গত ইং- ২৫ শে মার্চ ২০২০ বুধবার সাতক্ষীরা থেকে প্রকাশিত দৈনিক দৃষ্টিপাত পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় তিন ও চার কলামে “অবৈধ ভাবে বসত ঘর দখল থেকে রক্ষা পেতে শ্যামনগরে মুক্তিযোদ্ধা বারেক গাজীর সংবাদ সম্মেলন” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনটি আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনটি সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যে প্রনোদিত। আমি মোছাঃ মমতাজ খাতুন ১৩ নং হায়বাতপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসাবে দীর্ঘ ১৪ বছর যাবৎ অত্যান্ত সুমানের সহিত শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত আছি। আমার স্বামী মৃত্যু খোরশেদ আলম সাতক্ষীরা জেলায় অতি পরিচিত একটি নাম। তিনি সমাজসেবা মূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের আস্থা ও ভালবাসা অর্জন করেছিলেন। ব্যবসায়িক কারণে তিনি সাতক্ষীরা ছেড়ে শ্যামনগরে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। আমি ২০০৫ সাল থেকে এস.এ রেকর্ডীয় প্রজা মৃত্যু শেখ তমিজ উদ্দীনের ওয়ারেশগন আমাকে তাদের জমির উপরে বসত বাড়ি তৈরী করার অনুমতি দেয়। সেখানে ২ রুম বিশিষ্ট একটি টিন সেড, বাস ঘর, একটি গোলপাতার ছাউনী রান্নাঘর ও একটি পাকা বাথরুম সম্পূর্ন আমাদের নিজেদের অর্থায়নে নির্মাণ করে শান্তিপূর্ন ভাবে বসবাস করিয়া আসিতেছিলাম। ২০/১২/২০০৯ তারিখে ৪৭৯৩ নং রেজিষ্ট্রী কোবালা মূলে শ্যামনগর থানাধীন শ্রীফলকাটি গ্রামের মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র জি.এম.মিজানুর রহমান উনি আমাকে বলেন যে, এই জমি আমি খরিদ করিয়াছি। অদ্য হইতে আপনি আমার জায়গার উপর বসবাস করিতেছেন। তাহার কাগজপত্র দেখিয়া আমি স্বীকার করিয়া লইলাম যে, আমি এখন হইতে আপনার জায়গায় বসবাস করিতেছি। আপনার প্রয়োজনে আমি আপনার জায়গা হইতে যখন বলিবেন তখনি আমি আমার নির্মাণকৃত অর্থ বুঝিয়া পাইলে আমি চলে যাইব। এর পর ২০১২ সালে আমার স্বামীর মৃত্যুর পর আব্দুল বারেক গাজী আমাকে প্রস্তাব দেন যে, উক্ত মিজানুর রহমানের বাড়ির দক্ষিণ পার্শ্বে আমার পৈত্রিক .০৩ শতক সম্পত্তি বিক্রয় করা হইবে। অত:পর আমি বাজারের সর্বোচ্চ দামে ২,৫০,০০০/-(দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা মূল্যে ১৫৭০ নং ডিপি খতিয়ানে এস.এ ৫১ ও ৫৮ দাগে হাল ১৩৩ হাল ১৩৭ দুই দাগে মোট .০৩ শতক জমি আব্দুল বারেক গাজীর নিকট হইতে ক্রয় করে শান্তিপূর্ন ভাবে ভোগদখল করিয়া আসিতেছি। অত:পর ১৫/০৫/২০১৭ তারিখে ২১৩২ নং রেজিষ্ট্রী কোবালা মূলে একটি দলিল নকিপুর গ্রামের মৃত শিবপদ চক্রবর্তীর পুত্র সুকুমার চক্রবর্তী আমাকে দেখায় এবং বলে যে, আমি জি.এম.মিজানুর রহমানের নিকট হইতে এই জমি খরিদ করিয়াছি। অদ্য হইতে আপনি আমার জমিতে বসবাস করিতেছেন। আমি তাহা দেখিয়া মানিয়া লইয়া পূর্ব ব্যক্তির ন্যায় উনাকে বলিলাম যে, আপনার প্রয়োজনে আপনার জমি হইতে আমি চলে যাওয়ার পূর্বে আমার নির্মাণকৃত সমূদয় অর্থ বুঝিয়া দিলে আমি চলে যাইব। কিছুদিন পূর্ব হইতে আব্দুল বারেক গাজী আমাকে প্রস্তাব দেয় যে, সুকুমার চক্রবর্তী ঘর সহ জায়গা আমাকে রাত্রের অন্ধকারে দখল বুঝিয়া দিয়া তোমার .