নিজস্ব প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আতংকে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সাতক্ষীরার শ্যমনগর উপজেলার নদী উপকূলীয় মানুষেরা। শিশু ও বৃদ্ধদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া, গৃহপালিত পশু ও ফসল রক্ষা করা, আশ্রয় কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থাসহ সমগ্র বিষয় নিয়ে দিশেহারা হয়ে উঠেছেন তারা। চিন্তায় পড়েছেন আশ্রয় কেন্দ্রের দূরত্ব নিয়েও। মূলত ২০০৯ সালের আইলার পর থেকে প্রাকৃতিক দূর্যোগের খবর শুনলেই আতকে ওঠেন তারা।
শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর বাজারের ব্যবসায়ী গৌতম কর্মকার বলেন, ‘ঝড়ের খবর শোনার পর থেকে ধান-চাল নিয়ে বাড়ি দৌড়াদৌড়ি করতিছি। গুরুগুলো কি করবো সেই চিন্তা। কারণ একবার আইলায় ভেসে গিছিতো, এজন্যি ঝড়-তুফানের খবর শুনলেই ভয় হয়। গতকাল মাইকিং করার পর থেকে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি।
একই এলাকার ভ্যানচালক মতিয়ার রহমান শেখ বলেন, ‘আকাশে ম্যাঘ আছে আর আমরা ভ্যান চালায়ি ব্যাড়াচ্ছি কনে যাবো কি করবো টেনশনে আছি। বাড়ি বুড়ো-হাবড়া মানুষ আছে তারা হাওমাও করতি। কনে যাবো কি করবো বুজতি পারতি নি।’
আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার কথা বললে তিনি বলেন, আমাগির ওয়ার্ডের মদ্যি আশ্রয় কেন্দ্র নেই। চার-পাঁচ কিলো দূরি আছে তা সেখানে গিলিতো জাগা হবেনা। সেখানে ওই এলাকার লোকজন। আমরা খুব কষ্টের ভেতর আছি।’
হরিনগর বাজার পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি অসিৎ কুমার বলেন, ভয়ংকর ঘূণিঝড় আর জলসাচ্ছ্বের খবর শোনার পর থেকে মানুষ একেবারে দিশেহারা হয়ে গেছে। কি করবে কি হবে তা বুঝে উঠতে পারছে না। হরিনগর বাজার বা বাজারের আশেপাশে কোন সাইক্লোন শেল্টার নাই।
তবে শ্যামনগরের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজন সরকার বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবেলায় ব্যপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ১৫৫টি সাইক্লোন শেল্টার। মজুদ রয়েছে ২০ মেট্রিক টন খাদ্য। জরুরি ভিত্তিতে আরো প্রায় ৬শ মেট্রিক টন খাদ্য শ্যামনগরে পৌছাবে।
তিনি আরো বলেন, মাইকিং করে, পতাকা উড়িয়েসহ বিভিন্নভাবে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে সতর্কবার্তা মানুষের কাছে পৌছানো হয়েছে। জরুরি উদ্ধারেও সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
Leave a Reply