়ানো খুবই কঠিন হবে, ক্ষেত্রবিশেষে সম্ভব নাও হতে পারে।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সবচেয়ে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয় বলে প্রধানমন্ত্রী আগেই ঘোষণা করেছেন। বিনামূল্যে ভুক্তভোগীদের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হবে। অর্থাৎ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী আরও সম্প্রসারিত ও জোরদার করা হবে। খুবই জরুরি প্রশংসনীয়। এদিকে খরিফ মৌসুম সামনে। এ ছাড়া বোরো ধানের মৌসুমও আসন্ন। এসব দিকে বিশেষ নজর দেখা জরুরি। বীজ, উপকরণ ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবহন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ প্রয়োজন হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে তথ্য-ঘাটতি বিদ্যমান। দ্রুত তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। মনে রাখতে হবে, বোরো ধান বাংলাদেশে মোট ধান উৎপাদনের ৬০-৬৫ শতাংশ। কাজেই এই ফসলের ক্ষেত্রে সফলতা নিশ্চিত করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

বিদ্যমান বাস্তবতার সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণ বাস্তবানুগ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মুদ্রা ও রাজস্ব নীতির মধ্যে বাস্তবতার আলোকে ভারসাম্য রক্ষা করা হবে, যাতে অর্থনীতি এগিয়ে চলে ও মূল্যস্ম্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকে। সংশ্নিষ্ট কর্মসূচি প্রণয়নকারী ও সেগুলো বাস্তবায়নকারীরা অবশ্যই বাস্তবতার আলোকে কাজ করবেন। দেশে ও বিদেশে ঘটমান পরিবর্তন অবলোকন করে সময় সময় গৃহীত পদক্ষেপগুলোয় কিছু কিছু পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হতে পারে।

এর আগে মহামারি অনেক হয়েছে। তবে সেগুলো বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বা কয়েকটি অঞ্চলে ঘটেছে। মৃতের সংখ্যাও কোটি কোটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে। তবে গোটা বিশ্বের সব মানুষের জন্য এ রকম টালমাতাল অবস্থা কখনও সৃষ্টি হয়নি। করোনা অবশ্যই একসময় পরাজিত হবে, তবে মানবসমাজ আর আগের মতো থাকবে না। করোনা থেকে যদি মানুষ শিখে যে, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নেই। কেননা করোনা যাকে পায় তাকেই ধরে, সে ধনী হোক, ক্ষমতাবান হোক আর গরিব হোক- সবাই ভীতসন্ত্রস্ত। এ অবস্থায় মানুষ যদি মানবিক-সামাজিক মূল্যবোধে দীক্ষিত হয় এবং ধান্দাবাজি ত্যাগ করে ‘প্রত্যেকে আমরা প্রত্যেকের তরে’- মানবতার এই তাগিদ গ্রহণ ও অনুসরণ করে, তাহলে এই পৃথিবী সুন্দর হবে; মানবজীবন সবার জন্য ধন্য হবে এবং বাস্তবে রূপ নেবে- ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।’ আর বাংলাদেশে গড়ে উঠবে সব নাগরিকের সমঅধিকার ও সমসুযোগের বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা। তবে বর্তমান অবস্থায় প্রথমেই সবাই মিলে করোনা হটাতে হবে।

আর/০৮:১৪/৭ এপ্রিল

সুত্র : দেশ বিদেশসুত্র

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2024
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd