শহর প্রতিনিধি: হাল সাকিন পলাশপোলের সেকেন্দার শেখ ও তার স্ত্রী সালেহা খাতুন আমাদের বড় বোন হোসনে আরা খানমের বাড়িতে ২০০১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করেছেন। এর পর আমাদের মেজ বোন নাজমা আরা খানমের বাড়িতে ২০১৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ভাড়ায় ছিলেন। কিন্তু গত ছয়মাস যাবৎ প্রতি মাসের ভাড়া ১৫ শ’ টাকা তারা পরিশোধ করছেন না। এরই মধ্যে হঠাৎ সালেহার মা ফাতেমা খাতুনের নামে আমাদের পৈতৃক ৬৯ শতক জমির জাল দলিল খাড়া করেছে সালেহা খাতুন। আমরা ভাড়া না দেওয়ায় তাকে বাড়ি থেকে শান্তিপূর্ণভাবে নামিয়ে দিয়েছি। এখন আমাদের ভাড়াটিয়া সালেহা গং নানা অপপ্রচার দিয়ে আমাদের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছে।
বুধবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান নুর আহম্মদ খানের মেয়ে নাজমা আরা খানম। এসময় তার সহোদর এড. ড. রবিউল ইসলাম খান, শরিফুল ইসলাম খান, তৌহিদুল ইসলাম খান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন সালেহা তার ভুয়া দলিল দেখিয়ে যে জমির কথা বলছেন সেই ৬৯ শতক জমির ৩০ শতক আগেই আমরা বিক্রি করেছি মেছের দালালের কাছে। বাকি ৩৯ শতকের মধ্যে সাড়ে ১৬ শতক জমি নাজমা আরা খানমের। সালেহা তঞ্চকতা করে পলাশপোলের খান পরিবারের জমিতে হাত বাড়িয়েছে। সালেহা দাবি করেছেন তিনি আদালত চত্বরে ঝাড়– দেন। অথচ তার বাড়িতে নাকি দুই কোটি টাকার সম্পদ ছিল বলে ডাহা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।
নাজমা আরা খানম বলেন, সালেহা এই জমি নিয়ে একটি দেওয়ানি মামলা করে ও ১৪৫ ধারায় আরও একটি মামলা করে। ১৪৫ ধারার মামলাটি সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই হাফিজুর রহমান তদন্ত করে আদালতে দেওয়া রিপোর্টে বলেন যে ‘ সালেহা খাতুনের দাখিলকৃত কাগজপত্রের কোনো সত্যতা পাওয়া গেল না’। ওই জমির যিনি মালিক তিনি নিজ জমিতে বসবাস করছেন। তার ভাইদের হয়রানি করার জন্য সালেহা ১৪৫ ধারার মামলা করেছেন উল্লেখ করে এসআই হাফিজ ২৩ মে তারিখে আদালতে রিপোর্ট পেশ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন এরপরও সালেহা সাতক্ষীরার এসপি বরাবর আবেদন করলে নির্দেশ অনুযায়ী তদন্ত শেষে এসআই হাফিজ আবারও ৩১ মে তারিখে দেওয়া রিপোর্টে বলেন যে সালেহার কাগজপত্রের কোনো ভিত্তি নেই। এ বিষয়ে খুলনা তৃতীয় মুন্সেফ আদালতে অনুসন্ধান চালিয়েও সালেহার কাগজের কোনো ভিত্তি পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন এরপর সালেহা ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে নাটক সাজিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন গত ৩ জুন সকালে আমি আমার দুইজন কাজের লোক আবেদা ও লতাকে সাথে নিয়ে সালেহার কাছে ভাড়ার ৯ হাজার টাকা চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন এ জমি আমার। তখন তাকে ঘর ছেড়ে দিতে বলি। তখন অন্যান্য ভাড়াটিয়া এবং আমার ভাইদের সহায়তায় সালেহাদের জিনিসপত্র তার সামনেই বের করে গেটের বাইরে রেখে দেই এবং গেটের বাইরে তালা ঝুলিয়ে দেই। ঘন্টাখানেক পর সালেহা তার ছেলে ওমর ফারুক বিদ্যুত ও তার মেয়ে দা হাতুড়ি শাবল নিয়ে গেট ভাঙ্গার চেষ্টা করলে আমরা পুলিশে খবর দেই। পুলিশ সালেহা ও তার মেয়েকে ধরে ফেলে। বিদ্যুত হাতুড়ি দা শাবল নিয়ে পালিয়ে যায়। গত ৫ জুন তারিখে সাতক্ষীরা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সালেহা , তার স্বামী সেকেন্দার ও ছেলে বিদ্যুতের নামে ভুয়া কাগজপত্র তৈরির অভিযোগ এনে আমি মামলা করেছি ( সিআরপি ১১৫/১৮) । আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য সাতক্ষীরার ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সালেহা তাঁতী লীগের শামসুর, হাসান ইমাম, ফিরোজ, নুর ইসলাম, ওবায়েদ, নুর জাহান সাদিয়া, আকাশ তৌহিদ খাঁসহ অনেকের নাম উল্লেখ করে যে অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়। কারণ তারা এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না। অপর দিকে সালেহা সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মারুফ আহমেদ, এসআই হাফিজ ও এসআই মিয়ারাজকে জড়িয়ে যেসব কথা বলেছে তা সবই মিথ্যা। সালেহা নিজেই দা শাবল নিয়ে মহড়া দিচ্ছে, সে নিজের গায়ে নিজেই আঘাত করে যে নাটক তৈরি করছে তার ভিডিও রেকর্ড রয়েছে। সে মুখে বলছে সে গরিব অসহায় নারী, অপরদিকে বলছে তার ঘর থেকে দুই কোটি টাকার জিনিসপত্র লুট হয়েছে। নাজমা আরা খানম সালেহাকে মিথ্যাচারী, জাল দলিল সৃজনকারী প্রতারক হিসাবে আখ্যায়িত করে বলেন, আমাদের নয় পুরুষ নয় শত বছর যাবত এই জমিতে বাস করছে। আর শ্যামনগরের সালেহা আমাদের পৈতৃক জমি দখলের লক্ষ্যে নানা ধরনের প্রতারণামূলক নাটক করছে। তিনি এর প্রতিকার দাবি করে সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
Leave a Reply