নিজস্ব প্রতিবেদক: লাবসা ইউপিতে ভিজিএফ’র চাউল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে চাউল বিতরণ সাময়িক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন সহকারী কমিশনার আসফিয়া সিরাত।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় লাবসা ইউপিতে উপস্থিত হয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে লাবসা ইউনিয়নের হত দরিদ্রদের মাঝে ভিজিএফ’র চাউল বিতরণ করছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমসহ ইউপি মেম্বরবৃন্দ। কিন্তু চাউল বিতরণে মূল তালিকার সাথে স্লীপের ব্যাপক গড়মিল দেখতে পান স্থানীয়রা।
এধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে সাতক্ষীরা সহকারী কমিশনার এবং সাতক্ষীরা কালেক্টরেটের ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা আসফিয়া সিরাত সরেজিমনে পরিদর্শনে যান। সেখানে উপস্থিত হয়ে কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তিনি তাৎক্ষনিক চাউল বিতরণ বন্ধ করে দেন।
এবিষয়ে সহকারী কমিশনার আসফিয়া সিরাত বলেন, “কর্তৃপক্ষের নিদের্শনা পেয়ে আমি লাবসা ইউপি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। চাউল বিতরণে তালিকায় গড়মিল থাকায় তা সাময়িক বন্ধ করতে বলা হয়েছে। যেহেতু ওই চাউলগুলো সরকারের পক্ষ থেকে হতদরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ। তারা যেন সঠিকভাবে পায় সেকারণে সঠিকভাবে বিতরণের জন্য গড়মিল ঠিক করতে বলা হয়েছে।”
অন্যদিকে, ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আব্দুল আলিম বলেন, “ইউনিয়নে ১/২টি ওয়ার্ডের তালিকায় কিছু গড়মিল ভুল বশত হয়েছে। সেকারনে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব আজকে চাউল বিতরণ বন্ধের জন্য বলেছেন। আমরা পরবর্তীতে মেম্বরদের সমন্বয়ে সঠিক তালিকা প্রস্তুত করে চাউল বিতরণ করা হবে।
এদিকে লাবসা ইউপিতে যখন এসব ঘটনা ঘটছিল তখন সেখানে উপস্থিত হন সাতক্ষীরা -২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। তবে পরিস্থিতি দেখে তিনি সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে চলে যান। এসময় সহকারী কমিশনার আসফিয়া সিরাত সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, শিবনগর গ্রামের বৃদ্ধা রিজিয়া খাতুন বলেন, আমি কখনো চাউল পাই না। আমি হক কথা বলি একারণে আমাকে কার্ড দেয় না। কিছু বলতে গেলে মারতে উদ্যত হয়। তবে এবার ১টি কার্ডের চাউল দুজনের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছে। শুধু আমাদেরই না এলাকার অনেকের মধ্যে এভাবে ১০ কেজি করে চাউল বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া ইউনিয়নের দূরদূরান্ত থেকে আসা হতদরিদ্র পরিবারের অনেকই মঙ্গলবার চাউল না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাবো ২০ কেজি চাউল তাও যদি আবার দুইবার আসতে হয়। তাহলে গাড়ি ভাড়া বেশি খরচ হবে।
উল্লেখ্য, লাবসা ইউপিতে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমের বিরুদ্ধে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ভিজিএফ, ভিজিডির কার্ড বিতরণে অনিয়ম ও কাজ না করে অর্থআত্মসাতের অভিযোগ তো আছেই। ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে ওঠা বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)। দুদকে তদন্ত চলমান থাকা অবস্থায় অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন এই বিএনপি নেতা ও অসংখ্য নাশকতা মামলার আসমি আবউদল আলিম। জনশ্রুতি আছে সাতক্ষীরার একজন জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামীলীগ নেতার আশীর্বাদ পুষ্ট হওয়ায় বারবার দুর্নীত করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন এই বিএনপি নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান।
Leave a Reply