আশাশুনি প্রতিনিধি: আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নে ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল চালককে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ গুম ও মটর সাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনার ২২ ঘণ্টার মধ্যে লাশ উদ্ধার ও হত্যাকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের মধ্যম একসরা দাখিল মাদরাসার লেট্রিনের সেফটি ট্যাংকির মধ্য থেকে বৃহস্পতিবার রাত্র ২ টার দিকে লাশ উদ্ধার করা হয়। আনুলিয়া ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের খোকন গাজীর ছেলে নিহত জাহাঙ্গীর হোসেন (২৪) ভাড়ায় চালিত মটর সাইকেল চালক। গ্রেফতারকৃতরা হলো, আশাশুনি উপজেলার মধ্যম একসরা গ্রামের আব্দুল্লাহ কারিকরের ছেলে রবিউল ইসলাম(৩০), বশির সানার ছেলে আব্দুল আজিজ সানা (৫০), সালামুদ্দিন (খোকন) কারিকরের ছেলে আল আমিন কারিকর(৩০) ও দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের বাদল গাজীর ছেলে শফিফুল ইসলাম (৪০)। নিহতের স্ত্রী সাথী খাতুন জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে মধ্যম একসরা গ্রামের আব্দুল আজিজ, আল আমিন কারিকর ও রবিউল ইসলাম একসরা লঞ্চঘাটে যাওয়ার কথা বলে জাহাঙ্গীরের মটর সাইকেল ভাড়া করে নিয়ে যায়। তারপর থেকে আমার স্বামী বাড়ি না ফেরায় পরদিন সন্ধ্যায় স্বামীর কোন খোঁজখবর না পেয়ে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ আ. সাত্তারকে জানালে, যাত্রী রবিউলকে ডেকে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটনের কাছে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল হত্যার কথা স্বীকার করে। পুলিশে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থানে পৌঁছে তাদেরকে গ্রেফতার করেন ও সেফটি ট্যাংকির মধ্য থেকে লাশ উদ্ধার করেন। লাশ উদ্ধারের সময় আটককৃত রবিউল ইসলাম শতাধিক জনতার সম্মুখে তাদের ছিনতাই ও হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন। ছিনতাইকৃত রেজিস্ট্রিশন বিহীন মোটর সাইকেল হিরো ডিলাক্স ১০০সিসি যার ইঞ্জিন নং এইচএ-১১ই জেজেজিএইচ-০০৭২৮ ছিনতাই ও হত্যার সাথে জড়িত শফিকুল ইসলামের বাড়ী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে নিহতের ভাই বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন যার মামলা নং ০৭ (০২) ১৯। আটককৃতদের স্বীকাররোক্তি অনুযায়ী জানা গেছে, ৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার সময় রাজাপুর গ্রামের জনৈক বিল্লাল শেখের দোকানের সামনে থেকে তারা জরুরি কাজ দেখিয়ে মোটর সাইকেলটি ভাড়া করেছিলেন ছিনতাইকারীরা। বেশ কয়েক ঘণ্টা এদিক সেদিক ঘুরাঘুরির এক পর্যায় ওই দিন রাত আনুমানিক ১১টার সময় মধ্যম একসরা দাখিল মাদ্রাসার সামনে ইটের সোলিং রাস্তার উপর উপস্থিত হলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আজিজ গাজী গাড়ীটি গতিরোধ করে তার হাতে থাকা দড়ি দিয়ে তার গলায় ফাঁস আটকে দেয়। এরপর রবিউল ও আজিজ দুদিক থেকে দড়ি টেনে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। এ সময় আলামিন চালক জাহাঙ্গীরকে জাপটে ধরে রাখে। এরপর জাহাঙ্গীরের লাশ মাদ্রাসার সেফটি ট্যাংকের মধ্যে ফেলে রাখে। ততপর রবিউল ছিনতাইকৃত মটরসাইকেলটি শফিকুলের বাড়িতে নিয়ে রেখে আসে। নিহত চালকের ভাই আলমগীর হোসেন জানান, আমিসহ আমরা আমার ভাইয়ের হত্যাকারিদের ফাঁসি চাই। আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
Leave a Reply