নিজস্ব প্রতিনিধি:
ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ৪৫ নং সুকদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টি ২০০১ সালে সংস্কার করা হয়। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণীতে ৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।
সুকদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোবিন্দ চন্দ্র সানা জানান, রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সম্প্রতি জাতীয়করণ করার পর তিনিসহ অন্যান্য শিক্ষকদেন জীবনযাত্রার মানউন্নয়ন ঘটতে থাকে। সম্পূর্ণ চিংড়ি ঘের অধ্যুষিত এ বিদ্যালয়ে ৮০ জনের বেশি শিক্ষার্থী থাকলেও ২০০৮ সালে সরস্বতী বাছাড় নামে এক শিক্ষিকার নিয়োগ না দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয়ভাবে বিরোধ দেখা দেওয়ায় সুকদেবপুর পশ্চিম পাড়ার কয়েকজন শিক্ষাথীকে তারা অন্যত্র ভর্তি করায়। এমনকি ওই পাড়ার কোন শিক্ষার্থী তাদেরন স্কুলে আসতো না। বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার আগামি বছর থেকে শিক্ষার্থী বাড়বে।
তিনি আরো জানান, লবনাক্ততার কারণে এ বিদ্যালয়ের সকল কক্ষসমূহ ভঙ্গুর অবস্থায় দা দাঁড়িয়ে আছে। অফিস কক্ষে বসা যায় না। সহকারি শিক্ষক সুশান্ত ঢালী, মঙ্গল ঢালী ও সরস্বতী বাছাড় ছাড়াও ন্যাশনাল সার্ভিসে কর্মরত তপন মণ্ডল, তার স্ত্রী রেনুকা মণ্ডল ও বিশ্বজিৎ সরকারকে নিয়ে তারা কোন রকমে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে গত শনিবার সুকদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেয়ে দেখা গেছে ব্যবহার অনুপযোগী শ্রেণীকক্ষ গুলোর প্রত্যেকটিতে নামমাত্র তিন থেকে চারটি বেঞ্চ রয়েছে। শিক্ষকদের জন্য নিধারিত কক্ষটিতে কোন চেয়ার টেবিল নেই। দরজা ও জানালা ভেঙে পড়ছে। খসে পড়ছে দেয়ালের প্লাস্তার। একটি বাথরুম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে বাথরুমের ট্যাঙ্কিটি একটি ঝুড়ি দিয়ে ঢাকা। যাহা স্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরুপ।
তবে কয়েকজন অভিভাবক জানালেন, বিদালয়ের খাতায় যেভাবে শিক্ষার্থীদের নাম আছে কাগজে কলমে সংখ্যা অনেক কম। ভগ্নদশার কারণে কখন ছাদ ধ্বসে পড়ে তা নিয়ে আতঙ্কে থাকেন। ভবনটির বেহাল অবস্থার কারণে অনেকেই সন্তানদের দূরবর্তী স্কুলে ভর্তি করিয়ে থাকে। সদর উপজেলার কোন স্কুলে বিষ্কুট না দেওয়ার কারণে এ বিদ্যালয়ের গরীব শিক্ষার্থীরাও সমস্যায় পড়েছে। তবে এ বিদ্যালয়ে সোলার প্যানেল ও বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মধু সুধন ঢালী জানান, বিদ্যালয়ের বার্ষিক ফলাফল আশানুরুপ। ভাল ফলাফল করানোর জন্য শিক্ষকরা আন্তুরিকতার সঙ্গে কাজ করে থাকেন। খুব শীঘ্রই বিদ্যালয়টি’র নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবে। প্রায় দেড় কিলোমিটার কাচা রাস্তা ইট সোলিং করা হবে আগামি বছরে।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সহকারি প্রাথািমক শিক্ষা কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম জানান, সাইক্লোন সেন্টারসহ সুকদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই মাপ জরিপ শেষ হয়ে গেছে। আগামি ফেব্র“য়ারি অথবা মার্চ মাস থেকে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।
Leave a Reply