শ্যামনগর প্রতিনিধি ঃ শ্যামনগরে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত কমিউনিটি ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পানি, উন্নত স্যানিটেশন ও হাইজিন ব্যবস্থা উন্নয়নকল্পে সরকারী উদ্যোগে স্থানীয় সরকারের পাশাপাশি বিগত এক বছর ধরে ওয়াটার এইড বাংলাদেশের সহযোগীতায় কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তর।
রুপান্তর সংস্থা বিগত বছরে তাদের কর্মকান্ড সমূহ বিস্তারিত জানতে চাইলে প্রকল্প ব্যবস্থাপন জনাব, সৈয়দ আসাদুল হক ও রুপান্তরের ইউএস মোঃ শাহিনুর ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ তথা দক্ষিনাঞ্চলের সব থেকে বড় উপজেলা শ্যামনগর। উপকূলের একেবারে কাছাকাছি হওয়ায় এই উপজেলায় দীর্ঘ দিন ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। সেই সাথে দূর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এই উপজেলার সুবিধাবঞ্চিত জনগনের জন্য ওয়াশ বরাদ্দ বড়ই অপ্রতুল। দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত কমিউনিটি ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পানি, উন্নত স্যানিটেশন ও হাইজিন ব্যবস্থা উন্নয়নকল্পে সরকারী উদ্দোগে স্থানীয় সরকারের পাশাপাশি বিগত এক বছর ধরে ওয়াটার এইড বাংলাদেশের সহযোগীতায় কাজ করে যাচ্ছে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তর। এরই মধ্যে এই উপজেলার ১২ টিইউনিয়নের বিভিন্ন কমিউনিটিতে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৪টি নিরাপদ পানির স্থাপনা স্থাপন ও মেরামত করা হয়েছে যার আওতায় প্রায় ১৪ হাজার উপকারভোগী নিরাপদ পানি পাচ্ছে। নিরাপদ পানি সংগ্রহের জন্য রয়েছে আলাদা করে পানি সংগ্রহের স্থান। এসকল কাজের পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাদের সাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে ব্যবসায়িক ভিত্তিতে ২ টিরিভার্স ওসমোসিস (নিরাপদ পানির স্থাপনা) তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া মাধ্যমিক পর্যায়ের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৬টি উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে যার আওতায় প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থার সুবিধা পাচ্ছে। এই স্থাপনাগুলোতে মেয়েদের জন্য রয়েছে উন্নত মাসিক স্বাস্থ্য ব্যাবস্থাপনার সুবিধা যে কারণে ছাত্রীরা তাদের মাসিক চলাকালীন সময়েও স্কুলে আসছে। প্রতিটি স্থাপনায় আছে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। ওয়াশ স্থাপনাগুলো রক্ষনাবেক্ষন করার জন্য আছে ব্যবস্থাপনা কমিটি ও কেয়াটেকার। প্রতিটি কাজেই কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকারের সমপৃক্ততা রয়েছে। স্থাপনাগুলো সত্যি মনোমুগ্ধকর ও চমৎকার এবং এর ভবিষৎ রক্ষানাবেক্ষনের জন্য কমিউনিটি ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনীয় তহবিলের ব্যবস্থা করেছে। একই সাথে প্রায় ৫ হাজার কমিউনিটি জনগণেকে ও ৯০০০ স্কুল শিক্ষার্থীকে হাইজিন বিষয়ে সচেতন করেছে। ওয়াশ বিয়য়ে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কমিউনিটি ও স্টেকহোল্ডারদের প্রশিক্ষনও প্রদান করা হয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন উপকারভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায় এই সেবা গুলোর মাধ্যমে তাদের ওয়াশ বিষয়ক মৌলিক চাহিদার অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছে। তারা আরো বলেন নিরাপদ পানি ব্যবহার করার কারনে বর্তমানে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রাদূর্ভাব কম দেখা দিচ্ছে। পরিশেষে তারা এই স্থাপনা গুলোর রক্ষনাবেক্ষণ ও সঠিক ব্যবস্থাপনার প্রতিশ্রুতি ব্যাক্ত করে ওয়াটার এইড ও রূপান্তকে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানায়।
Leave a Reply