আশাশুনিতে হাইকোর্ট ঘোষিত নিষিদ্ধ ৫২ পণ্যের সয়লাব
আশাশুনি প্রতিনিধি : মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ যে ৫২টি পণ্য ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে পণ্যগুলো বাজার থেকে উঠিয়ে নেওয়ার জন্য সময় নির্দ্ধারণ করে দিয়েছিলেন, আশাশুনিতে সে নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখান হচ্ছে। আশাশুনির হাটবাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বহায় তবিয়তে ঐসব পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় নিম্নমান প্রমাণ হওয়া ৫২টি পণ্য বাজারে থেকে তিন দিনের মধ্যে প্রত্যাহার করে নিতে নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়। গণবিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় বলা হয়, বিএসটিআই এর পরীক্ষায় মানের দিক থেকে ৫২টি পণ্য অকৃতকার্য হয়েছে। হাইকোর্টের রিট পিটিশন নং ৫৩৫০/২০১৯-এর গত ১২ মে-এর আদেশ বলে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩-এর ৪৩ ধারা অনুযায়ী ঐ ৫২টি পণ্য/ব্র্যান্ডসমূহ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তিনদিনের মধ্যে বাজার হতে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়। গণবিজ্ঞপ্তি প্রচারের পরে নির্দেশ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এই ৫২ পণ্য উৎপাদনকারী, সরবরাহকারী, পরিবেশনকারী, পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতা এবং গ্রাহককে উক্ত পণ্যসমূহ উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, পরিবহন, সরবরাহ, ক্রয় ও বিক্রয় এবং ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করা হলো। কিন্তু কয়েক দিন অতিবাহিত হলেও আশাশুনি উপজেলার হাট-বাজারে তেমন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। অধিকাংশ দোকানে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অধিকাংশ পণ্যের বেচাকেনা হতে দেখা যাচ্ছে। সাধারণ ক্রেতাসাধরণের পক্ষে কোন পণ্য নিষিদ্ধ হলো, ৫২টি পণ্যের নাম-পরিচয় কি, জানা বা বোঝার সুযোগ খুবই কম থাকে বা সম্ভব হয়না। তাই ঐ পণ্য হরহামেশা ক্রয়-বিক্রয় করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বললে তানা জানান, এসব নামি দামি কোম্পানীর পণ্যে ভেজাল প্রমানিত হলে অন্য সাধারণ এবং বিশেষ করে আঞ্চলিক বা এলাকা ভিত্তিক কোম্পানী বা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের পণ্যের অবস্থা কি ভাবতে পারছিনা। নিষিদ্ধ হওয়া পণ্যগুলো বিক্রয়ের জন্য তাদের ক্রয় করা অন্যায় ছিলনা। নিষিদ্ধ হওয়ার পর ঐ কোম্পানীগুলোকে মালগুলো ফেরৎ নেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা থাকলে নিরাপরাধী ব্যবসায়ীরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতেন। ক্ষতিকর এসব পণ্যের ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ করতে জেলা-উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য দপ্তর ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
আশাশুনিতে কৃষি পণ্য উৎপাদক
সমিতির নেতাদের প্রশিক্ষণ
আশাশুনি প্রতিনিধি : আশাশুনিতে কৃষি পণ্য উৎপাদক সমিতির নেতাদের জন্য বীজ সংরক্ষণ ও বীজ ব্যাংক রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোবাবার সকালে আশাশুনি কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মিলনায়তনে ও উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে পৃথক দু’টি গ্রুপে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। গণ উন্নয়ন কেন্দ্রের আয়োজনে ক্ষমতায়ন প্রকল্পের আওতায় আয়োজিত প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৬৮ জন কৃষক অংশ নেন। প্রশিক্ষণ প্রদান করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি সাতক্ষীরার জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আলহাজ¦ নূরুল ইসলাম, খুলনা বিশ^ বিদ্যালয়ের কৃষিবিদ টিপু সুলতান, সুশীলনের সহকারী পরিচালক জি এম মনিরুজ্জামান, শাহিন ইসলাম ও উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ। উন্নত ও মান সম্মত বীজ নির্বাচন, সংরক্ষণ, পরিচর্চা, বীজের ব্যবহার প্রণালীসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
আশাশুনিতে হাতুড়ে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায়
ভ্যান চালকের হাত কেটে বাদ দেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞের
আশাশুনি প্রতিনিধি : আশাশুনিতে এক গ্রাম্য ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় ভ্যান চালকের হাতের অবস্থা শোচনাীয় হয়ে পড়েছে। চিকিৎসক নিজের ত্রুটি ঢাকতে ভাল ডাক্তারের কাছে চিকিৎসার খরচ বহনের ওয়াদা দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের বালিয়াপুর গ্রামে। বালিয়াপুর গ্রামের মৃত ছদর উদ্দিন গাজীর পুত্র মইনুরের হাতে টেংরা মাছের কাটা বিধলে যন্ত্রণাকাতর হয়ে বাটরা বাজারে যায়। সেখানে জনারেল প্রাক্টিশনার, আরএমপি ডিগ্রীধারী এবং হাড়জোড়া, বাত, ব্যথা, জয়েন্ট ও মেডিসিন রোগী চিকিৎসক সাইনবোর্ড ধারী গ্রাম ডাঃ মোঃ আক্তারুল ইসলাম তাকে তার চেম্বারে ডেকে নেন। ১৪/১২/১৮ তাং তিনি প্রেসক্রিপশান করে দেন এবং রোগির হাতের কবজির জয়েন্টে একসাথে পর পর ৩টি ইনজেকশান পুশ করেন। টাকা নেন ৭০০ টাকা। অসহায় ভ্যান চালক মইনুর হাতের কোন উপকার না পেয়ে তার কাছে আরও দু’দিন চিকিৎসা নিতে গেলে কেবল ঔষুধ পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। কোন উপকার না পেয়ে অবশেষে মইনুর ২২/২/১৯ তাং অধ্যাপক ডাঃ ইব্রাহিম খলিলের কাছে গেলে ভুল চিকিৎসার বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। চিকিৎসা খরচ যোগাড় করতে মইনুর তার একমাত্র আয়ের সম্বল যন্ত্রচালিত ভ্যান গাড়িটি ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রয় করতে বাধ্য হন। তিনি চিকিৎসা খরচ যোগাতে সর্বস্ব খুইয়ে বসলেও জয়েন্টে ইনজেকশানের কারণে হাত নিয়ে চরম বিপদে রয়েছেন। এব্যাপারে শোভনালী ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি জানতে পেরে গ্রাম ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করলে ভুল চিকিৎসার কথা বুঝতে পেরে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সকল চিকিৎসা খরচ বহনের ওয়াদা করলেও বাস্তবায়ন না করে বাটরা থেকে চেম্বার গুটিয়ে নিয়ে যান। অনেক খোজাখুজির পর অবশেষে শ্রীউলা ইউনিয়নে নাকতাড়া কালবাড়ির কাছে ডাক্তারের নতুন চেম্বারে মইনুর উপস্থিত হলেও ডাক্তার তাদের আগমন বুঝতে পেরে কেটে পড়েন। শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিলের শরনাপন্ন হলে চেয়ারম্যান ডাক্তারের মোবাইলে রিং করে সন্ধ্যার মধ্যে তার সাথে দেখা করার জন্য নির্দেশ দিলে তিনি সেখানে আসবেন বলে জানান। হাতের কব্জি হতে কাটতে হতে পারে এমন আশঙ্খায় ভুগছেন মইনুর। হাতের শেষ পরিণতি কি হবে তা নিয়ে ভীত হয়ে পড়েছেন মইনুর। তার হাত ভাল না হলে খেটে খাওয়া মানুষটির পরিবার পথে বসতে পারে। এব্যাপারে জন প্রতিনিধি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
আশাশুনিতে নবাগত ওসি
আব্দুস সালামের যোগদান
আশাশুনি প্রতিনিধি : আশাশুনি থানায় নবাগত পুলিশ পরির্দশক (ওসি) মোঃ আব্দুস সালাম যোগদান করেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় তিনি আশাশুনি থানায় যোগদান করেন। নবাগত ওসি আবদুস সালাম বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানায় কর্মরত ছিলেন। সেখান হতে তিনি সাতক্ষীরায় যোগদান করলে এসপি মহোদয়ের নির্দেশক্রমে আশাশুনি থানায় যোগদান করেন। আশাশুনি থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার দেবনাথকে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আশাশুনিতে ভ্যান চালকের স্ত্রীকে মারপিট
করে বসবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট
আশাশুনি প্রতিনিধি : আশাশুনি উপজেলার সোনাতনকাটি গ্রামে ভ্যান চালক নজরুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালিয়ে স্ত্রীকে মারপিট, ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। নজরুল তার মায়ের পৈত্রিক ভিটায় ঘরবাড়ি বেধে দীর্ঘ ৮/১০ বছর যাবৎ বসবাস করে আসছেন। প্রতিবেশী লোকমান সানার পুত্র আশরাফুল, ছাইদুল সানার পুত্র কামরুল, মৃত জব্বার সানার পুত্র ইয়াকুব, রজব, আইয়ুব, মৃত ছাইদুল সানার পুত্র মুকুল, আক্তারুল, লোকমান, মরিয়ম খাতুন, রহিমা, নাজমা দীর্ঘদিন যাবৎ ঐ জমির মধ্যে তাদের অংশ আছে দাবী করে ঘরবাড়ি ভেঙ্গে চলে যেতে হুমকী ধামকী দিয়ে আসছিল। বাধ্য হয়ে তারা তাদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে পিটিশন মামলা (৪৫৬/১৯, আশাঃ) করেন। বিবাদীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের সালিশ অগ্রাহ্য ও বিজ্ঞ আদালতের রায়কে তুয়াক্কা না করে তাদেরকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। সাংসারিক ব্যয় নির্বাহের জন্য নজরুল ঢাকায় ভ্যান চালিয়ে থাকে বছরের বড় অংশ। তার স্ত্রী নাজমা ৩ সন্তান নিয়ে বাড়িতে থাকে। এসুযোগে গত ১৪ মে বিকালে তারা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে ঘরবাড়ি ভাংচুর করে। নাজমা এগিয়ে গেলে ব্যাপক মারপিট করে জখম করা হয়। এসময় তারা দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ২০ হাজার টাকা, মূল্যবান কাপড়চোপড়, আসবাবপত্র, হাঁস-মুরগি, ছাগল, সিমেন্ট, ধানসহ অনুমান পৌণে ২ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। ঘরবাড়ি ভেঙ্গে আরও ২ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। স্বাক্ষীরা ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন এবং স্বাক্ষীদের দেখে হুমকীধামকী দিয়ে তারা চলে যায়। গৃহবধু নাজমাকে আশাশুনি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আশাশুনিতে ইয়াবাসহ গ্রেফতার-২
আশাশুনি প্রতিনিধি : আশাশুনি থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২০ পিচ ইয়াবাসহ দু’মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের রোববার আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। পুলিশ সুপার মোঃ সাজ্জাদুর রহমান (বিপিএম) এর দিক নির্দেশনায় আশাশুনি থানার নবাগত পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মোঃ আবদুস সালামের নেতৃত্বে এএসআই মাহবুব হাসান, এসআই বিল্লাল হোসেন শেখ গোয়ালডাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে মোকামখালী গ্রামের মৃত রজব আলি সরদারের পুত্র শাহিনুর রহমান (৪০) ও মৃত জালাল উদ্দীন সরদারের পুত্র আঃ কাদের (৪৫) কে ২০ (বিশ) পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট (এ্যামফিটামিন) সহ হাতেনাতে গ্রেফতার করেন। এব্যাপারে মাদকদ্রব্য আইনে ২৯(০৫)১৯ নয় মামলা রুজু করা হয়েছে।
Leave a Reply