মো. আহাদ উল্লাহ
যিনি একজন ডাক্তার এবং সাথে যদি অধ্যাপক লেখা থাকে উনি এই করোনাকালের মূহুর্তে মেজর জেনারেলের মতো দায়িত্ব পালন করার কথা। সমস্ত সম্মানীত অধ্যাপকেরাই এই যুদ্ধের নেতৃত্বে থাকার কথা। সচিব, মন্ত্রী, সরকার এরা শুধুই রসদ সরবরাহ করবে। ৮মার্চের আগেই বাংলাদেশ উচ্চ মাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছে সতর্ক বার্তা দিয়েছিল WHO. আশ্চর্যের বিষয় হলো ৪৫দিন পরে এসে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি হয়েছে মেডিঃ অধ্যাপকদের নিয়ে। বলেছিলাম সরকার করোনার পিছু পিছু হাটছে, এইভাবে হেটে দেড় হাজার মাইল পিছনে পড়ে গেছে। এখন দৌড়াচ্ছে। আইইডিসিআর-এর দুই দুইজন রোগতত্ত্বের অধ্যাপক দিয়ে কতজনের কাশি হল, জ্বর হলো, গলা ব্যথা হলো, মারা গেলো, দুঃখ প্রকাশ এগুলো বলাচ্ছে। ব্রিফিংয়ে যে কি মজা পাইলো, রিজভী সাহেবের মতো। মাঝে মাঝে মন্ত্রী মহোদয়ও বুলেটিন পড়ছেন। মাননীয় মন্ত্রী হচ্ছেন এ যুদ্ধের জেনারেল। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব স্পোকম্যান হতে পারতেন সাথে বিটিভি থেকে দুজন ঘোষক নিতে পারতো। মনে হচ্ছে কোথাও একটি সমস্যা আছে। আসলে সংবাদ দেয়ার বা পাঠ করার জন্য অধ্যাপকদের এখন সময় নয় বা মানায় না। জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (IEDCR) যে জনবল তাতে এই করোনা যু্দ্ধের জন্য প্রাথমিকভাবে ঠেকিয়ে রাখার জন্য একটি পদাতিক ডিভিশন দরকার। এই প্রতিষ্ঠানটি স্রেফ একটি বিগ্রেডের মতো, অনেক প্রকার বিগ্রেড ও রেজিমেন্ট নিয়ে তো একটি ডিভিশন। যেমন সেনা বাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশন, সাভার। এই ডিভিশন শুধু ঢাকাকে রক্ষা করবে, তার জন্য সব আছে তাদের। তো, সারা দেশ! iedcr এরাতো সারাদেশে রোগ/রোগী চিহ্নিত করার ও গবেষণা করার একচ্ছত্র দায়িত্ব নিয়েছে, আর কেউ করবে না। বড় সমস্যা এই জায়গায়। এখন হযবরল। হ্যা সরকারী ভাবেই হবে, প্রতিটা সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে অঞ্চল ভাগ করে গাইড লাইন দিয়ে আগেই প্রস্তুত করা যেত। তা করা যেত, করবে না। এখন গলায় কাটা আটকে গেছে, বিড়ালের পা ধরবে, মাসিকে গিয়ে বলে আসবে, মুটি মুটি সাদা ভাত গিলেও তো হবে না। সারাদেশে ডাক্তাদের বডিল্যাঙ্গুয়েজ দেখে তাই মনে হয়। আমাদের যেহেতু চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত নয়, স্যাম্পল টেস্ট করেই কন্ট্রোল করে ফেলা যেত।
দঃ কোরিয়া জার্মানির রাস্তার গাড়ী চালকের পর্যন্ত স্যাম্পল নিয়ে রেন্ডম টেস্ট করে ভাল ও আক্রান্তদের আলাদা করে সবকিছু এখন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ভয়ের বিষয় হলো যাকে টেস্ট করা হলো এবং সে পজেটিভ হলো- সঙ্গে সঙ্গে আইসোলেশন ( সব কিছু থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া) করার কথা। টেস্ট করার আগের সমস্ত কন্ট্রাক্ট পারসন কে কে ছিল! এই প্রশ্নের উত্তরটা আইইডিসিআর দিচ্ছে না। বলছে কোয়ারান্টাইন (যে সময় পর্যন্ত রোগ সংক্রামণ আশঙ্কায় পৃথক রাখা হয়)এর কথা। সেটা কে বাস্তবায়ন করবে। যদি করেই থাকে ছড়ালো কেন? পুলিশ মিলিটারি দায়ী? প্রশাসন?
দায়টা আমাদেরও নিতে হবে। পুলিশ ঘরে ঢুকিয়ে গেলো, বসে রইলাম। আরে! মনে হল পুলিশের কাঁধে তো পুরানো বন্দুক! ধূররর! এ বন্দুকের গুলি ফুটে না, কিছুই করতে পারবে না। সামনে একজন সাংবাদিক বা ক্যামেরাম্যান থাকলে তো কথাই নেই। পিটাবে দূরের থাক, দুইহাত জোড় করে বলবে ঘরে যান, বাবা ঘরে যান। মজাই আলাদা! পাবলিক মজা লুটছে!
এদিকে ফেসবুকাররা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে এক ভিক্ষুককে নিয়ে। আরে! লোকটি পুঁজিবাদী বিশ্বের সব খবর রাখে। সে তো জানেই ইনভেস্ট একটা করলে প্রণোদনা পাবেই। তো পেয়েছে। কোটিপতিরা যেরকম পাবে, হাজার হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা।
মেম্বার, চেয়ারম্যান, ডিলার সবই তো চলতি সরকারের দলীয় লোক। কোনোভাবে হয়তো জেনে গেছে শেখের বেটি তাদের কোনো প্রণোদনা দিবেন না। তাই নিজেরাই চাল ডাল তেল নুন যা পারছে নিজ হাতে প্রণোদনা নিয়ে নিচ্ছে। ভাগে যারা কম পেয়েছিল তারাই পুলিশকে বলে দিয়েছে; করোনাকাল যাক টের…। চলবে…।
পুনশ্চঃ সারা গিলবার্টের টিকা সফল হলে কিরকম হবে এই গ্রহ ? পুরুষতান্ত্রিকদের মহিষ শক্তির দাপটওয়ালা, ওয়াজআলাদের চেহারা, স্বৈরাচারী শাসকদের ফরমান কোথায় যায়, সেটাও করোনাকালের মধ্যে হিসাবটা সবাই লিখে রাখবেন যেহেতু গিলবার্ট একজন নারী।
(+ প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের গণসাংস্কৃতিক বিভাগের দায়িত্বে)
Leave a Reply