সংবাদ সম্মেলনে অসহায় বিধবার আকুতি আমার দোকানঘর ফিরিয়ে দিন

শহর প্রতিনিধি: সদ্য বিলুপ্ত জেলা তাঁতী লীগের সাবেক সভাপতি মীর আজহার আলী শাহিনের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গত সোমবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এক অসহায় বিধবা তার দোকানঘর ফেরত পাওয়ার দাবি জানান। এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শহরের ইটাগাছা পশ্চিমপাড়ার মৃত নুর ইসলামের স্ত্রী রহিমা বেগম।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার স্বামী বেঁচে থাকাকালীন সুলতানপুর বড় বাজারের খাল ধারে মাছপট্টি সংলগ্ন এলাকায় কোবলা মূলে ক্রয়কৃত নিজ ভোগদখলীয় জমিতে দোকানঘর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে মাছ ব্যবসা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর সুলতানপুর বড়বাজার এলাকার আমির চাঁদ খানের ছেলে হেলাল উদ্দীন উক্ত দোকানটি মৌাখিকভাবে মাসিকভাড়া দেওয়ার শর্তে নেন। বিষয়টি সুলতানপুর বড়বাজারের ব্যবসায়ী নেতাসহ আশে পাশের সকল দোকানদাররা জানেন। দীর্ঘদিন ধরে হেলাল আমার ঠিকমত ভাড়াও পরিশোধ করেছেন। হঠাৎ গত ৫/৬ মাস ধরে তিনি আর কোন ভাড়া না দিয়ে বকেয়া ফেলে রাখেন। এক পর্যায়ে গত ৩ মে বৃহস্পতিবার দুপুরে আমি আমার ছেলে শাহাবুদ্দীনকে নিয়ে ভাড়া চাইতে গেলে তিনি বলেন আর কোন টাকা দিতে পারবোনা, যা দিয়েছি এই পর্যন্ত শোধ। এ সময় আমরা তাকে দোকান ছেড়ে দিতে বললে তিনি জানান, এটি এখন তাঁতী লীগের অফিস, এই দেখো সাইন বোর্ড, এই ঘর আর তোদের নাই, এই ঘর এখন আমাদের দখলে। ‘দেখবি তোদের মজা দেখাবো’ এই বলে তিনি জেলা তাঁতী লীগের সাবেক সভাপতি মীর শাহিনের কাছে ফোন করলে তিনি কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সেখানে হাজির হন। এরপর হেলাল উদ্দীন মীর শাহিনের উপস্থিতিতে তার ইঙ্গিতে আমাদের সাথে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাকে ও আমার ছেলে শাহাবুদ্দীনকে মারপিট করেন। খবর পেয়ে এ সময় আমাদের প্রতিবেশী মাহমুদ হোসেন ক্যাপ্টেন তাদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে গেলে তাকেও বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। পরে স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় আমি বাদি হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় হেলাল উদ্দীনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করি।
তিনি আরো বলেন, সদ্য বিলুপ্ত হওয়া তাঁতী লীগের সাবেক সভাপতি মীর শাহিনের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তে আমাদের দীর্ঘদিনের ক্রয়কৃত ভোগদখলীয় দোকান ঘরটি যার বৈধ কাগজ পত্র থাকা শর্তেও তাঁতী লীগের সাইনবোর্ড তুলে তা দখলের জোর প্রচেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে। অথচ প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে গত ৬ মে রোববার তারা হেলাল উদ্দীনকে দিয়ে জেলা তাঁতী লীগের বর্তমান সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান তুহিনের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে একটি মিথ্যা, বানোয়াট, কাল্পনিক, মনগড়া ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত তথ্য উপস্থাপন করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি এ সময় ভরাক্রান্ত মনে বলেন, আমার ছেলে শাহাবুদ্দীনের স্ত্রী মোসলেমা খাতুনের দুটি ভাল্ব নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা করাতে না পেরে আমরা অসহায় জীবনযাপন করছি। এমতাবস্থায় তিনি তার দোকানঘরটি ফেরত পেতে ও ন্যায় বিচার পেতে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় তার সাথে আরো উপস্থিত ছিলেন, ছেলে শাহাবুদ্দিন, শাহাবুদ্দীনের স্ত্রী মোসলেমা খাতুন, মেয়ে রওশানারা, মজিদা বেগম প্রমুখ।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *