প্রতিষ্ঠান প্রধান পুলিশ হেফাজতে থাকাকালিন সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান ও তার বাহিনীর সদস্যরা লুটে নিয়ে যায় শহরের পলাশপোলের তিয়েনসি কোম্পানীর অফিসের আসবাবপত্রসহ ৭০ হাজার টাকার মালামাল। এক বছর সাগে চার মাসেও ফিরে পাননি ওই প্রতিষ্ঠান প্রধান।
আশাশুনি উপজেলা সদরের মৃত মোকছেদ আলী গাজীর ছেলে মোঃ জাহিদুল ইসলাম বুধবার সকালে এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করে বলেন, সরদার মোটরস্ এর মালিক শহরের পলাশপোলের রফিকুল ইসলামের বাড়ি মাসিক পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া নিয়ে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তারা তিয়েনসি কোম্পানীর কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। ওই বছরের ১২ আগষ্ট রাতে গোয়েন্দা পুলিশ জামাত-শিবিরের সাথে সংশ্লিষ্ঠতার অভিযোগে তাকে মুন্নিপাড়ার ভাড়া বাসা থেকে আটক করে। এ সময় তার বাসা থেকে শাওমী কোম্পানীর রেডমী ৫+ মডেল এর স্মার্টফোনসহ নয়টি মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ (এইচপি সিকিউইউ-৪৩ মডেল), একটি ডেক্সটপ, পাসপোর্ট, স্ত্রী ও তার শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র ও অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও নিয়ে যায়। পরদিন অফিসের কেয়ারটেকার কালিগঞ্জের নলতার শরিফুল ইসলাম ও জনৈক নজরুল ইসলাম তাকে খাবার দেওয়ার জন্য গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে যায়। সেখানে তাদেরকে আটক করে রাখা হয়। ১৪ আগষ্ট ছাত্রলীগের সম্পাদক সাদিকের মাধ্যমে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে শরিফুল ও নজরুলকে ছেড়ে দেয়া হয়। ওই দিন দুপুরে শরিফুলকে মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে জোরপূর্বক অফিসের চাবি নিয়ে এক একটি আট হাজার টাকা দামের প্রতিষ্ঠানের চারটি বোর্ড টেবিল, একটি রিভলভিং চেয়ার, ২৪টি প্লাস্টিক চেয়ার, দু’টি হাতলওয়ালা চেয়ার, তিনটি সিলিং ফ্যান, একটি ওয়াল ফ্যানসহ বিভিন্ন ব্যবহারিক ইলেকট্রিক সরঞ্জামসহ ৭০ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়। প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি বাড়ির মালিক রফিকুল ইসলামের। ১৫ আগষ্ট তাকে (জাহিদুল) একটি নাশকতার মামলায় (জিআর-৫৯৯/১৮ সদর) আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। পরদিন তার বৃদ্ধ (৭০ বছর) বাবা মারা যান। জেলখানায় থাকায় বাবার লাশ দেখাও সম্ভব হয়নি তার। দু’ মাস পরে তিনি আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। এরপরও তিনি অফিসের মালামাল ও পুলিশের নিয়ে যাওয়া মালামাল উদ্ধারে অপ্রাণ চেষ্টা করলেও সাদিক বাহিনীর লুট করা কোন মালামাল ফিরে পাননি। ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মোটর সাইকেল, ছয়টি মোবাইল ফোনসহ কিছু জিনিস ফিরে পেলেও ল্যাপটপ, শাওমী কোম্পানীর রেডমী ৫+ মডেল এর স্মার্টফোনসহ তিনটি মোবাইল ফোন, মোটর সাইকেলের কাগজপত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র, পাসপোর্ট বই আজো ফিরে পাননি। ওইসব জিনিসপত্র পুলিশ আদালতে জব্দ তালিকাভুক্ত করে পাঠায়নি।
জানতে চাইলে তিয়ানসি কোম্পানীর মালামাল লুট সম্পর্কে গৃহকর্র্তা রফিকুল ইসলাম তার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন। এ লুট হওয়া মালামাল ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উদ্ধারে সাতক্ষীরা পুলিশ সপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন জাহিদুল ইসলাম।
তবে জেল হাজতে থাকায় এ ব্যাপারে কথা বলা সম্ভব হয়নি জেলা ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কৃত সাদিকের সঙ্গে।
Leave a Reply