নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগকে ঘিরে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধানী কর্মকর্তা সামসুল আলম তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়ে পূর্ণ তদন্তের জন্য টেন্ডার সংক্রান্ত সমুদয় কাগজপত্র তলব করেছেন। গত ২২ মে এসব কাগজপত্র চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে পত্র দিয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (শৃঙ্খলা) ডা. কামরুন নাহার সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রেরণের জন্য গত মাসের ২৯ মে এক পত্রে নির্দেশ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিগত ২০১৭-১৮ ও ১৮-১৯ অর্থ বছরে যে সমস্ত টেন্ডারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য যন্ত্রাংশ ক্রয় করা হয়েছে তার সমুদয় কাগজপত্র প্রেরণ করতে বলা হয়েছে। প্রেরিত পত্রে দুদক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ০০.০১.০০০০.৫০২.০১.০৭৪.১৮.২০৫৭৭ নং স্মারকে বলা হয়েছে অথরাইজেশন লেটার জালিয়াতি করে দরপত্রে উচ্চ মূল্যে মালামাল দেখিয়ে নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ, দরপত্র অনুযায়ী মালামাল সরবরাহ না করে বিল উত্তোলনপূর্বক কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগসমূহ অনুসন্ধানের স্বার্থে (১) বিগত ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল এবং সিভিল সার্জন অফিসে টেন্ডারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য যন্ত্রপাতি ক্রয়ের প্রাক্কলন, দরপ্রস্তাব সমুহ, দরপত্রের প্রশাসনিক অনুমোদনপত্র, অর্থ বরাদ্দপত্র, ক্রয়কৃত মালামালের বাজার দর তালিকা, প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স, ইটিএন, এনআইডিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রেকর্ডপত্র (২) টেন্ডার সিকিউরিটি ও পারফরমেন্স সিকিউরিটি চাহিত তথ্যাদি জরুরী ভিত্তিতে উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধানী কর্মকর্তা, দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, সেগুন বাগিচা, ঢাকা বরাবর প্রেরণ করতে বলা হয়েছে।
এর আগে, নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ সাতক্ষীরার আন্দোলন মুখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক তদন্ত দল গঠন করে নিজে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসে এসে দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পান। কিন্তু এখনও বিপুল পরিমাণ স্বাস্থ্য যন্ত্রাংশ ক্রয়ের নামে ১৮ কোটি টাকা লুটপাটকারীরা এখনও বহালতবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কোন কিছুই হবে না, সব কিছুই ম্যানেজ করা হয়েছে- এমন মন্তব্যও করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের সাথে সংশ্লিষ্ট সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান, স্টোরকিপার একেএম ফজলুল হক ও হিসাবরক্ষক আনোয়ার হোসেন সব কিছুই ম্যানেজ করতে দৌড়ঝাপ অব্যাহত রেখেছেন।
সম্প্রতি হিসাবরক্ষক আনোয়ার হোসেনের এক প্রতিবেশি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, রোজার মধ্যে প্রচন্ড গরম পড়ায় এবার তিনি বাড়ির জন্য দুটি এসি ক্রয় করেছেন। কি পদে চাকরি করেন আর কত টাকা আয় করেন যার বাড়িতে একই সঙ্গে দুটো এসি লাগানো হয় তার সততা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।
এদিকে দুদক কর্তৃক প্রেরিত পত্রের ব্যাপারে সাতক্ষীরার বর্তমান সিভিল সার্জন ডা: রফিকুল ইসলাম জানান, দুদক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পত্র আমি ঈদের আগেই পেয়েছি। তাদের সংশ্লিষ্টদের চাহিদা অনুযায়ী সমুদয় কাগজপত্র পাঠানোর প্রস্ততি চলছে। ঈদের বন্ধের কারণে পাঠানো সম্ভব হয়নি। অতি দ্রুত এসব কাগজপত্র দুদকে প্রেরণ করা হবে।
Leave a Reply