নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘুষ, দুর্নীতি ও সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায়কারী সাতক্ষীরা জেলা রেজিস্ট্রার ও সহযোগীদের শাস্তির দাবিতে সাতক্ষীরা মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, সাতক্ষীরা ভূমিহীন ঐক্যপরিষদের সভাপতি মোঃ কওছার আলী। সাতক্ষীরা জেলা ভূমিহীন ঐক্যপরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের আহবায়ক ও জজকোর্টের অতিরিক্ত পিপি এড. ফাহিমুল হক কিসলু। সাতক্ষীরা জেলা ভূমিহীন ঐক্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সহ-সভাপতি মফিজুর রহমান, আরমান আলী, অর্থ সম্পাদক মোঃ মনিরুজ্জামান, সভানেত্রী মারফা খাতুন, বাবলু হাসান প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ঘুষ ও অনিয়ম দুর্নীতির এবং জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে দলিল রেজিষ্ট্রি করে লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে জেলা রেজিষ্ট্রার মুন্সি রুহুল ইসলাম ও তার সহযোগিরা। ঘুষের টাকা আদায় করার জন্য নকল নবিশ আবুল কাশেমসহ কয়েকজন ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়েছেন। জেলা রেজিস্টারের কথামত প্রতিদিন প্রায় ১০লক্ষ টাকা জনসাধারণের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের মিশন বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে ও্ই চক্র। জেলা ও সাব রেজিষ্ট্রারের নেতৃত্বে বর্তমানে রেজিষ্ট্রি অফিস এখন অনিয়ম দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
সাতক্ষীরা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অনিয়ম ও দুর্নীতির শির্ষে থাকা কয়েকজন দলিল লেখক এর মধ্য হতে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে গত ইং ৩জুলাই ১৮ তারিখে দূর্নীতি দমন কমিশনের ৯৫ নং গণশুনানি অনুষ্ঠানে সাতক্ষীরা সদর রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতিসহ প্রভাবশালী ডজন খানিক দলিল লেখক এর নামে অভিযোগ করা হয়। তার মধ্যে শীর্ষে থাকা দলিল লেখক মনিরুজ্জামান মনি (লাইসেন্স নং-০৯/০৬) আবুল কাশেম, রুহুল কুদ্দুস, এম এম. মজনু, শেখ মফিজুর রহমান, শেখ মাহবুুব উল্লাহ, হায়দার আলী, ওমর ফারুক, শেখ ইসতিয়ার, নাছির উদ্দীন, আল মাহমুদ সহ আরো কয়েকজন মিলে সাতক্ষীরা সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের সরকারি রাজস্ব ফাকির আখড়ায় পরিনত করে। ওই সব দলিল লেখকদের কাছ থেকে সাপ্তাহিক মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহন করেন জেলা রেজিস্ট্রার।
অন্যদিকে জন্ম তারিখ জালিয়াতি করে চাকুরিতে বহাল রয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা রেজিষ্ট্রার মুন্সি রুহুল ইসলাম। অথচ গত ১ বছরে পূর্বেই তাকে অবসরে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু জন্ম তারিখ জালিয়াতি করে চাকুরিতে বহাল রয়েছেন তিনি। চাকুরির প্রথম জীবনের খেদমত বইএর চাকুরির অনুলিপির কপিতে সিরিয়াল নং ২৩২ এ তিনি তার জন্ম তারিখ উল্লেখ করেছিলেন ৩০ নভেম্বর ১৯৫৮ সাল। সে অনুযায়ী তার অবসরে যাওয়ার কথা গত ২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকুরির মেয়াদ ১ বছর বৃদ্ধি পাওয়ায় তার অবসরে যাওয়ার কথা ২৮ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে সাতক্ষীরা জেলা রেজিষ্ট্রার ২০১৩ সালের একটি খেদমত বইতে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে ১৯৫৮ সালের পরিবর্তে ১৯৫৯ সাল করেছেন। আর ওই জাল জন্ম তারিখ দেখিয়ে তিনি চাকুরিতে বহাল থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন। বক্তারা অবিলম্বে জেলা রেজিষ্ট্রার ও তার সহযোগিতাদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আরো বৃহত্তর কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
Leave a Reply