এস এম নাসির উদ্দীন : দেবহাটায় সাঁপমারা খাল খননের সংবাদ প্রকাশের জের । শেষ রক্ষা হলোনা দেবহাটায় সখিপুরে মুনছুরের অবৈধ স্থাপনা। গত ১০ তারিখে কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় দেবহাটার সাঁপমারা খাল খননের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে প্রকাশিত হয়েছিল সংবাদ। এতে নজর পড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষের। শনিবারে শুরু হয় নতুন মাপ জরিপ। পুনরায় মাপ দিলে সখিপুরের মুসছুর ওরফে কাঠ মুনছুরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অর্ধেক পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বাকী অর্ধেক সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায় পড়ে। আর সংবাদে প্রকাশিত রবিন বিশ্বাস, জনতা ফার্মেসীর শর্তাধীকারী দেবু বিশ্বাস, শুশিল বিশ্বাস, নুর হোসেন, অনিল এবং পাগল বাবুর ভবনের পাশ দিয়ে গেছে খাল এমনটাই পাওয়া যাচ্ছে তাদের দেখানো রেকর্ডের কাগজ ও ম্যাপে। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেনি স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ব্যক্তি। তাদের অভিমত সখিপুর বাজার সংলগ্ন খালের এ স্থানটিতে পুর্বে ছিল একটি বড় নদী। তাই এটা কিভাবে রেকর্ডিও সম্পত্তি হয়? বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনার করেছে তারা। খাল খননের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজ শেষ হওয়ার আগেই পাড়ের মাটির ধ্বসে আবার পুরন হচ্ছে খাল। একে চলছে দুর্নীতি তাতে যে টুকু কাজ হচ্ছে তাও বিফলে যাওয়ার উপক্রম এমনটাই বলছে অনেকে। ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের কয়েক কোটি টাকার প্রকল্প। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে খাল পুনঃখননের নামে চলছে অনিয়ম আর লুটপাট। খালের গতিপথ পরিবর্তন করে প্রভাবশালীদের বাঁচাতে অসহায়দের ভোগ দখলীয় জমিতে খাল-খনন করার অভিযোগও উঠেছে। কিন্তু এখনও রয়ে গেছে প্রভাবশালী প্রতিপত্তিদের ভবনসহ বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যা বর্তমানে দৃশ্যমান। অথচ খালের অন্যান্য অংশে দিকে একটু লক্ষ করলে দেখা যাবে গরীব অসহায় পরিবার গুলোর বসত বাড়ি কিভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিছু কিছু স্থানে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে প্রভাব শালী টাকা ওয়ালাদের ঘর। যে কারনে পুনরায় মেপে মুনছুরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে ফেলতে হচ্ছে। তবে একটি সুত্র থেকে আরো জানাযায়,পারুলিয়া ব্রীজ সংলগ্ন স্থানটি উল্লেখিত ব্যক্তিরা তাদের রেকর্ডীয় সম্পত্তির অর্ন্তভুক্ত দেখাতে মাপজরিপের সময় সার্ভেয়ারসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সাথে মোটা অংকের টাকা লেন দেন করে। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবদ্ধতা নিরসনে বদ্ধ পরিকর। তাই তিনি এদেশের নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়সহ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহন করেছেন। যার ধারাবাহিকতায় আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার সংযোগ হওয়া সাঁপমারা খাল খননকল্পে গ্রহন করা হয়েছে দুইটি প্রকল্প। সরেজমিনে যেয়ে জানা যায়, গত বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে নদী খনন পর্যায়ে দেবহাটার সাঁপমারা খালটির আশাশুনীর শোভনালী ইউনিয়নের কাটাখালী হতে দেবহাটার পারুলিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত দেবহাটা সদর ইউনিয়নের ভাতশালায় ইছামতি নদীর সংযোগস্থল পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল খননের জন্য দুইটি প্যাকেজে ১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। খাল খননের প্যাকেজ দুটির একটির কাজ আগামি জুন ও অপরটি আগামি ডিসেম্বর মাসের মধ্যে শেষ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে খনন কাজ শুরুর পর খালটির দু’পাশে বসবাসরত শতশত পরিবারকে তাদের ঘর, আসবাবপত্র সরিয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। বর্তমানে গৃহহারা সে সব পরিবার বিশ্বব্যাপি করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে অত্যান্ত মাতবতার জীবন যাপন করছে। তাদের জন্য নতুন আবাসস্থলের দাবী জানানো হলে তাদের পুনবাসনের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছিল সে সময়। তবে নাম পকাশ না করার শর্তে তারা অনেকে জানান, বসতবাড়ি ভেঙ্গে আমাদের গৃহহারা করা হয়েছে। কিন্ত খালের পাড়ে যে সমস্ত বড়লোকদের ঘর আছে সে গুলো দেখলে আমাদের কান্না পায়। তাহলে আমাদের টাকা নেই তাই এ সব ঘর ভাঙ্গা হয়েছে? প্রশ্ন তাদের। এ ব্যপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র এসও সাইদুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে,তিনি ম্যাপ জরিপের কথা স¦ীকার করে জানান,মুনছুরের জায়গার অর্ধেক পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় পড়ায় তাকে শনিবারের মধ্যে ভেঙ্গে নিতে বলা হয়েছে। তবে না ভেঙ্গে নিলে রবিবার পানি উন্নযন বোর্ড কতৃপক্ষ অবৈধ স্থাপনাটি ভেঙ্গে দিবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
Leave a Reply