সাতক্ষীরার উন্নয়নে নাগরিক সমাজের ২১ দফা


নিজস্ব প্রতিনিধি। সাতক্ষীরায় উৎপাদিত খাদ্য শস্যের অর্ধেক ব্যবহৃত হয়। উৎপাদিত মৎস্য সম্পদের এত তৃতীয়াংশ ব্যবহারের পর তা দেশের ঘাটতি এলাকায় চলে যায়। সাতক্ষীরার আম যাচ্ছে ইউরোপ, মাটির টালি যাচ্ছে ইটালিতে। এ ছাড়া হিমায়িত খাদ্য রফতানিতে সাতক্ষীরা বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় জেলা। অথচ এই জেলায় উন্নয়নের ধারা হতাশাব্যঞ্জক।
এমন সব তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি এই জেলার উন্নয়নে ২১ দফা দাবি তুলে ধরে তা এবারের বাজেটে সম্পৃক্ত করার দাবি জানিয়েছে। তারা জানিয়েছেন দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উঠলেও জেলা হিসাবে সাতক্ষীরা পিছিয়ে পড়েছে। বৈষম্যহীন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সাতক্ষীরায় উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম। এ সময় এড. আবুল কালাম আজাদ, মাধব চন্দ্র দত্ত, আনোয়ার জাহিদ তপন, নিত্যানন্দ সরকার , আজাদ হোসেন বেলাল, আলি নুর খান বাবুল প্রমূখ নেতা উপস্থিত ছিলেন।
২০১০ সালের ২৩ জুলাই সাতক্ষীরা সফরকালে প্রধানমন্ত্রী সাতক্ষীরায় রেল সংযোগ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আজও বস্তবায়িত হয়নি উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন সাতক্ষীরায় পাবলিক বিশ^বিদ্যালয় , সুন্দরবনে পর্যটন কেন্দ্র নির্মান এবং দক্ষিণ বাংলার উন্নয়ন সিংহদ্বার ভোমরা স্থল বন্দর ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজকে পূর্নাঙ্গতা প্রদান করতে হবে। নদী ভাঙ্গন , জলাবদ্ধতা এবং আইলা সিডর উপদ্রুত উপকূলীয় এলাকাকে ‘দুর্যোগ প্রবণ এলাকা’ ঘোষনা করে অভিবাসনরোধ করা, পলি পড়ে ভরাট হওয়া নদী খাল খনন , সুন্দরবনে সম্পদ ভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলা, মৎস্য শিল্প উন্নয়নে আরও পদক্ষেপ গ্রহন, সাতক্ষীরা শহরের মধ্যকার প্রাণ সায়ের খাল খনন এবং রাস্তাঘাট সেতু নির্মান ও সংস্কার দরকার। সাতক্ষীরায় ইকোনমিক জোন স্থাপন, সব উপজেলায় ফায়ার স্টেশন স্থাপন, আর্সেনিক ও লবনাক্ততামুক্ত সুপেয় পানি সরবরাহ , জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবেলায় কর্মসূচি প্রণয়ণ এবং কৃষি পণ্য সংরক্ষন জরুরি হয়ে পড়েছে। এছাড়া জনসম্পদের উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন, সব উপজেলার সাথে সরাসরি যোগাযোগ, সকল পুরাকীর্তি ও মুক্তিযুদ্ধের সমুদয় স্মৃতি সংরক্ষন , বিনোদন এবং ক্রীড়া খাত উন্নয়নের ওপরও জোর দেওয়া হয়।
এ ধরনের ২১ টি প্রধান দাবি তুলে ধরে তারা বলেন সাতক্ষীরার ২৪ লাখ মানুষের জীবন মান উন্নয়নে এবং তাদের কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে তা বাস্তবায়ন দরকার। আগামি বাজেটে এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে তা জনস্বার্থে বাস্তবায়ন করা হলে বাংলাদেশের এই দক্ষিন পশ্চিম সীমান্ত অর্থনৈতিকভাবে উজ্জীবিত হয়ে উঠবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *