বিশেষ প্রতিনিধি: শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আতাউল হক দোলন বলেন, শ্যামনগর সবচেয়ে জলবায়ুপরিবর্তনের কারনে ঝুঁকিতে আছে। এখনকার মানুষেরা আকাশে মেঘ সৃষ্টি হলে আতঙ্কে থাকে। উপকুলীয় বেড়ী বাঁধের অবস্থা অত্যান্ত করুন। সামান্য দুর্যোগে বাধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভবনা প্রায় সমগ্র এলাকায়। অথচ বাধ মেরামত বা দুযোগের প্রস্তুতি গ্রহনের জন্য কোন অর্থ অগিম ব্যবহাওে কোন বরার্দ্দ নেই। আমি মনে করি উপকুলীয় সকল ইউনিয়ন পরিষদে প্রাক দুর্যোগের কাজ করার জন্য বরার্দ্দ থাকা জরুরী। আমি আগামী উপজেলা পরিষদের সভায় শ্যামনগর উপজেলা পরিষদে একটি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুকি মোকাবেলার জন্য জলবায়ু তহবিল গঠন করবো। এ তহবিলের অর্থ বাধ ডেবে যাওয়াসহ ভাঙ্গনের উপক্রম দেখা দিলে তাৎক্ষনিক ভাবে চেয়ারম্যানগন যোগাযোগ করলে বাধ সংস্কারের জন্য প্রদান করা হবে। তিনি বলেন, শ্যামনগরকে সকল দুর্যোগের কবল মুক্ত করতে সম্মিলিত পরিকল্পনা গ্রহন করা হবে।’ তিনি জলবায়ু পরিষদকে উপজেলা পরিষদেও মাসিক সমন্বয়সভায পর্যবেক্ষক সদস্য হিসেবে উপস্থিত থাকার ব্যবস্থা করবো।
গত ২৯ এপ্রিল’ সোমবার সকাল ১০টায শ্যামনগর জলবায়ু পরিষদের আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের হলরুমে ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে জলবায়ু ঝুঁকি ও করনীয়’ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জলবায়ু পরিষদের সিনিয়ার সদস্য মুক্তিযোদ্ধা শেখ হারুন-অর-রশিদ। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এস.এম. আতাউল হক দোলন, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা ভাইচ চেয়ারম্যান খালেদা আইয়ূব ডলি, শ্যামগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহসিন-উল-মূলক। সভায় অতিথি হিসেবে ইউনিয়নের প্রধান সমস্যা তুলে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান যথাক্রমে পদ্মপুকুর ইউপির চেয়ারম্যান এ্যাড. এস.এম.আতাউর রহমান, বুড়িগোয়ালিনী ইউপির চেয়ারম্যান ভবতোষ মন্ডল, আটুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান আবু সালেহ, গাবুরা ইউপির চেয়ারম্যান জি.এম.মাসুদুল আলম, রমজান নগর ইউপিরচেয়ারম্যান শেখ আল মামুন, কাশিমাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান এস.এম.আব্দুর রউফ। অতিথি হিসাবে আরো উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নজরুল ইসলাম সহ শ্যামনগর উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের ৩০ জন নারী ও পুরুষ ইউপি সদস্যবৃন্দ। সভায় প্রারাম্ভিক বক্তব্য প্রদান করেন সিএসআরএল এর কেন্দ্রিয় সমন্বয়কারী প্রদীপ কুমার মন্ডল। সমগ্র অনুষ্ঠানের সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন জলবায়ু পরিষদ, শ্যামনগরের সদস্য সচিব আশেক-ই-এলাহী।
সভায় উপস্থিত ইউপি সদস্যবৃন্দ স্ব-স্ব ইউনিয়নের অগ্রাধীকার ভিত্তিক প্রকল্প গ্রহণ ও জলবায়ু সুশাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে দাবি জানায়ে বলেন, এ অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। বিশেষ করে বেঁড়ী বাঁধ গুলোর খুব খারাপ অবস্থা। এই বেঁড়ী বাঁধ রক্ষনাবেক্ষনের জন্য জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার তা না হলে সরকারের যত উন্নয়ন এ অঞ্চলের জন্য করা হয়, তা সব নষ্ট হয়ে যাবে। খাওয়ার পানির আরো ব্যাপক সংকট দেখা দিবে।
সভায় এলাকার বাঁধের করুনচিত্র ভিডিও ডকুমেন্টরি তৈরি করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপনের বিষয়ে প্রধান অতিথি বক্তব্যে সকলে একমত পোষন করেন। সভায় অগ্রাধীকার ভিত্তিতে স্থানীয় সমস্যা চিহ্নিত করে ও জলবায়ু সুশাসন প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে ১২ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ এক যোগে আগামী ২৬ মে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা ও ১৭ ও১৮ জুলাই জলবায়ু মেলা সম্মিলিত ভাবে করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
Leave a Reply