1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন
২৭ চৈত্র, ১৪৩১
Latest Posts
📰গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ📰ভূমিদস্যু কর্তৃক শ্যামনগরের ১০টি অসহায় পরিবারের ভিটাবাড়ি জবরদখল চেষ্টার প্রতিবোদে সংবাদ সম্মেলন📰আশাশুনিতে বানভাসী মানুষের মাঝে জেলা পুলিশের পক্ষে উপহার সামগ্রী বিতরণ📰আশাশুনিতে বাংলা নববর্ষ  উদযাপনে প্রস্তুতিমূলক সভা 📰সাতক্ষীরায় পলিথিনের ব্যবহার বর্জন বিষয়ে জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন📰২৫০ ধরনের ওষুধ ৩ ভাগের ১ ভাগ দামে পাবে জনগণ📰সাতক্ষীরায় সরকারি খাসজমি উদ্ধারে অভিযান শুরু📰নাসার সঙ্গে মহাকাশ গবেষণায় অংশীদার হলো বাংলাদেশ📰তালা উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ📰তালায় গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ

ওদের জরিমানা নয়, কোয়ারেন্টাইন মানতে বাধ্য করাতে হবে ॥ এম কামরুজ্জামান ॥

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২০
  • ১৩৭ সংবাদটি পড়া হয়েছে

করোনার ভয়াল তান্ডবে পৃথিবী এখন মৃত্যুর অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করছে। পৃথিবীজুড়ে কান্না আর লাশের মিছিল ! লাশ রাখার জায়গা নেই। এমন মর্মান্তিক মৃত্যু যেনো প্রিয়জনের মৃত্যুতে কান্নারও সুযোগ নেই। সন্তানের কাছে মা যায় না। সন্তান যায় না মার কাছে। দাফনে এতো আত্মীয় বন্ধু পরিচিতজন কেউ নাই ! অপরিচতরাই শেষ বিদায় দিচ্ছেন। ভয়ে বাকরুদ্ধ শোকস্তব্ধ গোটা পৃথিবী।
বাংলাদেশও আতঙ্কের বাইরে নয়। শক্তিশালী ভাইরাস করোনা আস্তে আস্তে বাংলাদেশকেও গ্রাস করতে শুরু করেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। মৃত্যু থেমে নেই। করোনা থেকে বাঁচতে চারিদিকে যখন একের পর এক ঘোষিত, অঘোষিত লকডাউন তখনও খেটেখাওয়া অনেক মানুষ তার প্রিয়জনদের সান্নিধ্য পেতে নিজের কর্মস্থল ছেড়ে ছুটে চলেছে। কোন ভাবেই তাদেরকে থামানো যাচ্ছে না। অবিরাম ছুটে চলা ।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মোস্তফা কামাল গত ৮ এপ্রিল এক বিজ্ঞপ্তিতে করোনা আক্রান্ত জেলা থেকে যাতে কোন মানুষ সাতক্ষীরাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য জেলার সমস্ত প্রবেশপথ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। পণ্যবাহী ট্রাক,জরুরী মালামাল সরবরাহ ছাড়া সবই বন্ধ। এ আদেশ জারির পর ওই দিনই সাতক্ষীরা-যশোর, সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কসহ জেলার সকল প্রবেশমুখে বসানো হয়েছে পুলিশের পাহারা। কিন্তু আইন প্রয়োকারী সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে গত ৩/৪ দিন ধরে ঢাকা, নারায়গঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন করোনা আক্রান্ত জেলা থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ সাতক্ষীরাতে প্রবেশ করছে। কেউ ট্রাকেই উপর ড্রামের ভিতর লুকিয়ে, কেউ ট্রাকে পণ্য সেজে, কেউবা এ্যামম্বুলেন্সের ভিতর রোগি সেজে ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে বাড়িতে ফিরছেন। বাড়িতে পৌছানোর আগেই পথিমধ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে শত শত মানুষ আটকও পড়ছে।
গত বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সখিপুরে দুই ট্রাক ভর্তি ৭৬ জন , শুক্রবার ৫টি ট্রাক ও ১টি বাস ভর্তি প্রায় দু’শ ঘরমুখো মানুষকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। আজ শনিবার সকালে খবর এলো দেবহাটায় আরও ২ ট্রাক ভর্তি মানুষকে স্থানীয় জনতা আটক করে প্রশাসনের কাছে দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে এদের বেশির ভাগ মানুষের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি, শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। দরিদ্র ও অসহায় এসব মানুষগুলো কাজের সন্ধানে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছিল। করোনার কারণে তারা কর্মহীন হয়ে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ের কাছে ফিরছে।
কথা হয় এদের কয়েক জনের সাথে । তারা জানালো- এলাকাতে কাজ নেই। তাই প্রতিবছর নভেম্বর মাসে আইলা দুর্গত শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ থেকে লক্ষাধিক মানুষ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাতে ইটের ভাটায় তারা কাজ করতে যায়। সেখানে টানা ৫/৬ মাস কাজ করার পর এপ্রিল মাসের শেষের দিকে অথাবা মে মাসের প্রথম দিকে আবার গ্রামে ফিরে আসে। ঈদুল ফিতরের আগেই তারা বাড়েিত ফিরে স্ত্রী, সন্তানসহ স্বজনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। কিন্তু এবার করোনার থাবা তাদের সেই আনন্দ ম্লান করে দিয়েছে। করোনার কারণে সব কাজ বন্ধ। মালিকরা তাদের ঠিকমত বেতন বা মজুরির টাকা পরিশোধ করেনি। হাতে-গাটি যা ছিল তাই নিয়েই তারা স্ত্রী, সন্তানদের কাছে ফিরছে। পরিবহন বন্ধ, যে যেভাবে পারছে সেভাবেই গ্রামে ছুটে চলেছে। তাদের এই যাত্রা অমানবিক হলেও তারা চায় পরিবার পরিজনের কাছে ফিরতে।
কাজের সন্ধানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়া মানুষগুলো এই মুহুর্তে এলাকায় ফিরে আসাটা রীতিমতো আতঙ্কের। করোনা ঝুকি বাড়াচ্ছে এতে কোন সন্দেহ নেই। খরবটি আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের, উৎকণ্ঠার। কিন্তু মানবিকও বটে। তারা কোথায় যাবে। স্ত্রী সন্তানেরা গ্রামে। কর্মস্থলে থেকেও কর্মহীন, খাদ্য সংকট। পরিবার পরিজন গ্রামে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। গণপরিবহন বন্ধ তাতে কি ! যেভাবেই হোক তাদের ফিরে আসা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।
জীবন ও জীবিকার তাড়নায় ফিরে আসা এই মানুষগুলোকে নিয়ে ফেসবুকে নানা কথাবার্তা, মন্তব্য চোখে পড়ছে। কেউ বলছেন তাদেরকে জরিমানা করা হোক। কেউ বলছেন আইনের আওতায় আনা হোক। আবার কেউ কেউ বলছেন এদেরকে সাতক্ষীরার প্রবেশদ্বারে আটকিয়ে রাখা হোক। আবার কেউ বলছেন দরিদ্র এই মানুষগুলোকে আটকিয়ে রাখাটা অমানবিক হবে। নানা জনের নানা মন্তব্য, নানা কথা। কিন্তু এদের জরিমানা বা শাস্তির দেয়ার আগে তাদের মানবিক বিষয়টিও ভেবে দেখা দরকার। কর্মহীন মানুষগুলো কোথায় যাবে ?
জরিমানা বা শাস্তি দেয়া বড় কথা নয়, এই মুহুর্তে প্রয়োজন তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন শতভাগ নিশ্চিত করা। যারা গ্রামে ফিরছে তারা হোম কোয়ারেন্টাইন একেবারেই মানছে না। প্রতিদিনই এ ধরনের খবর আসছে পত্রিকা অফিস গুলোতে। কোয়ারেন্টাইন মানার ক্ষেত্রে শুধু প্রশাসন নয়, আশপাশের মানুষ গুলোকেও সচেতন হতে হবে। যারা এখনো বাইরের জেলা থেকে সাতক্ষীরাকে প্রবেশ করছে তাদের বাড়িতে বাড়িতে লাল পতাকা উড়িয়ে দিতে হবে। যারা কোয়ারেন্টাইন মানছে না তাদেরকে মানাতে বাধ্য করাতে হবে। এটা শুধু প্রশাসনের উপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন , পুলিশ প্রশাসন তাদের সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছে মানুষজনকে ঘরে ফিরাতে। কিন্তু প্রশাসনের লোক চলে আসার পর আবারও যা-তাই অবস্থা। আমাদেরকে আর ঘুমিয়ে থাকলে চলবে না, কে কি মনে করল্লো তা দেখার সময় নেই। হাতে সময় একেবারেই কম। এখুনি প্রতিটি গ্রাম-মহাল্লার মানুষকে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিটি এলাকার জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ইমাম,পরোহিত, এলাকার সচেতন মহাল ও যুব সমাজকে দায়িত্ববান হতে হবে।
নোভেল-১৯ করোনাভাইরাস একটি শক্তিশালী সংক্রমন ব্যাধী। মানুষকে ঘরের ভিতর রাখাই এ রোগের একমাত্র প্রতিষেধক। বিশ্ব গবেষকরা করোনো নামের এই মরণ ভাইরাসের ওষুধ এখনো তৈরী করতে পারেনি। বিধায় আমাদের স্ব স্ব অবস্থান থেকে করোনা প্রতিরোধে এখুনি ঝাপিয়ে পড়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
আজ পর্যন্ত যারা বিদেশ বা সাতক্ষীরা জেলার বাইরে থেকে এলাকায় প্রবেশ করেছে বা করছে তাদের দিকে কঠোর নজরদারি শুরু করুন। আসুন আমরা সাবই মিলে তাদের বাড়িতে লাল পতাকা উড়িয়ে দিয়ে ঘরের ভিতর রাখা নিশ্চিত করি।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক জনাব এস এম মোস্তফা কামাল ও পুলিশ সুপার জনাব মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে সবিনয় বলতে চাই, করেনা আক্রান্ত জেলা থেকে এখনো যারা প্রবেশ করছে তাদেরকে ১৪ দিনের আগে বাড়িতে ফিরতে দেয়াটা ঠিক হবে না। তাদের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিক করুন। কোন কারনে সেটা সম্ভব না হলে হোম কোয়ারেন্টাইন শতভাগ নিশ্চিত করতেই হবে। আর এলকাবাসীর কাছে কড়জোড়ে মিনতি, আদেশ অমান্যকারীদের ব্যাপারে কঠোর হন, প্রশাসনকে তথ্য দিন, করোনা রুখতে সহযোগিতা করুন।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2025
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd