করোনা ঠেকাতে ভিটামিন ডি-র কি কোনও ভূমিকা আদৌ আছে?

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

কয়েকটা সাপ্লিমেন্ট খেয়ে নিলেন আর করোনা ত্রিসীমানায় ঘেঁষলো না, তেমন কিন্তু নয় ব্যাপারটা। ভিটামিন ডি-র কাজ সব ঘুরপথে। তা-ও আবার খাওয়ামাত্র যে সে সব কাজ শুরু হয়ে যাবে, এমনও নয়। তা হলে খাবেন কেন? কয়েকটা গবেষণা কী বলছে?

• আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন। আর সেখানের বিখ্যাত ট্রিনিটি কলেজ। আইরিশ লঙ্গিচ্যুডিনাল স্টাডি অন এজিং হয় এখানেই। জানা যায়, যে কোনও সংক্রমণ ঠেকাতে, তা সে ভাইরাস হোক কি ব্যাক্টিরিয়া কি অন্য কিছু, শরীরের প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে জোরদার করে তুলতে ভিটামিন ডি-এর বিরাট ভূমিকা। বিশেষ করে এই সময় যখন আপামর জনগণ বসে আছেন কার্যত সূর্যালোকের অন্তরালে।

• ফুসফুসের সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষমতা রাখে এই ভিটামিন। তা সে টিবি হোক কি হাঁপানি, কি ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ অথবা সিওপিডি। এবং শরীরে এর ঘাটতি না থাকলে রোগ হলেও তা সারে সহজে।

• বিশ্বের ১৪টি দেশের ১১ হাজার ৩২১ জন মানুষকে নিয়ে একটি রিভিউ স্টাডি করে দেখা যায় ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পর তাঁদের ফুসফুসে আচমকা বড় ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা কমে গিয়েছে।

• দীর্ঘ দিন ধরে শরীরে এর ঘাটতি থেকে গেলে ফুসফুসের কার্যকারিতা কমতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

• হার্টের নানাবিধ রোগ, তা সে হার্ট ফেলিওর হোক কি ইস্কিমিক হার্ট ডিজিজ, কি সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ, সবের আশঙ্কা কমে। এমনকি, ইস্কিমিক হৃদরোগের রিস্ক ফ্যাক্টর, হাইপ্রেশার বা ডায়াবিটিজ ঠেকাতেও তার ভূমিকা আছে এবং চিকিৎসায় কতটা ভাল ফল হবে তা-ও নির্ভর করে শরীরে এর ঘাটতি আছে কি নেই তার উপরে।

• বয়স্ক মানুষের মৃত্যুহার কমতে পারে এই সাপ্লিমেন্ট খেলে, যাঁদের কিন্তু স্বাভাবিক ভাবেই ফুসফুসে সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকে।

তা হলে কথা হল কোভিডের আশঙ্কা কমবে কি না। হিসেব তো তাই বলে। করোনাভাইরাস সবার আগে জব্দ করে ফুসফুসকে। কাজেই প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ফুসফুসকে যদি সতেজ রাখা যায়, রোগের আশঙ্কা যেমন কমে, রোগের বাড়াবাড়ি হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়। তার উপর হৃদরোগ, হাইপ্রেশার, ডায়াবিটিজ— সবই তো কোভিড ১৯-এর রিস্ক ফ্যাক্টর। এরা থাকলে রোগের আশঙ্কা ও জটিলতা, দুই-ই বাড়ে। অতএব…।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *