জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ৯ এপ্রিল শুক্রবার বিকালে এক বিবৃতিতে বলছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বার বার কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণের পরও করোনা সংকটকালে লকডাউন পরিস্থতিতে দেশের হঠাৎ কর্মহীন নিরুপায় অসহায় মানুষের জন্য সরকার যে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সেই কর্মসূচি বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে বহু জায়গাতেই প্রকৃত খাদ্য সহায়তা প্রার্থীদের তালিকা প্রণয়ন ও খাদ্য বিতরণে সমন্বয়হীনতা-দূর্নীতি-স্বজনপ্রীতি-দলাবাজী-দলীয়করণ এবং ওএমএস-এর চাল কালোবাজারে বিক্রি, ত্রাণের চাল আত্মসাৎ ও চুরি, মজুদদারির ঘটনার খবর আসছে। তারা এই দূর্নীতির ঘটনার তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দল না দেখে মুখ না দেখে এদকল দূর্নীতিবাজ, চোর, আত্মসাৎকারী, কালোবাজারি, মজুদদারদের মোবাইল কোর্টে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।
জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, সরকার করোনা পরিস্থিতিতে ৭৫ লক্ষ পরিবার অর্থাৎ পরিবার প্রতি ৪ জন করে মানুষ হিসাব করে ৩ কোটি মানুষকে খাদ্য সাহায্য দেয়ার কর্মসূচি নিয়েছে। ইতিমধ্যে ২৯ লাখ ৭৫ হাজার পরিবারকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এখনও ৪৫ লাখ ২৫ হাজার পরিবারের তালিকা তৈরিই হয়নি।
তারা অভিযোগ করে বলেন, তালিকা প্রণয়ণে বহুক্ষেত্রেই সমন্বয়হীনতা-দূর্নীতি-স্বজনপ্রীতি-দলবাজী-দলীয়করণ করে যাদের খাদ্যত্রাণ দরকার নাই তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাদের নাম তালিকায় আছে তারা খাদ্যত্রাণ পায়নি, যাদের নাম তালিকায় নাই তারা খাদ্যত্রান নিয়েছে, কেউ কেউ একাধিকবার খাদ্যত্রাণ নিয়েছে, কেউ কেউ একবারও খাদ্যত্রাণ পায়নি। স্বজনপ্রীতি ও দলবাজী এমন জঘন্য পর্যায়ে পৌঁছেছে খোদ আওয়ামী লীগের সদস্য কর্মী নিরুপায় অসহায় প্রকৃত খাদ্যত্রাণপ্রার্থীদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করে বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের ব্যক্তিগত লোক যাদের খাদ্যত্রাণ দরকারই নাই তাদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
জাসদের নেতৃদ্বয়, খাদ্যত্রাণ প্রার্থীদের তালিকা প্রণয়ন ও বিতরণে যে সমন্বয়হীনতা হয়েছে তা অবিলম্বে দূর করে প্রকৃত খাদ্যত্রাণ প্রার্থীদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকার ও প্রশাসনকে কঠোর অবস্থাণ গ্রহণ করার আহবান জানান। তারা একই সাথে লকডাউন পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার ঘোষিত ৭৫ লাখ পরিবার অর্থাৎ ৩ কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদানের কর্মসূচি সম্প্রসারিত করে আরও ৭৫ লাখ পরিবার অর্থাৎ আরও ৩ কোটি সর্বমোট দেড় কোটি পরিবার অর্থাৎ ৬ কোটি মানুষকে খাদ্যসহায়তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। তারা বলেন, সুষ্ঠু ও প্রশ্নাতীত তালিকা প্রণয়নের জন্য গ্রামে বা শহরে ওয়ার্ডকে ইউনিট হিসাবে ধরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির সাথে, ইউএনও বা ডিসির একজন প্রতিনিধি, ১ জন মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক, একজন কলেজ শিক্ষক, ঐ ওয়ার্ডে ববসবাসকারী ১ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী বা কর্মকর্তা, ১ জন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য, কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, ১ জন স্থানীয় রেজিস্টার্ড পল্লী চিকিৎসক, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকাকে সদস্য করে কমিটি গঠণ করতে হবে। এই কমিটির তত্ত্বাবধানে গ্রাম পুলিশ, চৌকিদার, যুবক স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠনও করতে হবে। কারণ লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব রাখা কার্যকর করতে হলে জনসমাগম করে খাদ্যত্রাণ বিতরণ সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়াবে। তাই তালিকা অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে খাদ্যত্রাণ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়ার পদ্ধতি চালু করতে হবে। জাসদ নেতৃদ্বয় খাদ্যত্রাণ সাহায্যপ্রার্থীদের খাদ্যত্রাণ সাহায্য সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার পর তাদের বিকাশ/নগদ/রকেট নাম্বারসহ ডাটাবেজ তৈরি করে প্রয়োজনে খাদ্য দেয়ার বদলে সমপরিমান টাকা সরাসরি তাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার পদ্ধতি নিয়ে ভাবার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
বার্তা প্রেরক
সাজ্জাদ হোসেন
দফতর সম্পাদক
০১৭১২৬৩৭৪৬৫, ০১৯১১৫৮৫৯৪৫
Leave a Reply