সেলিম হায়দার ॥
এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে সাতক্ষীরা তালা উপজেলায় । উপজেলার বিলগুলোতে যে দিকে চোখ যায় শুধু ধান আর ধান। সব এলাকায় সবুজ ধানের শীষ দোল খাচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জমির ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক দিন গুণছে। গত কয়েকদিনের কালবৈশাখী ঝড় আর বৃষ্টিতে কৃষকের ক্ষেতের ধানের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। কৃষকের সকল পরিচর্যা শেষে ধান তোলার সময় শিলা বৃষ্টি কৃষকের হাসি ম্লান করে তুলেছে। গত মঙ্গলবার উপজেলার উপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের মাঠের ধান হেলে পড়েছে। অনেক জমিতে পানি জমে ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছে। বিগত বছরের চেয়ে এ বছর অধিক জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর চাষাবদের শুরুতে বৃষ্টিপাত কম থাকার কারণে উপজেলার সকল এলাকায় ব্যাপকহারে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। অনেক নিচু এলাকার জমিতেও চাষাবাদ হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন বিলে বোরো চাষে সবুজ ফসলের সমারোহ। উপজেলার শতকরা ৮০জন কৃষকই সরাসরি কৃষি কাজের সাথে জড়িত। কৃষি কাজ করেই তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৯হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর উপজেলায় জলাবদ্ধতা না থাকায় উপজেলার ধানদিয়া, নগরঘাটা, সরুলিয়া, কুমিরা, খলিষখালী, তেঁতুলিয়া তালা, জালালপুর, মাগুরা, খলিলনগর, খেশরাসহ উপজেলায় সর্বত্রই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে।
তালা উপজেলার নলতা গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া ও প্রকৃতির কারণে এবছর আমাদের ব্লকে গতবারের চেয়ে বর্তমানে ধান ভাল বুঝা যাচ্ছে। এ বছর আমার ব্লকে ব্রি-ধান ২৮ বেশ ফলেছে। আবহাওয়া প্রতিকুলে থাকায় বেশ দূচিন্তায় আছি, ধান ঘরে না উঠা পর্যন্ত চিন্তার শেষ নেই। অপরদিকে গোপালপুর গ্রামের কৃষক গণেশ রায় জানান, গত বছরের তুলনায় ধান ভাল না তবে রোগ বালাই কম আছে। হাজরাকাটি গ্রামেে আফজাল সরদার জানান, এবছর আমাদের এলাকায় ধানের ফলন খুব ভাল দেখা যাচ্ছে, যদি এভাবে শেষ নামে আবহাওয়া ভাল থাকে তাহলে বাম্পার ফলন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, এবছর আবহাওয়া ভাল থাকার কারনে অনেক এলাকায় চাষাবাদ হয়েছে। বৃষ্টি ও ঝড়ে কিছু কিছু এলাকায় ধানের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার সকল এলাকায় কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করায় রোগ বালাই কিছুটা কম আছে। আগাম পরামর্শ দেওয়ায় ব্লাস্ট রোগ তেমন চোখে পড়েনি।
তবে মাগুরা ও জালালপুর এলাকায় কিছু জমিতে রোগ দেখা দিয়েছে তবে তা চোখে পড়ার মত না। এবছর উপজেলায় ব্রি-ধান ২৮ বেশি পরিমাণ জমিতে চাষাবাদ হয়েছে তাছাড়া ৬৭, বিনা-১০ ও কিছু এলাকায় লবণ সহিষ্ণু ধান চাষাবাদ হয়েছে।
Leave a Reply