ঢাকা ব্যুরো : বেশি মুনাফার আশায় মালিকেরা চুক্তিতে চালকদের হাতে গাড়ি তুলে দেন। কিন্তু চুক্তিতে গাড়ি চালালে চালকদের মধ্যে অসাধু প্রতিযোগিতা দেখা দেয়। পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়।
বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধ করতে কাল বৃহস্পতিবার থেকে আর চালকদের সঙ্গে চুক্তিতে গাড়ি না চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতি। ফিটনেসবিহীন গাড়িও না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁরা। এ সিদ্ধান্ত অমান্য করা হলে সমিতির সদস্য পদ বাতিল করা হবে। ঢাকায় শিগগিরই সিটিং সার্ভিস সেবা চালু হবে বলেও জানান তাঁরা।
রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) ভবনে আজ বুধবার বিকেলে ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব সিদ্ধান্ত জানায় সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ। তিনি বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতিরও সাধারণ সম্পাদক।
এনায়েত উল্ল্যাহ বলেন, বেশি মুনাফার আশায় মালিকেরা চুক্তিতে চালকদের হাতে গাড়ি তুলে দেন। কিন্তু চুক্তিতে গাড়ি চালালে চালকদের মধ্যে অসাধু প্রতিযোগিতা দেখা দেয়। পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি হয়। চুক্তিতে গাড়ি চালানো বন্ধ করতে বিভিন্ন টার্মিনালে কাল (বৃহস্পতিবার) থেকে মালিকপক্ষের একাধিক কমিটি কাজ করবে বলে জানান তিনি। তবে চুক্তি ছাড়া গাড়ি চালাতে কাউন্টার ব্যবহার করার অনুমতি চেয়েছেন তাঁরা।
ঢাকা জেলার পরিবহন মালিকেরা আজ জরুরি সভায় বসে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে চুক্তি ছাড়া গাড়ি চালানো ছাড়াও ফিটনেসবিহীন গাড়ি বন্ধ করার বিষয়টি রয়েছে। গাড়ি ছাড়ার আগে সব কাগজপত্র যাচাই করবে টার্মিনাল সমিতি। কোনো ব্যত্যয় থাকলে গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। ঢাকা মহানগরের প্রতিটি বাস কোম্পানিকে নিজেদের চালকদের সঙ্গে মাসে একটি সচেতনতামূলক সভা করতে হবে। সভার বিষয়টি সমিতিকে নিয়মিত জানাতে হবে। এ ছাড়া জরাজীর্ণ, রংচটা গাড়ি বন্ধ করতে মালিকদের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় সব গাড়ি দৃষ্টিনন্দন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে মালিকদের। ঢাকার পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের নেওয়া উদ্যোগ বাস্তবায়ন শুরু হলে মালিকেরা পুনরায় সমর্থন দেবে। সেই উদ্যোগ প্রক্রিয়ায় ঢাকার সব পরিবহন পাঁচটি কোম্পানির অধীনে আনার কথা ছিল।
সিটিং সার্ভিস সেবা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, উন্নত সেবা হলে ভাড়া একটু বেশি হতেই পারে। ভাড়াতো মালিকেরা নির্ধারণ করবে না। ভাড়া নির্ধারণে সরকারের নির্ধারিত কমিটি আছে। সিটিং সেবা নিয়ে বেশ কিছু প্রস্তাব ঢাকা মহানগর আঞ্চলিক পরিবহন কমিটিতে জমা দেওয়া আছে। শিগগিরই কমিটির বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। বৈঠকে প্রস্তাব অনুমোদন হলেই সিটিং সেবা চালু হবে।
সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া অনুমোদন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মালিকেরা। আইনে মালিকেরা সুবিধা পাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে এনায়েত উল্যাহ বলেন, আইনে মালিকেরা কোনো সুবিধা পায়নি। বরং অনেক ক্ষেত্রেই চালকদের চেয়ে মালিকদের জরিমানা করা হয়েছে বেশি।
ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হাসান ইমাম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply