রাহাত রাজা সাতক্ষীরা :
মাছ চাষের নতুন একটি প্রযুক্তি বায়োফ্লক । অল্প জয়গায় অধিক মাছ চাষে এই প্রযুক্তি বর্তমানে বেশ সাড়া ফেলেছে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু হয়েছে। অনেক মাছ চাষি এই প্রযুক্তিতে মাছ চাষ করে সফলতাও পাচ্ছেন। তেমনি এক সফল মাছ চাষি চট্টগ্রামের টাইগারপাস বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: মোজাম্মেল হক ।
তিনি বায়োফ্লক পদ্ধতিতে ট্যাংকিতে মাছ চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। বছরের শুরুতে ঘরের ভিতর ৩০০ লিটারের ছোট ট্যাংকে কই ও তেলাপিয়া মাছ দিয়ে মাছ চাষ শুরুকরেন এ থেকে শাফল্য পেয়ে বাণিজিক্যভাবে উৎপাদন শুরু করেছেন তিনি।
অনলাইন এবং ভারত থেকে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের প্রয়োজনীয় সব প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি বানিজ্যিকভাবে দেশি মাছের চাষ শুরু করেন। তার সফলতা দেখে অনেক বেকার যুবক বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
মোজাম্মেল হক জানান আমি যখন শুরু করেছি আমার সামনে কোন মডেল ছিলো না যেটা দেখে আমি শুরু করবো বাংলাদেশে বায়োফ্লক এর মালামাল পাওয়া যায়না । যে কারনে ইউটিউব দেখে দেখে নিজেই তৈরি করেছেন বায়োফ্লোক প্রোজেক্ট। বিজ্ঞানভিত্তিক এই মাছচাষে সব কিছুই নিয়ন্ত্রিত তাই সময় ও কম দেয়া লাগে।
অক্টবরের শেষের দিকে বড় পরিশরে ১০ হাজার লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ৬ টি ট্যাংক প্রস্তুত করে তেলাপিয়া, কই, শিং, পাবদা মাছের চাষ শুরু করেন তিনি।
বায়োফ্লোকে শিং, কৈ, তেলাপিয়া, মাগুর, পাবদা ও ট্যাংরা মাছের পোনা ছাড়া যায়। পোনা ছেড়ে বাজারজাত করা পর্যন্ত সময় লাগে সাড়ে ৩ থেকে ৪ মাস। প্রথম চালানে ৬০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করেন মোজাম্মেল হক । যাতে লাভ হবে অর্ধেক।
আগামীতে ট্যাংক বাড়িয়ে কৈ, তেলাপিয়া, পাবদা, মাগুর, ট্যাংরাসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ চাষ করবেন তিনি।
তিনি আরও বলেন এ পদ্ধতিতে মাছের খাবার কম লাগে। অসুখ না হওয়ায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় না। তবে শুরুর দিকে সবাইকে কই মাছ চাষের পরামর্শ দেন কারন কই মাছে লাভ কম হলেও মাছ চাষ টি সহজে শিখেনেয়া যায়।
বায়োফ্লোক প্রযুক্তি মাছ চাষের একটি টেকসই এবং পরিবেশগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ পদ্ধতি৷ যা পানির গুনমান এবং ক্ষতিকারক রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু নিয়ন্ত্রণ করে৷ জলীয় খামার ব্যবস্থার জন্য মাইক্রোবায়াল প্রোটিন খাদ্য হিসেবে সরবরাহ করে। বায়োফ্লোক প্রযুক্তি মূলত বর্জ্য পুষ্টির পুর্নব্যবহারযোগ্য নীতি৷ বিশেষ করে, নাইট্রোজেন, মাইক্রোবায়াল জৈব বস্তুপুঞ্জের মধ্যে খাবারের খরচ কমাতে এবং মাছের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ‘বায়োফ্লক’ প্রযুক্তি যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে। এক কথায় বলতে গেলে বায়োফ্লক হল উপকারি ব্যাকটেরিয়া, অণুজীব ও শৈবালের সমম্বয়ে তৈরি হওয়া পাতলা আবরণ, যা পানিকে ফিল্টার করে অ্যামোনিয়া নামক মাছের বিষ দূরীভূত করে।
ইন্দোনেশিয়ার এই প্রযুক্তির মাছ চাষে জেলা ও উপজেলার মৎস কর্মকর্তার অনভিগ্যতাই এখন বড় সমস্যা ব্যায়োফ্লক মাছ চাষীদের। কারন ছোট খাটো কোন সমস্যা হলে সমাধান দিতে পারছেনা মৎসকর্মকর্তারা।
Leave a Reply