সংবাদ দাতা: হত্যা ও নাশকতাসহ আটটি মামলার আসামী সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার দারুল উলুম চৌমুহুনী ফাজিল মাদ্রাসার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ মনিরুজ্জামান গত রোববার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
দারুল উলুম চৌমুহুনী ফাজিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হক সরদার জানান, নয় বছরে দাখিল পাশ করা অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী ২০১২ সালের ৩১ মার্চ ফতেপুর গ্রামের মিতা রানী বালা, লক্ষীপদ মণ্ডলসহ বিভিন্ন বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মামলায় ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর জেল হাজতে যান। এক মাস ১২দিন পর তিনি জামিনে মুক্তি পেলেও বিধি মোতাবেক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া তিনি ২৯১২ সালের ৩১ মার্চ আব্দুল হাকিম এর বাড়ি ভাঙচুর , ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসয়ংযোগ, ফতেপুর হাইস্কুল ও প্রাইমারী স্কুলে ভাঙচুর মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী। এ ছাড়া তিনি বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মানবাধিকার কর্মী মোসলেম আলী হত্যা মামলার আসামী। তার বিরুদ্ধে শ্রীধরকাটি গ্রামের ইউপি সদস্য ছিদ্দিকুর রহমানের উপর হামলা, গড়ের কান্দায় পুলিশের সঙ্গে বনদুকযুদ্ধে আশরাফুল ইসলাম বাবু আহত হওয়ার মামলা, কালিগঞ্জের নলতা ও কালিকাপুরে নাশকতাসহ মোট আটটি মামলা রয়েছে। তার দায়েরকৃত উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ও ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ি প্রতিষ্ঠানে যোগদানের কথা বলে চিঠি দিলেও তা না মেনে প্রতিষ্ঠানে পাঁচ বছর না আসার অভিযোগ রয়েছে। এরপরও তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্য জামায়াত শিাবরের পৃষ্টপোষক সিরাজুল ইসলাম ও রঘুনাথপুর গ্রামের রেজাউল করিমকে নিয়ে গত ২৮ মার্চ মাদ্রাসায় এসে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে হুমকি ধামকি দেন। তাকে অধ্যক্ষের চেয়ার না দিলে অফিসরুম ভাঙচুর করার হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গত ৩১ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ি থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। ডায়েরীর খবর পেয়ে হেলালীসহ তাদের পক্ষের লোকজন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উপপরিদর্শক জিয়াউর রহমান সাধারণ ডায়েরীর তদন্ত করতে বুধবার মাদ্রাসায় এলে তার সামনে হুমকি ধামকি দেন সিরাজুল ইসলাম ও রেজাউল করিম।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে দারুল উলুম চৌমুহুনী ফাজিল মাদ্রাসায় গেলে আব্দুল কাদের হেলালী, সিরাজুল মেম্বর ও রেজাউল করিমকে শিক্ষকদের রুমে ঢুকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে দেখা যায়। কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক জিয়াউর রহমান সেখানে ইউনিফর্ম ছাড়া জিডি তদন্তে এসেছেন বলে দেখা যায়।
জানতে চাইলে আব্দুল কাদেতর হেলালী বলেন, তিনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বঞ্চনার শিকার। তাই সিরাজুল ইসলাম ও রেজাউল করিমের সহযোগিতায় চাকুরি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, বিষয়টি নিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর আব্দুল কাদের হেলালীকে সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বা আদালতের আদেশ ছাড়া প্রতিষ্ঠানে না আসার জন্য বলা হয়েছে। এর ব্যত্তয় হলে আব্দুল কাদের হেলালীসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply