আশাশুনি প্রতিনিধি : আশাশুনি উপজেলার বড়দলে তৌহিদ সানা নামে একজনকে পিটিয়ে জখমের ১০ দিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। নিহতের বোন রীনা রহমান বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। বড়দল গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে সিদ্দিক সানার পুত্র তৌহিদকে (৪৫) গত ২৬ মার্চ বিকাল ৫ টার দিকে একই গ্রামের মৃত শফিকুল সানার পুত্র কাজল সানা, হাফিজুল সানার পুত্র ছাত্রলীগ নেতা নাহিদ রানা বাবু, নূর ইসলাম সরদারের পুত্র ইয়াছিন মোবাইলে বড়দল বাজারের খেয়াঘাটের মুখে ডেকে নেয়। তৌহিদ সেখানে পৌছান মাত্রই প্রকাশ্যে লাঠি ও রড ইত্যাদি নিয়ে তাকে বেদম মারপিট করে। প্রাণ বাঁচাতে তৌহিদ কোন রকমে পাশের শুকুর আলির দোকানের মধ্যে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে আরাফাতের টিভি শো রুমের কাছে পৌছে পায়খানা করে ফেলেন। রাতেই স্থানীয় চিকিৎসককে দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন এম্বুলেন্স যোগে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১০ দিন মূমুর্ষূ অবস্থায় থাকার পর বৃহস্পতিবার বিকাল ৩.৪৫ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃতদেহ বাড়িতে আনা হলেও প্রতাপশালী হত্যাকারীদের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত পরিবার অভিযোগ না করে গোপনে লাশ কবরস্থ করার উদ্যোগ নেয়। পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) বিপ্লব কুমার দেবনাথ খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থানে পৌছে নিহতের পরিবারকে অভয় দিয়ে লাশ ময়না তদন্তের ব্যবস্থা করেন। নিহতের বোন রীনা রহমান বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে থানায় হত্যা মামলা (নং ৫) রুজু করেছেন। আসামীরা এলাকা থেকে উধাও হয়ে গেছে। শুক্রবার বাদ জুম্মা নামাজে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। নিহতের পরিবারের লোকজন ও বড়দল বাজারের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৩ মাস পূর্বে পুলিশ মাদক ব্যবসায়ী তৌহিদকে আটক করে মাদক মামলায় চালান করেন। তার স্বীকারুক্তিতে পুলিশ আরেক মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদার শফিকুল ইসলামের পুত্র কাজলকে আটক করেন। তৌহিদ তার নাম পুলিশকে বলে দেওয়ায় কাজল প্রতিশোধ নিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। কারাগার থেকে ২৬ মার্চ তৌহিদ বাড়িতে ফিরলে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র মাথায় নিয়ে দলবদ্ধভাবে তাকে আক্রমন করা হয়। এসময় উপরোক্ত ৩ জনসহ বারী মালীর পুত্র আইয়ুব মালী রড হাতে মহড়া দিয়েছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। হত্যাকারীরা মাদকের স্বর্গরাজ্য হিসাবে বড়দলকে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করে থাকে। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেনা। প্রকাশ্য দিবালোকে বাজারের উপর নির্মমভাবে পিটিয়ে তৌহিদকে হত্যার ঘটনায় অপরাধীদের ফাঁসির দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সাথে সাথে এলাকাকে মাদকমুক্ত করতে তাদেরসহ ব্যবসার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান অব্যাহত রাখতে জোর দাবি জানান হয়েছে।
Leave a Reply