নিজস্ব প্রতিনিধি: ধ্বংসের মুখে পড়েছে দেশের জলাভূমি। এর ফলে বিভিন্ন প্রজাতি অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। জলাভূমি ধ্বংসের কারণে কমে যাচ্ছে বনভূমিও। এসবের বিরুপ প্রভাব পড়ছে জলবায়ুর ওপর। অথচ জলবায়ূ পরিবর্তনজনিত ক্ষয় ক্ষতি মোকাবেলায় জলাভুমি সুরক্ষা জরুরি হয়ে পড়েছে। শনিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে বিশ^ জলাভূমি দিবস পালন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আয়োজকরা। তারা বলেন জলাভূমি রক্ষায় এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি আরও বেড়ে যাবার আশংকা রয়েছে। বেসরকারি সংস্থা এনসিআরবি (নেটওয়ার্ক ফর ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট বাংলাদেশ) এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে বলা হয় জাতিসংঘ প্রণীত জলাভূমি সনদ ১৯৭৫ সাল থেকে কার্যকর হয়। বাংলাদেশ এই সনদে স্বাক্ষরকারী দেশগুলির অন্যতম। ১৯৭১ এর ২ ফেব্রুয়ারি ইরানের রামসার শহরে এ বিষয়ে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ১৯৯২ সালে রামসার সনদের স্বাক্ষর করে সুন্দরবন এবং টাঙগুয়ার হাওড় এই দুই জলাভূমিকে এর অন্তর্ভক্ত করে। আয়োজকরা বলেন জলাভূমি আমাদের প্রাণিকূলকে পানি যোগায়। বন্যা খরা ও নানা দুর্যোগ থেকে আমাদের সুরক্ষা দেয়। প্রতিবেশ থেকে অধিকতর কার্বন ধরে রেখে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অবদান রাখে জলাভূমি। এসব জলাভূমি নিঃশেসিত হলে প্রচুর গ্িরণ হাউস গ্যাস নিঃসরণ ঘটবে। এরই মধ্যে বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডেরে পরিমান আগের তুলনায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ^ব্যাপী দুর্যোগও বেড়েছে ৩৫ ভাগ। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় জলাভূমির সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কারণে প্রাণিকূল সবচেয়ে বড় হুমকির মুখে পড়েছে। এর কারণে দুর্যোগের সংখ্যা বেড়ে গেছে। তারা আরও বলেন নদী নালা খাল বিল প্রকৃতির পানি ধরে রাখে। শুস্ক মওসুমে এই পানি কৃষি খামারে ব্যবহৃত হয়। বর্তমান সময়ে জলাভূমিসমূহ অস্তিত্ব সংকটে পড়ায় অতিবৃষ্টির পানি স্থলভূমিতে ছড়িয়ে বন্যা ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। বাংলাদেশের ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটার উপকূলীয় জলাভূমি অর্থনৈতিক , বানিজ্যিক এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশবান্ধব ভূমিকা পালন করে আসছে। এসব জলাভূমিতে দেড় হাজার প্রজাতির মেরুদন্ডি প্রাণি, ৭৫০ প্রজাতির পাখি এবং ৫০০ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। এরই মধ্যে দেশের ২১ লাখ হেক্টর জলাভূমির বিলুপ্তি ঘটেছে জানিয়ে তা রোধকল্পে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানানো হয়। এ জন্য কয়েকটি দাবিও তুলে ধরেন আয়োজকরা। এর মধ্যে রয়েছে সুন্দরবন ও সংলগ্ন এলাকায় ক্ষতিকর প্রকল্প ও শিল্প স্থাপনা বন্ধ করে দেওয়া, দেশের সকল জলাভূমিকে রামসার সনদের তালিকায় অন্তভূক্ত করা , জলাভূমির ইজারা বন্ধ, জলাভূমি সংরক্ষনে আইন প্রনয়ন এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সংগঠনের সভাপতি অপরেশ পাল। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন শেখ আফজাল হোসেন, খুরশীদ জাহান শীলা, রিয়াজুল ইসলাম, শংকর মন্ডল, উত্তম মজুমদার প্রমুখ।
Leave a Reply