০৩ শতক জায়গার উপর চলিয়া যাও। যার পরিবর্তে আমি তোমাকে তোমার .০৩ শতক জায়গার উপর সম্পূর্ন আমার অর্থ দিয়া পাকা ঘর বাড়ি নির্মাণ করিয়া দিব। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হইয়া বরং সুকুমার চক্রবর্তীকে বারেক গাজীর সমস্ত পরিকল্পনা জানাইয়া দেই। সেই হইতে আব্দুল বারেক গাজী আমার উপর শত্রুতা মনোভাব সহ বিভিন্ন রকমের হুমকি ধামকি দিয়া আসিতেছে এবং ইতিপূর্বে কয়েকবার আমার বসে থাকা সম্পত্তির উপরে ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়ে দখলদারী করার চেষ্টা করে।
সে কারনে আমি ও আমার পুত্রের জানমালের নিরাপত্তার জন্য শ্যামনগর থানায় আব্দুল বারেক গাজীর বিরুদ্ধে একটি জিডি করি। যাহার জিডি নং- ৪৫৩, তারিখ ইং- ১১/০২/২০১৮ এবং তাহারই জের ধরিয়া উক্ত জমিতে ২০/০৩/২০২০ তারিখ ভোর রাত্রে আব্দুল বারেক গাজী ২৫/৩০ জন ভাড়াটিয়া গুন্ডা প্রকৃতির লোকজন লাঠি সোটা দা, সাবল ও সিমেন্টের পিলিয়ার সহ উক্ত জমির উপর ঝাপাইয়া পড়ে। আমি তাৎক্ষনিক ভাবে সুকুমার চক্রবর্তীকে জানাইলে আমার উপর ক্ষিপ্ত হইয়া আব্দুল বারেক গাজী অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ সহ বিভিন্ন রকমের হুমকি ধামকি দেয়। উল্লেখ্য আব্দুল বারেক গাজী একজন মুক্তিযোদ্ধা তিনি এই মুক্তিযোদ্ধা নামকে পুঁজি/ব্যবহার করিয়া নানান অপকর্মে লিপ্ত আছেন। সরকারি খাস খাল, খাস জমি সহ বিভিন্ন মানুষের বিরোধপূর্ন জমি তিনি চিহ্নিত একটি লাঠিয়াল বাহিনী দ্বারা দীর্ঘদিন ভোগদখল করা সহ এই প্রক্রিয়ায় লিপ্ত আছেন। আমার স্বামী জীবিত থাকাবস্থায় বারেক গাজীর সাথে সম্পর্ক ভাল থাকায় তিনি কোন রুপ ষড়যন্ত্র করেননি। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পরে বারেক গাজীর আসল চেহারা প্রকাশ পেতে থাকে। আমার স্বামীর মৃত্যুর আগে নকিপুর গ্রামের মৃত্যু শিবপদ চক্রবর্তীর পুত্র ব্যবসায়ী সুকুমার চক্রবর্তী ভাল সম্পর্ক ছিল। সুকুমার চক্রবর্তী আমার স্বামীকে নিজের মামার মত জানত এবং মামা বলে ডাকত। সেই সম্পর্কে আমি সুকুমার চক্রবর্তীর মামী হই। স্বামীর আকষির্¥ক মৃত্যুর পরে আমার একমাত্র পুত্রকে নিয়ে যখন আমি দিশেহারা হইয়া পড়ি সে সময় সুকুমার চক্রবর্তী ও তার পরিবারবর্গ মামার প্রতি শ্রদ্ধাবোধে জায়গা থেকে আমার অসহায় পরিবারটির পাশে এসে দাড়ায় এবং অদ্যবধি তাহারা আমার বিপদ আপদ বিভিন্ন প্রয়োজনে আমার পরিবারকে সহযোগীতা করে আসিতেছে।
সংবাদ সম্মেলনে সুকুমার চক্রবর্তী ও আমাকে জড়িয়ে কিছু আপত্তিকর ও অশ্লীল শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে। আমি একজন খাঁটি মুসলিম পরিবারের সন্তান। আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি। এহেন মানহানিকর মিথ্যা, বানোয়াট এবং কু-রুচিপূর্ন সংবাদ সম্মেলনের বিরুদ্ধে আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাথে সাথে মুক্তিযোদ্ধা নামধারী চিহ্নিত মামলাবাজ ও দখলবাজ বারেক গাজীর ষড়যন্ত্রের হাত থেকে আমার সম্পত্তি ও পরিবারকে রক্ষা করতে পারি সেজন্য গ্রহনে প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
(মোছাঃ মমতাজ খাতুন)
সহকারী শিক্ষক
১৩ নং হায়বাতপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
শ্যামনগর, সাতক্ষীরা।
Leave a Reply