1. faysal.ce@gmail.com : dakshinermashal :
  2. abuhasan670934@gmail.com : Hasan :
  3. sakalctc.bd@gmail.com : Nityananda Sarkar : Nityananda Sarkar
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
২৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
Latest Posts
📰বিষ্ণুপুর আস্থা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল, ডেন্টাল ও ব্লাড গ্রুপিং ক্যাম্প📰প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত! হামজার মাথা, সোহেলের বুলেট — জাতীয় স্টেডিয়ামে ‘ফুটবল মহোৎসব📰জাতীয় বাজেট ঘোষণা, ঘোষণার পরই বাজারে আগুন! দাম বাড়বে এসব জিনিসের📰জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য বরাদ্দ ৪০৫ কোটি টাকা📰আশাশুনিতে বজ্রপাতে রাজমিস্ত্রী নিহত📰প্রশাসন জানে, তবু নীরব! ভাঙা এল্লারচর সেতুতে চলছে জীবনের ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত📰সরকারি চাল গুদামে নয়, বাজারে,শ্যামনগরে ৭৫ বস্তা চাল জব্দ📰জেলের চাল ৫৬ কেজির জায়গায় ৩১ কেজি! বাকিটা গেল কোথায়?📰বিদায় বললেন ম্যাক্সওয়েল📰জুলাই সনদ ঘোষণার আগে  নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নয়: নাহিদ ইসলাম

সাতক্ষীরায় অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটাতে পারে বাসক পাতা

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : সোমবার, ১ অক্টোবর, ২০১৮
  • ৯৯৩ সংবাদটি পড়া হয়েছে

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: বাড়িতে-বাড়িতে ঘেরা বেড়া দেওয়ার কাজে বেশ জনপ্রিয় বাসক গাছ। গ্রাম জুড়ে এর ছড়াছড়ি। এক ধরনের বিকট দুর্গন্ধের জন্য এর পাতায় গবাদি পশু মুখ দেয় না। ফলে সহজেই জমি ও বাড়ি ঘেরার কাজ চলে। ঔষধি গুনসম্পন্ন এই বাসক পাতা এখন ঘুরিয়ে দিচ্ছে গ্রামীন মানুষের ভাগ্যের চাকা ।

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে বাসক পাতার কদর রয়েছে বেশ। সর্দি কাশি সারাতে সবুজ বাসক পাতা রস করে খেলে উপকার পাওয়া যায় এ বিশ্বাস রয়েছে এখনও । কিন্তু এই পাতা যে মানুষের অর্থনৈতিক চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে তা ছিল ধারনার বাইরে।দেশের বিভিন্ন স্থানে চাষ হচ্ছে বাসক উদ্ভিদের। ভারতেও বাসক উদ্ভিদের ব্যাপক চাষ রয়েছে। সাতক্ষীরাতে এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে ঔষধিগুণ সম্পন্ন বাসক। ধারণা করা হচ্ছে অর্থনৈতিক বিপ্লব ঘটাতে পারে এ বাসক।

সাতক্ষীরার ফিংড়ি গ্রামের হাফিজুর রহমান জানান আগে মনে করতাম আবর্জনা। এখন তা সংগ্রহ করে বিক্রি করছি। এতে লাভ হচ্ছে বেশ। একই গ্রামের আমিরুন বেগম জানান তিনি প্রতি কেজি কাঁচা পাতা ৫ টাকা কেজি দরে কিনে শুকিয়ে বিক্রি করছেন ৩৫ টাকায়। সাতক্ষীরায় উৎপাদিত এসব বাসক পাতা এখন ওষুধ কোস্পানিগুলি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এর ঔষধিগুন এতো বেশি যে এই পাতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে কাশির সিরাপ। বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা তরল করে নির্গমে সুবিধা করে বলে সর্দি, কাশি এবং শ্বাসনালীর প্রদাহ নিরাময়ে বেশ উপকারী। আয়ুর্বেদ চিকিৎসাও বাসক পাতার ব্যবহার রয়েছে। 

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার মাটি বাসক চাষের জন্য উপযোগী। তাই এ অঞ্চলে বাসক উদ্ভিদ জন্মায় প্রচুর পরিমাণে। ঘেরা বেড়ায় ব্যবহার করা এই উদ্ভিদের পাতা ছিড়লে গাছ মরে যায় না। আবারও নতুন নতুন পাতা গজায়। সারা বছর চলে নতুন পাতা গজানো। ডাল কেটে মাটিতে পুতে দিলে হয়ে ওঠে নতুন গাছ। আর্দ্র ও সমতল ভূমিতে এই উদ্ভিদ জন্মায়। বিকট গন্ধের কারণে এতে ছত্রাক জন্মায়না। এমনকি পোকা মাকড়ও ধরে না। এই পাতা দিয়ে ফল মুড়ে রাখলে তা ভাল থাকে।

