নিজস্ব প্রতিনিধি: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চাহিদা বেড়েছে পশু জবাই ও মাংস কাটার সরঞ্জামের। এ চাহিদা পূরণে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের। বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাতক্ষীরার কামারপল্লী। দিন-রাত টুং টাং শব্দে কাজ করে চলেছেন কামারা।
কামারপল্লীর কর্মকারা জানান, বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম বেশি। তাই তৈরিকৃত সরঞ্জাম বিক্রি বেশি হলেও লাভ কম হয়। কয়েক দিন পরেই মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। এই ঈদে প্রচুর পশু কোরবানি হবে আর কোরবানির এসব পশু জবাই এবং জবাই পরবর্তী প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন প্রকারের ছুরি-কোপা। তাই তাদের ব্যস্ততা অনেক বেশি।
কামারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একেকটি বড় ছুরি বিক্রি হচ্ছে ৭শ থেকে ৮শ টাকায়। ছোট ছুরি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ২শত থেকে ৪শত টাকা পর্যন্ত। তবে প্রকার ভেদে কমবেশি দরে বিক্রি হচ্ছে এসব সরঞ্জাম।
তবে ক্রেতাদের অভিযোগ অন্য বছরের তুলনায় এবার ছুরি-চাপাতি এবং দা-বটির দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে। আর বিক্রেতাদের দাবি, লোহা এবং কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়ে গেছে নির্মাণ খরচ।
সাতক্ষীরার কদমতলা বাজারের কর্মকার রাম নারায়ণের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সারা বছর তেমন কাজ না হলেও ঈদুল আযহা’র আগে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। এ সময়টিতে যারা কোরবানির পশু জবাই করেন তারা প্রত্যেকে চাপাতি, দা, বটি, ছুরি ক্রয় করেন। নতুন সরঞ্জাম ক্রয়ের পাশাপাশি আগেরগুলো নতুন করে শাণিত করতেও ভীড় জমাচ্ছেন জনসাধারণ।
তিনি আরো জানান, এবছর কয়লাসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেশি কিন্তু ক্রেতারা বেশি দাম দিয়ে কিনতে চান না। আর সরকার আমাদের এই খাতে কোন প্রকার ঋণ দেয় না। ফলে অনেকে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি সহায়তা থাকলে পেশাটি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হত।
কামারপল্লীর কর্মকার প্রলত জানান, অন্যান্য সময়ের চেয়ে এ সময়টিতে কাজ বেশি হওয়ায় লাভ বেশি হয়। বাপ-দাদারা এই পেশায় ছিলেন। আমাদের কামারি কাজ শিখিয়ে গেছেন। ঐতিহ্য ধরে রাখতে শত কষ্ট হলেও অন্য পেশায় যাওয়ার সুযোগ নেই।
Leave a Reply