বাসক পাতা সংগ্রহকারী দলের নেতা বিউটি বেগম বলেন, ‘আমরা কাঁচা পাতা রস করে খাই। আগে এর কোনো অর্থনৈতিক গুরুত্ব দিতাম না। এখন সংগ্রহ করে বিক্রি করছি।’তিনি বলেন, ‘বাড়ির বেড়ার গায়ে থাকে। গাছ বাড়েও বেশ। এখন তা তুলে এনে শুকিয়ে বিক্রি করছি। এতে আমরা লাভবান হচ্ছি। বাসক লাগাতে পৃথক জমির দরকার নেই।’ফিংড়ি গ্রামের সাবিনা খাতুন, ‘বীনা দাস, জোহরা খাতুন, অপর্না দাস, রোহেলা খাতুন, আনোয়ারা বেগম , রেবেকা সুলতানা, নাসিমা খাতুন, নাজমা বেগম, হাফিজুল ইমলাম, আমিনা খাতুন জানান বাসক পাতা সংগ্রহ করে তাদের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে নিচ্ছেন।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নের কাঁচাপাকা রাস্তার ছয় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে বিপুল পরিমান বাসক উদ্ভিদ। এখানকার কমপক্ষে দশ হাজার বাসক গাছ ব্যবহৃত হচ্ছে জমির চারধারে কিংবা বাড়ির ঘেরা বেড়ায়। প্রতি বছর একশ’ টন সবুজ পাতা সংগ্রহ হচ্ছে এসব গাছ থেকে। বছরে  এ থেকে পাওয়া যাচ্ছে প্রায় ২৬ টন শুকনো পাতা। দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়ও বানিজ্যিকভাবে বাসক উদ্ভিদের চাষ শুরু হয়েছে।

পানিউন্নয়ন বোর্ড প্রতিনিধি মো. শামীম আলম জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প ব্লু গোল্ডের আওতায় ২৮৫ জন নারী ফিংড়ি ইউনিয়নে বাসক পাতা সংগ্রহ করছেন। তাদের সংগৃহীত পাতা কিনে নিচ্ছে কয়েকটি ওষুধ কোম্পানি।
তিনি বলেন, ‘বাসক পাতা যেমন আনতে পারে অর্থনৈতিক বিপ্লব, তেমনি বিজ্ঞান সম্মত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই পাতা দেশের ওষুধ শিল্পে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখতে পারছে।’

স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর প্রতিনিধি মো. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ‘আমরা শুকনো বাসক পাতা কিনে নিচ্ছি। জার্মান প্রযুক্তির মাধ্যমে বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতিতে বাসক পাতা কাশির সিরাপ তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। দিন দিন এর চাহিদাও বাড়ছে।’সাতক্ষীরার গ্রামে এরই মধ্যে বেশ সাড়া পড়ে গেছে বাসক পাতা নিয়ে। গ্রামবাসী নিজ-নিজ বাড়ির চারপাশে বাসক গাছ লাগাচ্ছেন। গ্রামের দরিদ্র নারীরা প্রতিদিনই সংগ্রহ করছেন শত শত বাসক পাতা। পরিচ্ছন্নভাবে রোদে শুকিয়ে তা বিক্রি করছেন ওষুধ কোম্পানির কাছে। এতে তারা অর্থনৈতিক সুবিধা লাভ করছেন। 

ফিংড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. সামছুর রহমান জানান এ এলাকায় প্রচুর বাসক গাছ জন্মায়। প্রতি বছর ওষুধ কোম্পানিগুলি তা কিনে নিয়ে যায়। এতে আমার এলাকার সাধারণ মানুষ আর্থিক উপকার পাচ্ছেন। 

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. নাসরিন আক্তার বলেন, ‘বাসক এর বৈজ্ঞানিক নাম আঢাটোডা বাসিকা (Adhatoda Vasica)  ঔষধিগুন সম্পন্ন একটি উদ্ভিদ। এর পাতা ও ফলে এক ধরনের দুর্গন্ধ আছে। যে কারণে তা ব্যবহার করলে ছত্রাক রোধ করা যায়। তাছাড়া এর ঔষধিগুন খুব বেশি। এসব গুনের কারণে বাসক বানিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বাংলাদেশেও। ভারতের তামিলনাড়–তে বাসকের চাষ ব্যাপক রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাসক উদ্ভিদের জন্ম ও বৃদ্ধিতে সাতক্ষীরার মাটি অনুকূল। বেশি বেশি করে বাসক গাছ লাগালে এর পাতা দেশের ওষুধ শিল্পে অবদান রাখা ছাড়াও গ্রামীন অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে দিতে পারে।’

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :
© All rights reserved © 2025
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd